নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ভূট্টা চরাঞ্চলের ফসল হিসেবে পরিচিতি থাকলেও টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পাহাড়ী এলাকাগুলোর প্রায়-অনাবাদি জমিগুলোতে এই প্রথম জমে উঠেছে ভূট্টা চাষের হিড়িক।
গতকাল বুধবার উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের পাহাড়ী অঞ্চল পোড়াবাসা, রামদেবপুর, ভবানীপুর ও আষাঢ়িয়া চালা গ্রামে গিয়ে দেখা গেলো সবুজ–শ্যামল ভূট্টা ক্ষেতে হাসি মুখে কাজ করছে কৃষকরা। কারও গাছের বয়স ৩০ থেকে ৫০ দিন, আবার কেউ কেউ মাত্রই লাগানো শুরু করেছেন উৎসাহী হয়ে।
উপজেলার খাঁনমোড় এলাকার ভূট্টা চাষী হারুন-উর-রশিদ আলাপ-চারিতায় বলেন, “উত্তর বঙ্গ (দিনাজপুর) থেকে ধান কাটা, রোপন বা বিভিন্ন কাজের উদ্দেশ্যে শ্রমিকরা প্রতি বছরই আমাদের এলাকায় আসেন। তাদের এলাকায় ভূট্টা চাষ হয় বলে আমাকে এ বছর এটি চাষ করতে উৎসাহী করেন তাদের একজন। তার কথামতো ওখান থেকেই বীজ এনে প্রায় ৭০ শতাংশ জায়গাতে ভূট্টা চাষ করেছি। গাছের বয়স এখন ৪০দিন। সব মিলিয়ে আমার বিশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে আর হয়তো দশ হাজার হতে পারে। আশা করছি দেড় লক্ষ টাকার মতো ভূট্টা বিক্রি করতে পারবো।”
কথা হয় পোড়াবাসা গ্রামের প্রবীণ কৃষক লাল মামুদের সাথে তিনি বলেন, “ইতিপূর্বে আমাদের পাহাড়ী এলাকায় কখনও ভূট্টা চাষ করেনি কেউ। গত বছর আমি দিনাজপুরের কামলা (শ্রমিক)-দের কথায় সখ করে ২৮ শতাংশ জায়গায় ভূট্টা বুনেছিলাম। সেখানে বিশ হাজার টাকা খরচ করে পঞ্চাশ হাজার টাকা লাভ হইছিলো। এইবার দুইশত ত্রিশ শতাংশ (প্রায় সাত বিঘা) জমিতে লাগাইছি। গাছের বয়স এখন প্রায় পঞ্চাশ দিন”।
এছাড়াও পোড়াবাসা গ্রামের আঃ মালেক আঁশি শতাংশ ও ভবানীপুর গ্রামের আঃ ছবুর আলী তিনশত শতাংশ জমিতে সখ ও লাভের আশায় ভূট্টা চাষ করেছেন জীবনে প্রথমবারের মতো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান ভূট্টা চাষ ও সম্ভাবনা নিয়ে বলেন, “এ বছর আমাদের ঘাটাইলের পাহাড়ী এলাকার কৃষকরা যেভাবে ভূট্টা চাষে উৎসাহী হচ্ছে বা হয়েছে তাতে আমরা নতুন এক সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। তবে এ ফসলে পাতা ঝলসানো, কান্ড পচা, মোচা ও দানা পচা রোগ যাতে আক্রমন না করতে পারে সেজন্য আমরা তাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি”।
Leave a Reply