মির্জাপুরে চাঁদা না দেওয়ায় প্রবাসীর কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সীমানা প্রাচীর ও বাড়ি নির্মান কাজের জন্য চাঁদা না দেওয়ার কারনে এক প্রবাসীর কাজ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে নির্মানাধীন শ্রমিকদের মারধরের ঘটনাও ঘটেছে বলে জানা গেছে। উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের সৈয়দপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। চাঁদাবাজরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তিন সন্তান নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ওই প্রবাসীর স্ত্রী ও তার শ্বশুর। পরে জীবনের নিরাপত্তা ও কোন বিচার না পাওয়ায় প্রবাসীর শ্বশুর আ: কদ্দুস বাদী হয়ে তিন জনের নাম উল্লেখ করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জাপুর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিবরনে জানা যায়, প্রবাসীর স্ত্রী তার পিতার বাড়ির পাশে মির্জাপুর থানার গোড়াই মৌজায় সাড়ে চার শতাংশ ভূমি ক্রয় করে সেখানে সীমানা প্রাচীর ও পাঁকা ঘর নির্মান করার জন্য ইট, বালু, সিমেন্ট ও রড নিয়ে কাজ শুরু করে। পরে সীমানা প্রাচীর, ঘরের কলাম ও দেয়াল তৈরী করা কালীন সময়ে গোড়াই সৈয়দপুর এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো. আনোয়ার, মো. ইব্রাহীমের ছেলে জনি ও আজগানা ইউনিয়নের মজিদপুর এলাকার মৃত শাজাহান মিয়ার ছেলে মনির বিভিন্ন সময়ে প্রবাসীর স্ত্রী ও তার পিতার নিকট ঘর নির্মান বিষয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। পরবর্তীতে চাঁদার টাকা না দেওয়ায় চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৯ টার সময় নির্মানাধীন বসত বাড়িতে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেআইনি ভাবে অনধিকার প্রবেশ করে শ্রমিক হামিদ ও মিঠুনকে কাজে বাধা দেয়। এসময় তারা প্রতিবাদ করায় চাঁদাবাজ মো: আনোয়ার শ্রমিক মো: হামিদকে মারধর করে। এসময় চাঁদাবাজ মনির ও জনি প্রায় ২/৩ লক্ষ টাকার নির্মানাধীন সামগ্রী নষ্ট করে। পরে শ্রমিক হামিদ ও মিঠুনের ডাক চিৎকারে বাদী কদ্দুস, তার মেয়ে, স্ত্রী ও ছেলেসহ আশেপাশের অনেক লোক ঘটনাস্থলে আসে। আশেপাশের লোকজন ঘটনার কারন জানতে চাইলে আনোয়ার উচ্চস্বরে বলে আমার দাবীর ৫ লক্ষ টাকা না দিলে বাড়ির নির্মান কাজ বন্ধ থাকবে। এমনকি এ বিষয়ে কারও নিকট কোন কথা বললে তোদের ও তোদের পরিবারের সবাইকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলব, এমনকি তোর ছেলেকে অপহরণ করব বলে হুমকি দেয়।

সরজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, প্রবাসীর স্ত্রীর ঘর নির্মানের বালু মেশানো সিমেন্ট উঠানে নষ্ট হয়ে পরে রয়েছে এবং ঘরের দেওয়ালের নির্মান অংশের কিছু আংশিক ভাঙ্গা।

আ: কদ্দুস ও তার মেয়ে সুবর্না বলেন, আনোয়ার, জনি ও মনির আমাদের নিকট ঘরের কাজ শুরু করাকালীন সময় থেকে চাঁদা দাবী করে আসছিল। চাঁদা না দেওয়ায় আমাদের বাড়ির কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এবং ঘরের দেওয়ালের নির্মান অংশের কিছু ভেঙ্গে ফেলেছে। এরা আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদেরকে যেকোন মুহূর্তে খুন সহ যেকোন বড় ধরনের ক্ষতি সাধন করতে পারে। এ কারনে আমার ও পরিবারের জীবনের নিরাপত্তার জন্য কোর্টে মামলা দিয়েছি।

শ্রমিক হামিদ বলেন, আমরা শ্রমিক আমাদের বাড়ি অন্য জেলায় আমরা এ এলাকার বাসিন্দা না। আমাদেরকে মারধর করেছে। অপরিচিত মানুষ দিয়ে কামরুলের দোকানের পাশে এবং আমাদের কাজের সাইটে গিয়ে বলে এ বিষয়ে কোন প্রকার কথা বললে, আমাদেরকে জানে মেরে ফেলবে। আমাদেরকে যেকোন যেকোন মূহুর্তে তারা ক্ষতি করতে পারে।

মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের সৈয়দপুর এলাকার রহিমা বেগম, মো: রাসেল, রমজানসহ আরো ৫/৬ জন ব্যক্তি বলেন, আনোয়ার, জনি ও মনির ঘরের কাজ বন্ধ করে দেয় এবং কদ্দুস ও তার মেয়ের নিকট ৫ লাখ টাকা চাদাদাবী করেঅ সেই সাথে শ্রমিকদের মারপিট করে।

মামলার আসামী আনোয়ার, জনি ও মনির বলেন, আমরা ঐ জায়গায় যাইনি এবং কোন প্রকার চাঁদাদাবী ও মারপিট করিনি।

এই বিষয়ে মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, এ বিষয়ে কোর্ট থেকে কোন মামলার কাগজ আসেনি। আসলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap