বাসাইলে ‘ছেলের নির্যাতনে’ ১০ দিন ধরে বাড়ি ছাড়া এক বৃদ্ধা

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলায় ‘ছেলের নির্যাতনে’ ১০ দিন ধরে বাড়ি ছাড়া এক বৃদ্ধা। ৭৫ বছর বয়সী জমিরন বেগমের অভিযোগ, ছেলে নজরুল ইসলামের নামে বাড়িসহ জমি লিখে না দেওয়ায় তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে।

জমিরন উপজেলার ফুলকী ইউনিয়নের একডালা গ্রামের প্রয়াত আব্দুল খালেকের স্ত্রী।

এদিকে স্বামীর বাড়িতে ফেরাসহ ছেলের শাস্তির দাবি করে লিগ্যাল এইড ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই বৃদ্ধা।

বর্তমানে তিনি টাঙ্গাইল শহরের এনায়েতপুর এলাকায় মেয়ের বাড়িতে বসবাস করছেন।

জমিরন বেগম জানান, জমি নিয়ে ছেলে নজরুল ইসলামের সঙ্গে বিরোধ চলছে তার। এরই জেরে ২৮ মার্চ নজরুল তাকে মারধর করেন। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করায়।

এই সুযোগে মায়ের ঘরে তালা লাগিয়ে দেন নজরুল। বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানান বৃদ্ধা। ইউপি সদস্যরা তার বাড়িতে গেলে নজরুল তাদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেন বলে জমিরনের অভিযোগ।

তিনি আরও বলেন, “জমি বিক্রি করে কয়েকবার নজরুলকে বিদেশ পাঠিয়েছি। তারপরও সে জমি নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি করছে। জমি লিখে না দেওয়ায় সে আমাকে মারধর করেছে।

“আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এখনও জখমের চিহ্ন আছে। এ ছাড়া সে আমার মেয়েদেরও মারধর করেছে। নজরুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

জমিরন বেগমের মেয়ে বলেন, “জমি লিখে না দেওয়া নিয়ে নজরুল মাকে মারধর করলেও আমার বড়ভাই কিছুই বলেন না।

“ছেলেরা যে মায়ের সঙ্গে এমন আচরণ করতে পারে আমার ভাইদের না দেখলে বিশ্বাস করতে পারতাম না। প্রতিবাদ করলে আমাকেও মারধর করে নজরুল।আমি ভাইদের বিচার চাই।”

ফুলকী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মর্জিনা বেগম বলেন, “বিষয়টি জানার পর আমরা জমিরনের বাড়িতে গিয়েছিলাম। এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে নজরুল আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন।

“এছাড়াও নজরুল তার মায়ের ঘরে তালা লাগিছেন। জমিরন বাড়িতে গেলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা এর সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি।”

এ বিষয়ে নজরুল ইসলামের স্ত্রী বলেন, “আমার স্বামী রাগ করে ঘরে তালা দিছেন। তবে আমার শাশুড়ি যে কোনো সময় তার ঘরে উঠতে পারেন।”

বাসাইল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বাসাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পাপিয়া আক্তার বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। স্থানীয় চেয়ারম্যানকে খোঁজ নিতে বলছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap