ইউক্রেনে সেনা পাঠাল রাশিয়া,আন্তর্জাতিক আইনের অবজ্ঞা বলে মন্তব্য ন্যাটোর

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দুটি অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে রাশিয়া। এরপারই সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সেনা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। স্থানীয় সময় সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে এই ঘোষণা দেন পুতিন।

এদিকে রাশিয়ার এমন পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের অবজ্ঞা বলে মন্তব্য করেছে ন্যাটো সামরিক জোটের প্রধান। নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্রসহ, ফ্রান্স জার্মিানিসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা।

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে গত কয়েক দিন ধরে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী ও ইউক্রেনীয় সেনাদের মধ্যে তুমুল সংঘাতের মধ্যে পুতিনের এ ঘোষণাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি মূলত পশ্চিমা দেশগুলোর একের পর এক হুমকি উপেক্ষা করে এ পদক্ষেপ নিয়েছেন।

পশ্চিমারা বারবার রাশিয়াকে সতর্ক করেছে মস্কো যেন কোনো অবস্থাতেই দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি না দেয়। যদি দেয় তবে এটি এমন একটি পদক্ষেপ হবে যা ওই অঞ্চলের শান্তি প্রতিষ্ঠায় চলা কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে।

হোয়াইট হাউজ জানায়, রাশিয়ার স্বীকৃতি দেওয়া অঞ্চলগুলোর সঙ্গে যাতে কোনো মার্কিন নাগরিক বানিজ্য এবং বিনিয়োগ করতে না পারে সে জন্য বাইডেন খুব তাড়াতাড়ি একটি এক্সিকিউটিভ ওয়াডারে সই করবেন।

জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করে পুতিন রাশিয়ান জনগণের ক্ষতি করলেন। পুতিনের এই পদক্ষেপের ফলে ন্যাটো এবং ইইউর সম্পর্ক আরো মজবুত হবে।’

জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত জাং জুন নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, ‘উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এমন পদক্ষেপ থেকে সব পক্ষকেই দূরে থাকতে হবে। ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতি অনেকগুলো কারণের একটি প্রতিফলন।’

টুইট বার্তায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দুটি অঞ্চলকে স্বীকৃতি দিয়ে রাশিয়া মূলত ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার করলেন। আমি এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানাই। আমি ইউরোপীয় দেশগুলোকে নিষেধাজ্ঞা জারির আহ্বান জানাচ্ছি।’

ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, “আমি স্বঘোষিত ‘দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক’ এবং ‘লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক’-কে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য রাশিয়ার নিন্দা করছি। এটি ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে আরও ক্ষুন্ন করবে। এছাড়া এর ফলে সংঘাতের সমাধানের প্রচেষ্টা ব্যাহত হবে।’

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেইন বলেন, ‘ইউক্রেনের দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চলের স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক আইন, ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং মিনস্ক চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন।’

জাতিসংঘে ভারতের রাষ্ট্রদূত ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মুখে “সংযম” দেখানোর জন্য সব পক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন।

এছাড়া উত্তেজনা পরিহারের আহ্বান জানিয়েছে ইরান, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, পোল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ।

সূত্র: আল-জাজিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap