মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ১১:৪৯ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম :
মধুপুরে গরীবের হাসপাতালে সরকারি বেসরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন মধুপুরে ৭ হাজার ইয়াবাসহ একজন গ্রেফতার মধুপুরে বিএনপি নেতার কারখানায় ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৯ মধুপুরে বিধবা নারী পেল মাথা গোঁজার ঠাঁই মধুপুরে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন মধুপুরে সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল ব্যতিক্রম আয়োজনে দিগরবাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বর্ণমেলা’ মধুপুরে বিএনপি নেতার কারখানায় ডাকাতি ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা টাংগাইলে থামছেই না পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরি বাড়িতে একা পেয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ, দেবর-ভাতিজা গ্রেপ্তার

মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সেবা সূচকে দেশসেরা

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ৬৬৯ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল জেলার সর্ব উত্তরের উপজেলার নাম মধুপুর। টাঙ্গাইল শহর থেকে মধুপুরের দূরত্ব ৪৮ কিলোমিটার। অপর দিকে মধুপুর থেকে জামালপুর ও ময়মনসিংহের দূরত্ব প্রায় ৪৭ কিলোমিটার। তিন জেলার মিলনস্থলে অবস্থিত আনারসের রাজধানী ও ইতিহাস খ্যাত শালবনের এলাকা মধুপুর। তিন দিকেই জেলা শহরের দূরত্ব বেশি হওয়ায় চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর চাপ বেশি হয়ে থাকে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
জানা যায়, সম্প্রতি ৫০ শয্যার মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়ে অবকাঠামো নির্মাণ শেষ হয়েছে। কিন্তু ৫০ শয্যার জনবল দিয়েই চলছে ১০০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। ৫০ শয্যার ১৫৫টি পদের মধ্যে ১১৯টি পদে জনবল রয়েছে। বাকি ৩৬টি পদ শূন্য রয়েছে।
গত ২০২৩ সালে এ হাসপাতাল থেকে নরমাল ও সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়েছে এক হাজার ৪৩টি, বহির্বিভাগে সেবা নিয়েছে দুই লাখ ৪৫১ জন। জরুরি বিভাগে সেবা নিয়েছে ৪৫ হাজার ১৫৬ জন। অন্তঃবিভাগে গড় বেড অকুপেন্সি রেট শতকরা ১৫০ ভাগ এবং এ হাসপাতাল থেকে সরকারি কোষাগারে জমাকৃত ইউজার ফি ৯২ লাখ ৫৮ হাজার ৯৩৮ টাকা।
এ ছাড়া হাসপাতালটি সেবার মান ও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দেশের মধ্যে বিগত বছরে যৌথভাবে প্রথম স্থান ও টাঙ্গাইল জেলার মধ্যে প্রথম স্থানসহ দেশ সেরা টপটেন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।
মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী মধুপুর উপজেলার লাল মাটির মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকল্পে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনে এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালে নির্মিত হয় ১০০ শয্যা মধুপুর হাসপাতাল। ২০২০ সালে প্রশাসনিক অনুমোদন পেলেও জনবল আর অর্থের অভাবে হাসপাতালটির সুবিধা পাচ্ছিল না উপজেলাবাসী।
গত ১ জুলাই স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সাইদুর রহমান যোগদান করে তরুণ চিকিৎসকদের নিয়ে আন্তরিকতার সাথে ৫০ শয্যার জনবল ও অর্থবরাদ্দ দিয়েই চালু করেন ১০০ শয্যার হাসপাতালের কার্যক্রম। চালু করা হয় পুরুষ, মহিলা ও শিশু নামে তিনটি পৃথক পৃথক ওয়ার্ড। চালু করা হয়েছে ১০টি কেবিন, সংক্রামক ব্যাধি ওয়ার্ড, মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ড, নবজাতক সেবার জন্য স্ক্যানো ওয়ার্ড। প্রসূতি ওয়ার্ডে নিয়মিত সিজারিয়ান ডেলিভারি এবং নরমাল ডেলিভারি হচ্ছে। চিকিৎসার পাশাপাশি ব্লাড সুগার, ব্লাড প্রেসার পরিমাপ, ইসিজি পরীক্ষা ও ওষুধ বিতরণ। বহির্বিভাগে রয়েছে আইএমসিআই-পুষ্টি করনার, ব্রেস্টফিডিং করনার, ভায়া সেন্টার, কিশোর-কিশোরী সেবাকেন্দ্র, ডেন্টাল ইউনিট, স্ব্যাস্থ্য শিক্ষা করনারসহ নানা সেবা। ডোপ টেস্টসহ সব অত্যাবশ্যকীয় পরীক্ষা, আলট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি পরীক্ষা নিয়মিত হচ্ছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগেও আনা হয়েছে পরিবর্তন। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আদলে হাসপাতালের বিভিন্ন ভবনকে এবিসিডিই নামে পাঁচটি ব্লকে বিভক্ত করা ছাড়াও বড় হলরুমের পাশাপাশি তৈরি করা হয়েছে একটি অত্যাধুনিক কনফারেন্স রুম যেখানে নিয়মিত সায়েন্টিফিক সেমিনার হয়ে থাকে। এ ছাড়া দৃষ্টিনন্দন পানির ঝরনা, সৌন্দর্যবর্ধক গাছপালা, ভেষজ বাগান, ফলের বাগান, খেলার মাঠসহ নতুন নতুন সুউচ্চ ভবনে হাসপাতালের পরিবেশ দর্শনার্থীদের সবসময় আকর্ষণ করছে।
সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, মূল ফটকের পাশেই দৃষ্টিনন্দন পানির ফোয়ারা। হাসপাতালের ক্যাম্পাসে শোভাবর্ধনকারী ফুলের বাগান। জরুরি বিভাগে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে রোগীরা। হাসপাতালের রোগীরা টিকিট কেটে বিভিন্ন বিভাগে যাচ্ছে। হাসপাতালের নির্ধারিত সাশ্রয়ী খরচে ৩৫ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুবিধা পাচ্ছে রোগীরা।
চিকিৎসা নিতে আসা রাজিয়া বেগম জানান, তিনি গাইনি বিষয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তাকে রক্ত, প্রসাব ও আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা দিয়েছিল। তিনি হাসপাতালেই স্বল্প খরচেই পরীক্ষা করেছেন। চিকিৎসা নিতে আসা রহিমা জানান, তিনি টিকিট কেটে ডাক্তার দেখালেন। তিনিও তিনটি পরীক্ষা করিয়েছেন।
হাসপাতালের ইউএইচএফও জানালেন, জুনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিওলজি, নাক, কান, গলা, চক্ষু, মেডিসিন, অর্থপেডিক্স, শিশু, সার্জারিসহ বিভিন্ন পদে ১৫৫ পদের মধ্যে ৩৬টি পদের জনবল খালি রয়েছে।
মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সাইদুর রহমান বলেন, সরকারী হাসপাতালের প্রতি সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের আস্থা ফিরাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যার ফলে বহির্বিভাগ থেকে প্রতিদিন ৬০০-৭০০ এবং জরুরি বিভাগ থেকে ৯০-১০০ রোগী সেবা নিচ্ছে। অন্তঃবিভাগে বেড অকুপেন্সি রেট প্রায় শতভাগ। প্রতি মাসে একশ’র মতো নরমাল ও সিজারিয়ান ডেলিভারি হচ্ছে এবং প্রায় সব প্রকার পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালেই হচ্ছে। তিনি বলেন, ১০০ শয্যা জনবল ও প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পেলে ও মধুপুরের সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতায় একটি জনবান্ধব হাসপাতালে রূপান্তরিত করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন এ কর্মকর্তা। তিনি আরো জানান, ৫০ শয্যার জনবল নিয়ে ১০০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চালিয়ে ক্যাটাগরি ভিত্তিতে গত বছর সাত মাসে একাধিকবার এইচএসএস স্কোরিংয়ে সারা দেশে টপটেন হাসপাতালের গৌরব অর্জন করেছে এবং গত বছর সারা দেশে যৌথভাবে প্রথম স্থান ও টাঙ্গাইল জেলার প্রথম স্থান অর্জন করেছে ।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা: মিনহাজ উদ্দিন মিয়া জানান, মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দেশ সেরা হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। সেবা ও অবকাঠামো সব মিলিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি জেলার মধ্যে অনন্য। জনবল নিয়োগের বিষয়ে তিনি জানান, জনবলের চাহিদা পাঠিয়েছি।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মধুপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে আরো আধুনিক করা হবে। সেবার মান বিবেচনায় দেশসেরা হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। ভবিষ্যতে সেবার মান আরো বাড়ানো ও এ অর্জন বজায় রাখার জন্য চিকিৎসকদের নিরলসভাবে কাজ করতে হবে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি বা ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয়)
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102