মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৭:৫৮ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
মধুপুরে গরীবের হাসপাতালে সরকারি বেসরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন মধুপুরে ৭ হাজার ইয়াবাসহ একজন গ্রেফতার মধুপুরে বিএনপি নেতার কারখানায় ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ৯ মধুপুরে বিধবা নারী পেল মাথা গোঁজার ঠাঁই মধুপুরে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন মধুপুরে সাবেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল ব্যতিক্রম আয়োজনে দিগরবাইদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘বর্ণমেলা’ মধুপুরে বিএনপি নেতার কারখানায় ডাকাতি ও লুটপাটের ঘটনায় মামলা টাংগাইলে থামছেই না পল্লী বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরি বাড়িতে একা পেয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ, দেবর-ভাতিজা গ্রেপ্তার

মির্জাপুরে মাটিখেকোদের থাবায় তিন ফসলি জমি হচ্ছে ‘নদী’

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ২৯০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মাটিখেকোদের থাবায় তিন ফসলি জমি হচ্ছে ‘নদী’। কখনো রাতে কখনো দিনে এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটিখেকোরা মাটি লুটে নিচ্ছে। এতে করে বিপুল পরিমাণ আবাদি জমি কমছে। কৃষিজমি কমে যাওয়ায় ধান, আলু, পাট, সরিষা, সবজিসহ খাদ্যশস্য উৎপাদনে এর বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এভাবে দ্রুত কৃষিজমি কমতে থাকলে এক পর্যায়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর খাদ্যের চাহিদা মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার অর্ধশতাধিক স্থানে সরকারদলীয় প্রভাবশালী কিছু নেতার ছত্রচ্ছায়ায় এই মাটি কাটা হচ্ছে। বেশিরভাগ মাটি যাচ্ছে ইটভাটাগুলোতে।

মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন বারবার অভিযান পরিচালনা করলেও তাঁদের রুখতে পারছে না বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।

উপজেলার গোড়াই, ফতেপুর ও বানাইল ইউনিয়নের তিন ফসলি জমির মাটি সবচেয়ে বেশি কাটা হচ্ছে।

জানা গেছে, এই উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়নে প্রায় ২৮ হাজার হেক্টর জমিতে ধান, ২০ হাজার হেক্টরে সরিষা ও সবজির আবাদ হয়। এই উপজেলায় উৎপাদিত ফসল উপজেলার চাহিদা মিটিয়েও অন্য উপজেলায় সরবরাহ করা যায়। প্রতিবছর আবাদি জমির মাটি কেটে নেওয়া হয়।

ফলে ওই আবাদি জমি নদী হওয়ায় চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই এসব এলাকায় জমির মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের রশিদ দেওহাটা, মমিননগর, লতিফপুর ইউনিয়নের যোগীরকোফা ও ত্রিমোহন ফিরিঙ্গিপাড়া মৌজার বংশাই নদীর পার ভেকু মেশিনের মাধ্যমে মাটি কেটে ডাম্প ট্রাকে নেওয়া হচ্ছে।

একইভাবে এই উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের বংশাই নদীর চাকলেশ্বর, থলপাড়া, বৈলানপুর ও পারদীঘি ব্রিজের উত্তর পাশ পর্যন্ত কমপক্ষে ১০টি স্থানে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি লুট করা হচ্ছে।

ফসলি জমির মালিকরা নিরুপায় হয়ে নামমাত্র মূল্যে মাটি বিক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।

উপজেলা প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও কিছু সময়ের জন্য মাটি কাটা বন্ধ রেখে প্রশাসনের লোক সরে গেলে ফের মাটি কেটে নেয় বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।

মাঝালিয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান মতি জানান, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গ্রামীণ সড়কগুলো ডাম্প ট্রাকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পাথালিয়াপাড়া এলাকার ফসলি জমি থেকে প্রকাশ্য ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে নদী বানানো হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, ওই এলাকায় বাওয়ার কুমারজানী গ্রামে নদীর ওপর একটি বাঁধ নির্মাণ করতে দেখা গেছে। মাটি নেওয়ার জন্য এই বাঁধটি ব্যবহৃত হবে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।

বহুরিয়া গ্রামের কৃষক সুলতান মিয়া ও আসাদ মিয়া জানান, বর্গা নিয়ে তাঁরা প্রায় ১০০ শতাংশ জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। জমির মালিক মাটি বিক্রি করায় অপরিপক্ব সরিষা তুলে ফেলতে হচ্ছে।

গোড়াই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার লিটন মিয়া জানান, তাঁর এলাকা পাথালিয়াপাড়ায় মাটি কাটা বন্ধের জন্য তিনি গত বছর উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্থানে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর জানান, মাটি লুটকারীর তালিকা করা হচ্ছে। ওই তালিকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে জমা দেওয়া হবে।

মির্জাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার পাল জানান, যেভাবে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নদী বানানো হচ্ছে, তাতে আগামীতে মির্জাপুরে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।

মির্জাপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান জানান, প্রতিনিয়ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালানো হচ্ছে।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাকিলা বিনতে মতিন জানান, মাটি লুটেরাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এক সপ্তাহে ছয়টি ভেকু মেশিন, ১২টি ডাম্প ট্রাক ও একটি ড্রেজার জব্দ করা হয়েছে। বিভিন্ন মাটি ব্যবসায়ীদের কাছ থাকে প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি বা ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয়)
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102