নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূরে আলম মুক্তার বিরুদ্ধে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। গত শনিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সখীপুর পৌরসভার জেলখানা মোড় এলাকায় ওই চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পর গত শনিবার রাতে সখীপুর থানায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী। বর্তমানে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। গৃহবধূকে মারধরের একটি ভিডিও গতকাল রোববার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর গতকাল বিকেলে উপজেলার কালিদাস বাজারে ইউপি চেয়ারম্যানের বিচার চেয়ে এলাকাবাসী এক প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
লিখিত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভুক্তভোগী গৃহবধূ উপজেলার কালিদাস গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রী। তিনি সখীপুর পৌরসভার জেলখানা মোড় এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। একই এলাকায় বসবাস করেন বহুরিয়া ইউপির চেয়ারম্যান নূরে আলম মুক্তা। দুজনের মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। সম্প্রতি ইউপি চেয়ারম্যানের মেয়ে ও গৃহবধূর মেয়ের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনার জেরে চেয়ারম্যানের স্ত্রী বিদ্যালয়ে গিয়ে ভুক্তভোগী নারীর মেয়েকে গালিগালাজ করেন। ওই ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে বিচার চাইতে গেলে মারধরের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, ‘আমার মেয়েকে গালিগালাজ করায় বিচার দিতে গেলে চেয়ারম্যান ও তাঁর আরেক প্রতিবেশী আমাকে বেধড়ক মারধর করেন। তাঁরা এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে আমাকে জখম করেন।’ এ ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নূরে আলম মুক্তা বলেন, ওই নারী পরিকল্পিতভাবে আরেক নারীকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। বাচ্চাদের স্কুলের তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে তাঁর বাসার ফটকে লাথি মেরে নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে এক প্রতিবেশী প্রতিবাদ করলে ওই নারী তাঁর গায়ে হাত তোলেন। তাঁকে (চেয়ারম্যান) ফাঁসাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওটি কেটে আংশিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শাহিনুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে গতকাল বিকেলে উপজেলার কালিদাস বাজারে প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাজার বণিক সমিতির সভাপতি সোহরাব আলী। সমাবেশে বহুরিয়া চতলবাইদ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম, বহুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, উপজেলার বি কে কলেজের প্রভাষক সারোয়ার আলম, যুবলীগ নেতা সবুজ মিয়া প্রমুখ বক্তব্য দেন। সমাবেশ থেকে বক্তারা ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পাশাপাশি পরিষদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান।