মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ০৩:০৪ অপরাহ্ন

শিরোনাম :
“এসো শিকড়ের টানে, মিলি প্রিয় প্রাঙ্গণে” প্রতিষ্ঠার ৪৪ বছরে প্রথম মধুপুর আদর্শ ফাজিল মাদরাসার সাবেক বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা মধুপুরে বাস মাহিন্দ্র মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকসহ দু’জন নিহত অতিরিক্ত ভাড়া ও মাপে কম দেয়ার অপরাধে মধুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা মধুপুর পৌরশহরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান মধুপুর থেকে চুরি হওয়া ট্রাক ভারত সীমান্ত থেকে উদ্ধার মধুপুরে গ্রাম পুলিশদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণ মধুপুরে কর্ণেল আজাদের পক্ষে জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন মধুপুরে গজারি গাছ ব্যবহার হচ্ছে ঘর নির্মাণের কাজে মধুপুরে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে মতবিনিময় সভা মধুপুরের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বনবাসীদের ১২৯ টি মামলা প্রত্যাহারের ঘোষনা

টাঙ্গাইলে মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের ইফতারে নেই ফলমূল

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০২৪
  • ২১৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলে মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের ইফতারে নেই ফলমূল। তবে খেজুর থাকলেও তা খুবই সামান্য। বুট, মুড়ি, সোলা, সাগর কলা, শরবত ছাড়া তেমন দেশীয় ফলও নেই। কারণ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে সেগুলো কেনার সামর্থ্য নেই শিক্ষার্থীদের। এদের মধ্যে দুই একজন শিক্ষার্থীদের সামর্থ্য থাকলেও বাকি বন্ধুদের সাথে একত্রে ইফতার করায় তারাও ফলমূল খাওয়া থেকে বঞ্চিত।

সরেজমিনে টাঙ্গাইল সদর সন্তোষ ঘোষপাড়ায় অবস্থিত একটি মেসে গিয়ে দেখা গেছে, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ১৫জন শিক্ষার্থী সন্তোষের ঘোষপাড়ার একটি বাসার দ্বিতীয়তলায় ভাড়া থাকেন। এরা প্রতিদিন সবাই একত্রে ইফতার করেন। ওই ম্যাসের আমিরুল ও তানজিম ইফতার শুরুর ১৫ মিনিট আগে চাদর পাড়ছেন। একে একে আনা হচ্ছে মুড়ি, বুট, সোলা, পেয়াজু, বেগুন ভাজি, খেজুর, শরবত বানানোর চিনি ও ট্যাংক পাউডার এবং সাগর কলা।

ম্যাস প্রধান জাহিদ পানিতে চিনি ও ট্যাংক পাউডার ঢালছে। এরপর বাকি শিক্ষার্থীরা সহযোগিতা করছে। এটি তাদের প্রতিদিনের ইফতার। তবে কোন কোন দিন জেলাপি এবং পেয়ারাও থাকে ইফতারে। তবে সেটা নির্ভর করে টাকার উপর। কিন্তু বাজারের হরেক রকমের ফল যেমন, কমলা, আপেল, আঙ্গুর, বেদেনাসহ আমদানীকৃত ফল কিনতে পারে না তারা। কারণ প্রতিমাসের নির্দিষ্ট পরিমাণের টাকা খরচের বাইরেও রোজায় বেশি টাকা খরচ হয়। নির্দিষ্ট টাকার বাজেটে ফলমূলের তালিকা করাটা কষ্টসাধ্য। ইফতারের মেনুতে ফল না থাকায় ভাজিপোড়াতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।

শুধু ওই মেসেই নয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীদের মেসেই এমন অবস্থা রয়েছে।

এদিকে শুধু ইফতারে নয় এরপরের খাবারের মেনুতে নেই বড় বড় রুই বা কাতল মাছ, খাসির বা মুরগির মাংস। সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন বয়লার মুরগি থাকে খাবার মেনুতে। অন্যদিকে মেস ভাড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি দাম বেড়ে বিদ্যুতের। এতেও বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। ফলে একজন শিক্ষার্থী টিউশনির টাকা এবং বাড়ি থেকে টাকা এনেও মেস খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। বাজারমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে বিলাসী পন্যতো দুরের কথা বা আপেল-কমলা আঙ্গুরসহ আমদানী নির্ভর ফলমূল ছাড়াই ইফতার করতে হচ্ছে মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের। তাই উর্ধ্বগতি বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চায় শিক্ষার্থীরা।

মেস প্রধান জাহিদ জানায়, গ্রাম্য এলাকা হলেও এখানে বিশ্ববিদ্যালয় থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষপত্রের দাম কিছুটা বেশি। শহরের পার্কের বাজারের চেয়ে প্রত্যেক পন্য এখানে বেশি দামে কিনতে হয়। ইফতারে তেমন কিছুই থাকে না ভাজিপোড়া ব্যতিত। শবড়ি কলার পরিবর্তে সাগর কলা কিনতে হয়। ফল হচ্ছে বিলাসী পন্য হয়ে দাড়িয়েছে। যা মেসের শিক্ষার্থীদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। বাজারে গেলে ফলের দিকে চোখ যায় কিন্তু কেনার সামর্থ্য নেই। ইফতারের প্রথমদিন কিছু কিছু ফল কিনতে পারলেও পরেরদিনগুলো আর সম্ভব হয়নি।

মেসের শিক্ষার্থী আবির জানায়, ইফতারের খেজুরের পরিমাণ থাকে কম। আগে যেখানে মাসে ৩ হাজার টাকা খরচ হতো বর্তমানে রোজার মাসে যেভাবে ইফতারসহ রাতে এবং সেহেরিতে খেতে হচ্ছে তাতে ৪৫০০ টাকা খরচ পড়বে। সেখানে যদি ফলমূল কেনা লাগতো তাহলে আরো জনপ্রতি ২ হাজার টাকা বাড়তি খরচ পড়বে। এতো টাকা পরিবার থেকে আনা সম্ভব না।

মাভাবিপ্রবি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের মাসুদ রানা বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে বর্তমান সময়ে আগের মাসের থেকে সবকিছুর দাম ২০ থেকে ৫০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে। মানুষ ইফতারে প্রয়োজনের পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেতে পারছে না। মেসের শিক্ষার্থীরা আরো কষ্টে ইফতার করছে।

ফুড এন্ড নিউট্রিশন বিভাগের সুমাইয়া আফরিন বলেন, বাজারে সব জিনিসের মূল্যের যে উর্ধ্বগতি, তাতে যারা নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীরা বেশি বেকায় আছে। বাড়ি থেকে বাড়তি টাকা এনেও খরচ চালাতে পারছে না। পরিবারও কষ্টে আছে। কোনো জিনিসের দাম একবার বাড়লে তা পুনরায় পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে দেখিনি কখনো।

ফুড এন্ড নিউট্রিশন বিভাগের শামীম বলেন, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য বর্তমানে বাজারে ঢুকলেই হাহাকার। যে খেজুর ১০০-১২০ টাকায় কেনা যেতো সেই খেজুর এখন ৫০০ টাকা। লেবু ২০-৩০ টাকা থেকে এখন ৯০-১০০ টাকা, ১ কেজি ছোলা ১০০ টাকা, চিনি ৭০-১০০ টাকা থেকে এখন ১৪০-১৫০ টাকা। আপেল, কমলা, মাল্টা, আঙ্গুর তো এখন আমাদের মতো মানুষের কাছে বিলাসীতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী টিউশনি করে চলে। কিন্তু বর্তমান বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও, টিউশনির সম্মানি বাড়েনি। তাই ফলমূল খাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও কেনার সামর্থ্য নাই। দিন দিন স্বাস্থ্যগত সমস্যায় ভুগছে মেসে থাকা শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©২০২৫ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত (এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি বা ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা আইনত দণ্ডনীয়)
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102