নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ঈদের আগে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যাত্রীবাহী চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে টাঙ্গাইল জেলা ও গোড়াই হাইওয়ে থানা পুলিশের সহযোগিতায় সন্দেহভাজন একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাত্রী ও ডাকাতদের ধস্তাধস্তিতে বাসের যাত্রী নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুভাষ চন্দ্র, বাসের চালক আনসার মোল্লা ও সহকারি এহসান মিয়া আহত হয়েছেন। তাকে কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ডাকাত দলের সদস্যরা যাত্রীদের কাছে থাকা নগদ দুই লাখ ৫৩ হাজার ৯৫০ টাকা ও তিন লাখ টাকার মালামাল লুটে নেয়।
বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুর দুইটার দিকে হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার রাজীউর রহমান গোড়াই হাইওয়ে থানায় প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য জানান।
তবে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারকৃত সন্দেহভাজন সোহেলের কাছে বৈধ এনআইডি কার্ড ও শিক্ষা সনদ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করা হবে বলে তিনি জানান।
হাইওয়ে পুলিশের গাজীপুর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার রাজীউর রহমান প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা শিশির ব্যানারের আব্দুল্লাহ পরিবহনের (ঢাকা-মেট্রো-ব-১১-০১৪৪) যাত্রীবাহী বাস রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসে। এ সময় মহাসড়কের চন্দ্রা থেকে যাত্রীবেশে ৫/৬ জন ডাকাত সদস্য বাসে উঠে। রাত দেড়টার দিকে মির্জাপুর বাইপাস পার হওয়ার পর ডাকাত সদস্যরা চালককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বাসটি নিয়ন্ত্রণে নেয়। পরে তারা যাত্রীদের কাছ থেকে দুই লাখ ৫৩ হাজার ৯৫০ টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার লুটে নিয়ে মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে ইউটার্ণ করে ঢাকার দিকে যাত্রা করেন। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে থেকে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল দেয়া হলে জেলা ও গোড়াই হাইওয়ে থানা পুলিশ ডাকাত সদস্যদের আটক করতে ধাওয়া করে। এ সময় ডাকাত সদস্যরা হাইওয়ে পুলিশের গাড়ি চাপা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এতে পুলিশের গাড়িটির সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ সময় হাইওয়ে থানায় কর্মরত কনস্টেবল রসূল আলী তার শর্টগান থেকে এক রাউন্ড রাবার বুলেটের গুলি ছোঁড়ে। গোড়াই ফ্লাইওভারের পূর্ব পাশে মির্জাপুর থানার টহল পুলিশ রাস্তায় বেরিকেড দিয়ে বাসটি আটক করে। এ সময় ডাকাত সন্দেহে যাত্রীদের গণধোলাইয়ের শিকার হন সোহেল রানা নামে একজন। তিনি রাজশাহীর তানোর উপজেলার মাড়িয়া গ্রামের সৌখিন মিয়ার ছেলে। ডাকাত ও যাত্রীদের ধস্তাধস্তিতে বাসের যাত্রী নৌ পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সুভাষ চন্দ্র, বাসের চালক আনসার মোল্লা ও সহকারি এহসান মিয়া আহত হয়েছেন।
এর আগেই পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলের অপর সদস্যরা বাস থেকে নেমে পালিয়ে যায়। পরে হাইওয়ে থানা পুলিশ বাস ও গ্রেপ্তারকৃত সোহেলকে মির্জাপুর থানায় সোপর্দ করেন। এ ঘটনায় বাসের চালক আনসার মোল্লা বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, গ্রেপ্তারকৃত সোহেলের কাছে তার বৈধ এনআইডি ও শিক্ষা সনদ পাওয়া গেছে। একজন ডাকাত সদস্যের কাছে এসব কাগজপত্র থাকার কথা না। সোহেলের বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।