নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাণিজ্যিক এলাকা করটিয়ায় এক বালিকা মাদ্রাসায় বোরকা পরে সিয়াম নামের এক যুবক প্রবেশ করায় গণপিটুনির শিকার হয়েছে। পরে স্থানীয়দের গণপিটুনির কবল থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান। সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে করটিয়ার রওজাতুল মহিলা মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ওই যুবক টাঙ্গাইল সদর থানার পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
আটককৃত ওই যুবকের নাম সিয়াম হোসেন সিপু (১৯)। সে টাঙ্গাইল পৌরসভার ধুলেরচর মাদ্রাসা সংলগ্ন বৈল্যা এলাকার ফরহাদ আলীর ছেলে। সিয়াম এ বছর বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
করটিয়া রওজাতুল বালিকা মাদ্রাসার পরিচালক জানান, সোমবার সকালে বোরকা পরিহিত এক মহিলা বালিকা মাদ্রাসায় প্রবেশ করে। পরে তার কণ্ঠ শুনে ও আচরণে সন্দেহ হলে তাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। পরে বোরকার উপরের অংশ খুলে চেক করা হলে সে যুবক বলে প্রমাণিত হয়। একপর্যায়ে খবরটি ছড়িয়ে পরলে উত্তেজিত জনতা মাদ্রাসা থেকে বের করে তাকে গণপিটুনি দিতে থাকে। উত্তেজিত জনতার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য তাকে দ্রুত করটিয়া ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও উৎসুক জনতা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। সেখান থেকে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়।
করটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা খালেকুজ্জামান চৌধুরী মজনু বলেন, পরিষদের কাজে আমি উপজেলা পরিষদে থাকায় শাহীন মেম্বার ও লতিফ মেম্বারে মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হই। এ সময় ইউনিয়ন পরিষদে উৎসুক জনতা ভিড় জমে গেলে দ্রুত পুলিশে খবর দেই। পরে পুলিশ এসে ওই যুবককে আটক করে নিয়ে যায়।
আটককৃত সিয়ামের পিতা ফরহাদ আলী জানান, তার ছেলে মানসিক ভারসাম্যহীন। মাঝেমধ্যেই নানা কাণ্ড ঘটায়। তাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সোমবার সকালে সিয়াম নানীর বাসায় যাবে বলে বাসা থেকে বের হয়। তারপর পুলিশের কাছে খবর পাই তাকে করটিয়া থেকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। সিয়ামের মানসিক সমস্যার কারণে এ বছর সে বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা থাকলেও দিতে পারেনি। তাকে নিয়ে প্রায়ই আমরা নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি।
টাঙ্গাইল সদর থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরিফ রাব্বানী জানান, খবর পেয়ে করটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সিয়াম নামের এক যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তদন্তের পর ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।