মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

মধুপুরে বনের জলাশয় দখল করে ভরাট

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
  • ১৯১ বার পড়া হয়েছে
ফাইল ছবি

আলকামা সিকদার মধুপুর প্রতিনিধিঃ

– বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে ফসল
– প্রচণ্ড তাপদাহে কাহিল বন্যপ্রাণীরা
– বাড়ছে খাদ্য ও পানীয় জলের সঙ্কট

মধুপুর শালবনের অভ্যন্তরে টিকে থাকা প্রাণিকুলের অবস্থা চলমান তীব্র তাপদাহে মরণাপন্ন। গাছপালা কমে যাওয়ায় বনের পরিবেশ আগের মতো নেই। পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলা আগ্রাসী গাছ লাগানোর ফলে দিন দিন পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে। উজাড় হচ্ছে শাল বন। আর সে সব জায়গায় সরকারের বিভিন্ন প্রজেক্টের মাধ্যমে গাছ লাগানো হচ্ছে। শাল বনের লাল মাটির মধুপুর বনের পরিবেশসম্মত গাছ হচ্ছে শাল সেগুন, জারুল, আমলকী, হরতকীসহ নানা দেশী প্রজাতি। আজুগি গাছের এখন আর দেখা মেলে না। অধিক ছায়া সমৃদ্ধ গাছ হারিয়ে গেছে বনের অভ্যন্তর থেকে। ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ফাঁপিয়ে উঠে বনের পরিবেশ। সামাজিক বনায়নে বিদেশী প্রজাতির গাছ লাগানোসহ আনারসের চাষে ঝোঁকার কারণে পরিবেশ আরো বিপন্ন হচ্ছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা হলে এসবের কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছেন, আনারস কলাসহ বিভিন্ন ফল ফসলের বাগানে রাসায়নিক ব্যবহারের ফলে পরিবেশের আরো মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। শালবনের অভ্যন্তরে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা জলাশয়গুলোও বিলীন হয়ে যাচ্ছে অধিক হারে। স্থানীয় ভূমিখেকোরা জলাশয় ভরাট করে কৃষি রাজ্যে পরিণত করছে। এ বনের জলাশয়ে গোসল করাসহ বন্যপ্রাণীদের একসময় অবাধ বিচরণ করতে দেখা যেত। এখন জলাশয়গুলো ভরাটের ফলে সারা বছর পানি সঙ্কটে কষ্ট করছে বন্যপ্রাণীরা।

গাছাবাড়ি গ্রামের আব্দুস ছাত্তার জানান, মধুপুর বনের অভ্যন্তরে চৌরাবাইদ, মুনারবাইদ, গুইলমারি, জিকুশি, শইলমারি, দিগলাকোনাসহ জলাশয়গুলোতে সারা বছর পানি থাকত। বাইদ বা জলাশয় ভরাট ও খনন করে চাষাবাদ করা হচ্ছে। ফলে পানীয় জলের সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহত্তর ময়মনসিংহ আদিবাসী কালচারাল ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের সভাপতি অজয় এ মৃ বলেন, এক সময় মধুপুর বন গহীন অরণ্য ছিল। প্রচুর ঝোপঝাড় থাকায় পশুপাখি প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেত। বনের মধ্যে জলাশয়ের পানিতে চলতো পশুপাখিদের জীবন। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক বন বাড়াতে হবে। সামাজিক বনায়ন বন্ধ করা দরকার বলে তিনি মনে করেন।

বেলার বিভাগীয় সমন্বয়ক গৌতম চন্দ্র চন্দ বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জীব বৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। বৃষ্টি কমে যাচ্ছে। এ জন্য জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও বন্যপ্রাণীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা দরকার।

জলবায়ু পরিবর্তন রোধ ও পরিবেশরসহকারী বন সংরক্ষক (টাঙ্গাইল উত্তর) আশিকুর রহমান বলেন, মধুপুর মূলত উঁচু জায়গা। তারপরও জাতীয় উদ্যানের গড়গড়িয়া বনবীথি রেস্ট হাউজের পাশে জলাশয়ে পানি রয়েছে, এখানে বানররা পানি খেয়ে থাকে। তার মতে, পানীয় জলের সমস্যার চেয়ে খাদ্য সমস্যা বেশি। মধুপুর বনের বন্য পশুপাখিরা অনেকাংশে ভালো আছে বলে তিনি মনে করেন।

বন উজাড় অবৈধ দখল বন্ধ করে সামাজিক বনায়নের নামে প্রাকৃতিক ধ্বংস বন্ধের দাবি স্থানীয়দের। প্রাকৃতিক বন রক্ষায় আবাসস্থল ফিরে পাবে বন্যপ্রাণীরা। বনের দখল হওয়া জলাশয়গুলো উদ্ধার করে আগের মতো মুক্ত করে বন্যপ্রাণীদের জন্য অবমুক্ত করার দাবি স্থানীয়দের।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights