নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়নের কূর্শাবেনুতে বীর মুক্তিযোদ্ধা বারেকের সমাধীস্থল স্থানীয় প্রভাবশালী অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা কবরের পাশের ভূমিতে গভীর গর্ত করে মাটি কেটে বিক্রি করছে। এর ফলে যে কোন সময় বীর মুক্তিযোদ্ধার সমাধিটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার শংকা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় বালুমাটি ব্যবসায়ী চক্র নিউ ধলেশ্বরী নদীর পাড় কেটে কূর্শাবেনুর বিস্তৃর্ণ এলাকার ভূমির বালিমাটি ৩/৪ টি বেকু দিয়ে কেটে রাতদিন শতশত ড্রামট্রাকে বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। যার ফলে সরকার হারাচ্ছেন বিপুল পরিমান রাজস্ব, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদী ও নদী পাড়ের মানুষ।
বালু খেকোর অর্থ লালসায় কূর্শাবেনুতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম বারেকের সমাধীস্থলটি রক্ষা পাচ্ছেনা। বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরটি সংরক্ষণের জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে পাকা করে দেয়া হয়। কবরের পাশে গভীর গর্ত করে মাটি খনন করে বিক্রি করছেন বালু খেকোরা।
কবরের পার্শ্বে গভীর গর্ত করার ফলে যে কোন সময় মুক্তিযোদ্ধার কবরটি ধসে গিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বলে অভিযোগ করেছেন মৃত মুক্তিযোদ্ধার ছোটভাই কূর্শাবেনুর কুদরত আলী সিকদার। তিনি বলেন, আমার ভাই মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা বারেকের রেকর্ডীয় জমিতে তার কবরটি সরকার সংরক্ষণের জন্য পাকা করে দিয়েছেন। তিনি দুঃখ করে বলেন, প্রভাবশালী বালিমাটি ব্যবসায়ীদের কাছে নিজের জমিতে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কবরটি বাঁচানোর জন্য কত কাকুতিমিনতি করেছি। তাতে কোন লাভ হয়নি। উপরোন্ত আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে এ বিষয়ে আমরা যেন কোন কথা না বলি।
এ বিষয়ে গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল হাই আকন্দ বলেন, আমি সাবেক চেয়ারম্যান হযরত আলীকে জানিয়েছি। কূর্শাবেনু বালুঘাট গুলজার ও ইউছুবের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। গুলজার ও ইউছুব ফোন ধরেনা। আপনি ইউএনওকে জানান।
বালু ব্যবসায়ী ইউছুব বলেন, আমরা হযরত চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ঘাট কিনে নিয়ে ব্যবসা করছি। মুক্তিযোদ্ধার কবর ক্ষতিগ্রস্তের বিষয়ে তিনি নিঃশ্চুপ থাকেন।
এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান মজনু বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি তার সমাধীর প্রতি অসম্মান আমাদের কাম্য নয়। আমি বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল বারেকের সমাধীস্থল পরিদর্শন করে, ইউএনও মহোদয়ের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করবো।
এ ব্যাপারে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহাদাৎ হুসেইন বলেন, এখনি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে ঘটনাস্থলে পাঠাচ্ছি তিনি ব্যবস্থা নিবেন।
সহকারি কমিশনার (ভূমি) বলেন, বালু পরিবহনের দায়ে সেখানে ১ জনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১৪ দিনের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।