নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর বানিয়াজানে অবস্থিত ইটভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত কালোধোঁয়ায় ভাটার আশপাশের পাঁচ-ছয় একর জমির ধান পুড়ে চিটা হয়ে গেছে। এতে সমূহ ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। ক্ষতিপূরণের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তারা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
বানিয়াজান গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক আলাল উদ্দিন, আজিজুল শেখ, ভানু বেগম, বাবুল ইসলাম, হুসেন আলী, রুবেল হোসেন ও ময়নাল মিয়া অভিযোগের সুরে জানান, তিন ফসলি জমিতে সরকারিভাবে ইটভাটা নির্মাণ অবৈধ হলেও সরকারি সেই নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইটভাটা নির্মাণ ও ইট তৈরি রমরমা ব্যবসা করে যাচ্ছেন ‘সাবিব ইটভাট’ কর্তৃপক্ষ। ওই ইটভাটার পাশের তাদের বোরো ধানের জমি। সেসব জমির সোনালি ধান আর কিছুদিন পরই কেটে ঘরে তোলা হবে। কিন্তু ইটভাটার বিষাক্ত কালো ধোঁয়া ছাই ও গ্যাসের কারণে ক্ষেতের ধান পুড়ে চিটা হয়ে গেছে। ফলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।
তারা আরো জানান, এ ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই ইটভাটার মালিক পক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো সুরাহা পাওয়া যায়নি। তাদের ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেতে প্রতি বিঘায় তিন-চার মনের বেশি ধান ফলবে না। তাই তারা ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগপত্রে তারা তাদের ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন।
কৃষক আলাল উদ্দিন ও ময়নাল হোসেন বলেন, সাবিব ইটভাটার কারণে আমাদের এলাকার আম, নারিকেল, সুপারি, লেবুসহ সব ধরনের ফলের গাছে ফল ধরছে না। গাছের পাতা পুড়ে গাছ মরে যাচ্ছে। ইটভাটার ধোঁয়ায় শিশুরা ও বৃদ্ধরা ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হচ্ছে। ট্রাক্টরে করে ইটভাটার মাটি আনানেয়ার কারণে সড়ক পথগুলো খানাখন্দে ভরে যাচ্ছে। কয়েক মাস আগে সাবিব ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদাল মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা করেছে। কিন্তু কোনো এক অদৃশ্য শক্তির কারণে ভাটাটি বন্ধ করা হয়নি।
এ ব্যাপারে সরেজমিনে সাবিব ইটভাটায় উপস্থিত হলে আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ভাটা কর্তৃপক্ষ দ্রুত গা ঢাকা দেয়। এ সময় ভাটা ম্যানেজার রাকিবুল ইসলামের মোবাইলফোনে বারবার কল দেয়া হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান জানান, তিন ফসলি জমি বা জমির আশপাশে ইটভাটা নির্মাণ করা সম্পূর্ণ বেআইনি। ইটভাটার বিষয়টি জানার পর সেখোনে ব্লক সুপারভাইজারকে পাঠানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ফসলের ক্ষতি ও ইটভাটার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।