নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি)’র সাধারণ শিক্ষার্থীরা ২১ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন চলমান রেখেছে। গত রবিবার (২৬ মে) সকাল ১১ টা থেকে এই আন্দোলন চলমান রেখেছে শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে অবস্থান করেন এবং বিভিন্ন দাবি আদায়ের পক্ষে স্নোগান দিতে থাকেন। পরে মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকাল ৪ টায় প্রক্টরের কুশপুত্তলিকা দাহ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
গত রবিবার ( ২৬ মে) শিক্ষার্থীরা ২১ দফা দাবি উল্লেখ করে একটি স্মারকলিপি উপাচার্য বরাবর প্রেরণ করেন। স্মারকলিপিতে ২১ দাবি সমূহগুলো হলো-৭২ ঘন্টার মধ্যে অযোগ্য প্রক্টরকে উক্ত পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে, নতুন দায়িত্ব প্রান্ত প্রক্টরকে অবশ্যই শিক্ষার্থীবান্ধব এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে, আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে সরকার বাড়ি মেসের ঘটনার সমাধান করতে হবে, কার্যত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে, অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে প্রযোজনে রিমান্ডের ব্যবস্থা করে ভিক্টিমের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, শিক্ষার্থীদের প্রতি আর কোন বাজে আচরণ বা হুমকি-ধামকি আসবে না তা নিশ্চিত করতে হবে, পক্ষপাত বা স্বজনপ্রীতি থাকবে এমন কাওকে কোন পদে বহাল করা যাবে না, শিক্ষার্থীদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত করে স্বাভাবিক জীবন-যাপন ও পড়াশোনার মান নিশ্চিত করতে হবে, প্রক্টরের বিরুদ্ধে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, অতিদ্রুত সরকার মেসের বাকি মেয়েদের হলে অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সংকট নিরসন করে বাসের সিডিউল বাড়িয়ে আমাদের পরিবহন সমস্যার সমাধান করতে হবে, আবাসন সংকট দূর করে শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করতে হবে, পরীক্ষার ফলাফল দ্রুত প্রকাশের মাধ্যমে একাডেমিক জট নিরসন করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেক শ্রম-ঘাম, সাধনা দিয়ে গোল্ড মেডেলিস্ট হয়, ডিপার্টমেন্ট ও ফ্যাকাল্টি সেরা হয় অর্থাৎ শিক্ষক নিযোগের ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং সকল বিভাগে এই অগ্রাধিকারের বাস্তবায়ন করতে হবে, ৯ম, ১০ম, ১১তম, ১২তম, ১৩তম, ১৪তম গ্রেডের চাকুরিতে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং আবেদনের যোগ্যতা শিখিল করতে হবে, সেন্ট্রাল লাইব্রেরির আসন বিন্যাস এবং সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে, অনাবাসিক শিক্ষার্থী যারা ক্যাম্পাসের আশেপাশে অবস্থান করে এবং হলে টোকেন কেটে খায় তাদেরকে এই সুযোগ পেতে বাধা দেওয়া যাবে না, জনবল সংকট দ্রুত নিরসন করে এই সমস্যার সমাধান দিতে হবে, ছাত্রী হলের মেইন গেইট এর সময় বাড়িয়ে রাত ১০ টা করতে হবে এবং যেহেতু এখন নিরাপত্তা বাহিনী সারা রাত ডিউটি তে থাকে সেহেতু তিন ছাত্রী হলের মধ্যে সারারাত গেইট খোলা রাখতে হবে, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ডাইনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে, শেখ রাসেল হলে ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করে দিতে হবে, ৩টি ছাত্রহলের জন্য গ্যারেজের সুব্যবস্থা করতে হবে, পরিবেশ ও বৈশ্বিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে সৌন্দর্যা বর্ধনের নামে শুধু অর্থ অপচয় হয় এমন ফুল গাছ না লাগিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ছায়া প্রদানকারী বিভিন্ন বৃক্ষ রোপন করতে হবে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রতিনিধি সুখি আক্তার জানান, আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।