নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ঘিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ। দুটি প্যানেল করে নির্বাচন করছেন নেতাকর্মীরা। তবে আওয়ামী লীগের বিভক্তির সুযোগ নিতে চান টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ফিরোজ হায়দার খান। চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন তিনি।
জানা গেছে, বুধবার (৫ জুন) ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এই নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দুটি প্যানেল করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এক প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত (আনারস)। তাঁর সঙ্গে জোট বেঁখেছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আজহারুল ইসলাম এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মীর্জা শামীমা আক্তার শিফা।
আরেক প্যানেলের নেতৃত্বে রয়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি এস এম মোজাহিদুল ইসলাম মনির (কাপ-পিরিচ)। তাঁর সঙ্গে জোট করেছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী গোড়াই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা শওকত মিয়া এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহাবুবা শাহরীন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম মোজাহিদুল ইসলাম মনির বলেন, বিগত সংসদ নির্বাচনে যারা নৌকার বিপক্ষে কাজ করেছেন, তারা এখন জোট করে উপজেলা নির্বাচন করছেন। তখনকার মতোই জনগণ আমাদের পক্ষেই রায় দেবে।
তবে প্যানেলের বাইরে থেকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক চাঁদ সুলতানা। আর চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নীরব দর্শকের ভূমিকায় রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ। আওয়ামী লীগের বিভক্তির সুযোগ নিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ও বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফিরোজ হায়দার খান (মোটরসাইকেল)। তবে উপজেলা বিএনপি তাঁকে সমর্থন না দেওয়ায় পদবঞ্চিতদের নিয়ে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন তিনি।
গত সংসদ নির্বাচনেও নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেন উপজেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা। তখনও আওয়ামী লীগ বিভক্ত হয়ে নির্বাচন করে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খান আহমেদ শুভ বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে বর্তমানে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন।
চেয়ারম্যান প্রার্থী ফিরোজ হায়দার খানের ভাষ্য, তৃণমূল বিএনপি এবং এলাকার মানুষের দাবিতে প্রার্থী হয়েছেন তিনি। উপজেলা বিএনপিরও অনেক নেতা তাঁর জন্য কাজ করছেন। আওয়ামী লীগের বিভক্তি তাঁর জয়ের পথ সহজ করবে।
চেয়ারম্যান প্রার্থী ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত বলেন, মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগে দৃশ্যমান দুটি গ্রুপ। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে দলের দ্বন্দ্ব নিরসনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আমার প্রতিপক্ষ কথা না শোনায় সমাধান হয়নি।
মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং আমাদের এমপি খান আহমেদ শুভর সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। কোনো সমাধান পাইনি। দলের বৃহত্তর স্বার্থে নিজে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছি।