নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে নারীর ‘আত্মহত্যার’ ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (২২ জুন) রাতে প্রেমিক সোহাগের ঘরে ‘আত্মহত্যা’ করেন শান্তা আক্তার। এ ঘটনায় রবিবার (২৩ জুন) দুপুরে নিহত শান্তার বোন বিউটি বেগম বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ মামলায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
জানা গেছে, কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার অলুয়া গ্রামের মোখলেছুর রহমানের মেয়ে এক সন্তানের জননী শান্তা আক্তারের সঙ্গে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলা খালুয়াবাডী গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে সোহাগের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক বছর আগে মোবাইল ফোনে তাদের পরিচয় হয়। এরপর থেকে তাদের দু’জনের মোবাইল ফোনে কথা হতো। কথা বলার একপর্যায়ে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতেও যান তারা। এ সময় তাদের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়। এক সময় বিয়ের জন্য শান্তা প্রেমিক সোহাগকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। তখন নানা তালবাহানা শুরু করেন সোহাগ। এছাড়াও সোহাগ দুই লাখ টাকাসহ তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার নেন বলে দাবি শান্তার বোনের।
আরো পড়ুনঃ কালিহাতীতে বিয়ে না করায় প্রেমিকের ঘরে প্রেমিকার আত্মহত্যা
সম্প্রতি বিয়ের দাবিতে শান্তা কালিহাতীতে ছুটে আসেন। বিষয়টি স্থানীয় মাতবর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ছেলের পক্ষ নিয়ে শান্তাকে অপমান করেন। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন ওই নারী। বিয়ের দাবিতে চারদিন আগে সোহাগের বাড়িতে অবস্থান নেয় শান্তা। এ ঘটনায় সোহাগ বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। সোহাগের পালিয়ে যাওয়া, সোহাগের স্বজন ও স্থানীয় মাতব্বদের অপমান সইতে না পেরে ক্ষোভে শনিবার (২২ জুন) রাতে প্রেমিক সোহাগের ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ সোহাগের বাবা নুরুল ইসলাম ও মা ছোবুরা বেগমকে আটক করেছে।
নিহত শান্তার বোন বিউটি বেগম বলেন, শান্তা বিবাহিত মেয়ে। তাঁর একটি সন্তান রয়েছে। আমার বোনকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সোহাগের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে কালিহাতী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিন্টু চন্দ্র ঘোষ জানান, টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে রবিবার (২৩ জুন) দুপুরে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক জানান, দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।