মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:০২ অপরাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

শিরোনাম :

নাগরপুরে জমির মালিকানা হস্তান্তর ব্যাহত করার অভিযোগ দুই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪
  • ৭৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুরে বায়নাকৃত জমির মালিকানা হস্তান্তর করার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করার অভিযোগ উঠেছে দুইজন ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এতে তাদের পুরো বিচারকার্য নিয়ে সংশয় প্রকাশ এবং এক প্রকার জোরজবরদস্তি করে বিচারের রায় চাপানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আফাজ উদ্দিন খোকা।

লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত বছরের (২৩ নভেম্বর) দলিল লেখক মোকলেছুর রহমানের সম্পাদনায় বায়নাপত্র চুক্তি সম্পন্ন করা হয়। বায়নাপত্র চুক্তি অনুযায়ী গোলাপী বেগম, স্বামী- হুমায়ন কবির এই মর্মে উল্লেখ করেন, সাংসারিক নানা কারণ বশত নগদ টাকার প্রয়োজন হওয়ায় ৮ শতাংশ জায়গা (মৌজা-সহবতপুর, খতিয়ান-৪৪১) ৪ লক্ষ টাকায় বিক্রয় করার প্রস্তাব দেওয়ার নিমিত্তে আফাজ উদ্দিন খোকার নিকট থেকে অগ্রিম বায়না বাবদ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। চুক্তি অনুযায়ী দলিল রেজিস্ট্রেশন করার কথা থাকলেও সেটি নাকচ করে ইউনিয়ন পরিষদের দারস্থ হয়ে বায়নাপত্রের বিষয় অস্বীকার করে বিচারকার্যে জড়িয়ে পড়েন গোলাপী বেগম। জমি বিক্রির বায়নাপত্র করে জমির মালিকানা বুঝিয়ে না দিয়ে এমন বিচার প্রক্রিয়া দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন ভুক্তভোগী ক্রেতা আফাজ উদ্দিন।

সহবতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ মোল্লা বিচারের দায়িত্ব নিয়ে জুরি বোর্ড গঠন করে দেন এবং রায় দেওয়া হয় জমির ক্রেতার বিপক্ষে। জমির ক্রেতা রেজিষ্ট্রেশন খরচ বাবদ অতিরিক্ত ১৩ হাজার টাকা দিয়েও জমির মালিকানা পায়নি। এসব তোয়াক্কা না করেই বিচারের রায়ে বায়না ৫০ হাজার টাকার বিপরীতে অতিরিক্ত টাকা যোগ করে ৯০ হাজার টাকা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয় গোলাপী বেগমকে। পুরো বিচার প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করার অভিযোগ উঠেছে মামুদনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জজ কামালের বিরুদ্ধে। তিনি জমি বিক্রেতা গোলাপী বেগমের আত্মীয় বলে জানা যায়। অসহায় জমির ক্রেতা আফাজ উদ্দিন এখন ন্যায্য বিচারের দাবীতে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

এ বিষয়ে সহবতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন, বায়না চুক্তি অনুযায়ী বিক্রিত জমি মালিকানা বুঝিয়ে দিবে এটাই নিয়ম। এখানে জমির ক্রেতা আফাজের দাবী ন্যায্য। এর আগেও টাকা নিয়ে জমি না দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। জমির বিক্রেতা গোলাপীকে আমি বলেছিলাম জমি বিক্রির জন্য তার স্বামীকে সাথে নিয়ে আসতে হবে। স্বামীর সামনে জমি বিক্রি করলে তিনি (স্বামী) টাকা নিয়ে যাবেন বলে বিষয়টি নাকচ করেছেন গোলাপী। পরবর্তীতে আমার অনুপস্থিতিতে দামদর অনুযায়ী বাজারে টাকা লেনদেন করে বায়না চুক্তি সম্পন্ন করেছে আফাজ। যে বিচার কার্য হয়েছে সেটি নিয়ে আমি মন্তব্য করবো না।

বায়না চুক্তির ২ নং স্বাক্ষী আব্দুল জলিল মিয়া জানায়, সহবতপুর বাজারে এসে আফাজের কাছ থেকে জমি ক্রয়ের বায়না বাবদ গোলাপী নিজ হাতে টাকা নিয়েছেন এবং বায়না কাগজে তিনি স্বাক্ষর করেছেন। চুক্তির কাগজে আমি স্বাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর দিয়েছি। বিচারের সময় চেয়ারম্যান আমার কোনো মতামত নেয়নি। নিয়ম অনুযায়ী আফাজ জমির মালিকানা বুঝে পাওয়ার কথা। দলিল লেখক মোকলেছুর রহমান বলেন, গোলাপী বেগম আমার বাড়িতে এসে বায়না চুক্তির কাগজ লিখে নিয়ে গেছে। আমি নিজে চুক্তি সম্পাদন করেছি। পরবর্তীতে আফাজের কাছ থেকে চুক্তির কাগজ দেখিয়ে নিজে স্বাক্ষর দিয়ে বায়না বাবদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে এসেছেন। উভয়পক্ষের সম্মতিতে বৈধভাবে বায়না চুক্তি হয়েছে এবং সকলের সম্মতিতে জমির মালিকানা রেজিষ্ট্রেশনের জন্য সকল কাগজ প্রস্তুত করা হয়েছিলো এবং জমির বিক্রেতা গোলাপী নিজে তারিখ দিয়েছিলেন কিন্তু সময় অনুযায়ী উপস্থিত ছিলেন না। তিনি এখন জমি দিতে অস্বীকার করছেন। আফাজ উদ্দিন খোকা বলেন, আমি গোলাপী বেগমকে জমি ক্রয় বাবদ ৫০ হাজার টাকা বায়না এবং রেজিষ্ট্রেশন খরচ ১৩ হাজার টাকা দিয়েছি। বিচারে জমি ক্রয় বিষয়ে কোনো কথাই হয় নাই। জুরি বোর্ডে বিষয়টি নিয়ে ৯০ হাজার টাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত আমার উপর চাপানো হয়েছে। আমাকে কেউ জিজ্ঞাস পর্যন্ত করলো না আমি বিচার মানলাম নাকি না! মামুদনগর চেয়ারম্যান তার উপর কেউ কথা বলতে পারে নাই বিচারে। এখানে দুই চেয়ারম্যানের প্রভাব বিস্তার যদি না থাকতো তাহলে আমি জমি বুঝে পেতাম। আমি সুদে বা দাদনে টাকা দেই নাই যে এমন সমাধান আসবে। এর আগেও দুইবার জমি বিক্রি নিয়ে আমার সাথে অন্যায় করেছে। আমি ন্যায্য বিচার চাই। আমি জমির মালিকানা চাই।

মামুদনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জজ কামাল বলেন, সহবতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এই জমি বিষয় নিয়ে সমাধান করে দিয়েছে। আমার প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ বিষয়টি ভিত্তিহীন। নিয়ম অনুযায়ী বিচার কার্য করা হয়েছে। অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই।

সহবতপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ মোল্লা বলেন, গোলাপী এবং আফাজের জমি সংক্রান্ত বিষয় সমাধান করা হয়েছে। জুরি বোর্ড সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেই অনুযায়ী টাকা জমা রাখা হয়েছে। সবাই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে। এখন কেউ অস্বীকার করলে সেটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। মামুদনগর চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights