মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:০৭ পূর্বাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

শিরোনাম :

মধুপুরে প্রজনন স্বাস্থ্য সচেতনতায় উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রনজু’র সফলতার গল্প

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০২৪
  • ১৫০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ স্কুলগামী কিশোর কিশোরীদের গুরুত্বপূর্ণ সময় হচ্ছে কৈশোরকালিন সময়। এ সময়ে স্কুলগামীরা বিপদে কিংবা ঝরে পড়ার যেমন সম্ভাবনা থাকে তেমনি জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছানোর পিপাসা তাড়িত করে। এ সময়ে যেমন বাবা মা তাদের সন্তানকে নিয়ে চিন্তিত থাকে তেমনি কর্তৃপক্ষেরও নজিরদারি বেড়ে যায়। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগেরও দায়িত্ব বেড়ে যায়। এ বিভাগের কর্মপরিকল্পনা মতে অন্যান্য সেবার পাশাপাশি মাসে চারদিন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে এবং বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মা ও শিশু স্বাস্থ্য, প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা, গর্ভবতী মা, প্রসূতি স্বাস্থ্য সেবাসহ, স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের বয়:সন্ধিকালের স্বাস্থ্য শিক্ষা, নিরাপদ ও পুষ্টি সচেতনতা, বাল্যবিবাহসহ নানা বিষয়ে সচেতনতা নিয়েও কাজ করে থাকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। আর সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে রোকুনুজ্জামান রনজু। তিনি টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার গোলাবাড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার।

জানা যায়, রোকুনুজ্জামান রনজু ১৯৯২ সালে মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ঘাটাইল জিবিজি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করে টাঙ্গাইল মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) থেকে ডিপ্লোমা পাশ করেন। পরে ২০০৮ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের অধীনে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে চাকরিতে যোগ দেন। প্রথমে তিনি নারায়ণগঞ্জ বন্দরে যোগ দেন। পরে ঢাকা জেলার সাভারের কাউন্দিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সাত বছর চাকরি করে টাঙ্গাইলের ধনবাড়িতে বদলি হয়ে চলে আসেন। ধনবাড়িতে ছয় বছর অত্যন্ত সফলতা ও সুনামের সাথে চাকরি করে মধুপুর উপজেলায় বদলি হন। তিনি ২০২২ সালে মধুপুর উপজেলার গোলাবাড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কল্যাণ কেন্দ্রে যোগদান করে,শুরু করেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পিছয়ে পড়া শিশু কিশোরদের স্বাস্থ্য শিক্ষা পুষ্টি নিরাপদ খাদ্য বাল্যবিবাহের কুফল মা ও শিশু স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা করতে নিরন্তর ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি অফিসের টাইমের বাইরেও এসব সচেনতা বিষয়ে কাজ করেন। তার মতে, এ পর্যন্ত ২০১২ সাল থেকে ৫শ’ ৭৬টি স্কুল কলেজ মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতা বিষয়ক ক্লাশ নিয়ে সচেতনতার কাজ করে নজির সৃষ্টি করেছে। এ পর্যন্ত জেলায় একবার ও নিজ কর্মস্থল উপজেলায় প্রতিবছর শ্রেষ্ঠ কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার হিসেবে পুরস্কার পেয়েছে। সচেতনতা মূলক কাজ করতে গিয়ে গড়ে তোলেছেন মা, শিশু,শিক্ষার্থীসহ তার বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে নিবিড় সেতু বন্ধন।

রোকুনুজ্জামান রনজু বলেন, চাকরি আর আমার কর্মকে অনেক সম্মান করি। সে বোধ থেকে সচেতনতা মূলক কাজ করা। বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মা শিশু কিশোর কিশোরীদের সচেতনতা মূলক ক্লাস নিতে সে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। তার মতে, তার পরামর্শে কোন মা শিশু কিশোর কিশোরীসহ যে কোন মানুষ যদি উপকৃত হয়, সেটাই তার বড় প্রাপ্তি বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরেও সে কাজ করতে চায়। হাট বাজার সভা সেমিনারসহ নানা স্থানে সে প্রজেক্টরের মাধ্যমে সচিত্র প্রতিবেদন মূলক সচেতনতা বিষয়ক স্বাস্থ্য সচেতনতা করতে আগ্রহী।

গোলাবাড়ি ইউনিয়নের পরিষদের সদস্য মনিরুল ইসলাম তালুকদার জানান, তাদের ইউনিয়নে রোকুনুজ্জামান যোগদানের পর থেকে সেবার মান ও সচেতনতা বিষয়ক কার্যক্রম অনেক বেড়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার সচেতনতা বিষয়ক কার্যক্রমে সাড়া ফেলেছে এবং ইউনিয়নবাসী উপকৃত হচ্ছে।

বানুরগাছি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, তার বিদ্যালয়ে স্কুল প্রোগ্রাম করার ফলে শিক্ষক শিক্ষার্থী খুশি। উপকৃত হয়েছে শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে মেয়েরা বেশি। কিশোরীদের জন্য স্বাস্থ্য সম্মত সেনেটারি ন্যাপকিন ও খেলাধুলা সামগ্রী বিতরণ করে শিক্ষার্থীদের উৎসাহও করেছেন বলে তিনি জানান।

মধুপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উজ্জ্বল বৈরাগী জানান, সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার রোকনুজ্জামান একজন নিষ্ঠাবান, নিয়মানুবর্তী, কর্মঠ অফিসার। সে গোলাবাড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে যথারিত স্বাস্থ্য শিক্ষা, গর্ভবতী মা ও শিশু কল্যাণ, মায়ের সেবা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ সংক্রান্ত সেবা প্রদানের পাশাপাশি তিনি পরিবার কল্যাণ ও স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম ইউনিয়নের প্রায় প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। এই কার্যক্রমে তিনি অগ্রিম কর্মসূচি প্রদান করেন এবং তাদের কার্যালয়ের পাশাপাশি কর্মসূচিতে সহায়তা করেন উপজেলার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং স্কুল কলেজ এবং মাদ্রাসার শিক্ষক, অধ্যক্ষ প্রত্যকে। তার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের কার্যক্রম ও তার শিক্ষা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিদর্শন করেছি। সেখানে তিনি বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে অস্তর্ভুক্ত করে তার কার্যক্রম পরিচালনা করেন। সেখানে তিনি পরিবার কল্যাণ, বয়োঃসন্ধি, বাল্যবিবাহ, মাদকদ্রব্যের কুফল, কিশোর গ্যাংসহ সমাজের সামাজিক সমস্যাগুলো নিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকেন। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি উপজেলা লেভেলে প্রায় প্রতিবছরই শ্রেষ্ঠ কর্মীর নির্বাচিত হয়ে থাকেন এবং তিনি একবার টাঙ্গাইল জেলার শ্রেষ্ঠ কর্মীও নির্বাচিত হয়েছেন বলে তিনি জানান।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights