নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের মল্লিক মার্কেট মোড় থেকে চুরুঙ্গি বাজার পর্যন্ত ২.২৭০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিম্নমানের ইট ও রাবিশ বালু রাস্তার সাববেজে ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া মেকাডামেও নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় লোকজন।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ‘অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় মির্জাপুর উপজেলার পাঠানপাড়া ইউজেডআর-নাগরপাড়া বাজার রাস্তা ভায়া দেউলীপাড়া রাস্তার ২.২৭০ কিলোমিটারের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। পরে টেন্ডারের মাধ্যমে পাবনার বেড়া উপজেলার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এমএ এন্টারপ্রাইজ পাকাকরণের কাজটি পায়।
রাস্তাটির নির্মাণকাজের মূল্য দুই কোটি ১৮ লাখ ৯৮ হাজার ৪২১ টাকা। এর মধ্যে সেলবেজ বাবদ ৭৯ লাখ ১১ হাজার ৬০৪ টাকা কর্তন করা হবে।
৩ মিটার প্রশস্ত ও ২৫ মিলি কার্পেটিংয়ের এই রাস্তায় ১০ ইঞ্চি বালু ফিলিং, ৬ ইঞ্চি সাববেজ ও ৬ ইঞ্চি মেকাডাম করার কথা। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে রাবিশ বালু ও নিম্নমানের খোয়া দিয়ে সাববেজের কাজ করেছে। এ ছাড়া মেকাডামের কাজেও নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। গত বছরের ৫ এপ্রিল কাজটি শুরু হয়ে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে মেকাডাম শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এদিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে নিম্নমানের খোয়া সরিয়ে নিতে ১৩ জুন উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুর রহমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পত্র দিয়েছেন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এর পরও নিম্নমানের খোয়া রাস্তায় ব্যবহার করছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তায় সাববেজে নিম্নমানের খোয়া ও রাবিশ বালু দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মেকাডামেও নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তাটি নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় স্থানীয় লোকজন একাধিকবার প্রতিবাদ করলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তার তোয়াক্কা না করেই কাজ চলমান রাখে।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, ঠিকাদারের লোকজন ভালো মানের খোয়া না দিয়ে পোড়ামাটির মতো খোয়া ব্যবহার করে রাস্তা বানাচ্ছে। খোয়া হাত দিয়েই ভাঙা যায়। এলাকার লোকজন প্রতিবাদ করলেও তারা মানছে না। আমরা গ্রামের লোক। সরকারি অফিসের লোকজন কখন আসে, কখন যায় আমরা চিনি না।
মেসার্স এমএ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মান্নানের সঙ্গে মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয়ে এই কাজের বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি লাইন কেটে দেন।
ওই কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী মহিদুর রহমান বলেন, ‘নিম্নমানের ইট, খোয়া বা বালু ব্যবহারের কথা জানতে পেরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ১৩ জুন উপজেলা প্রকৌশলী আরিফুর রহমান পত্র দিয়েছেন। সাত কার্যদিবসের মধ্যে সেগুলো সেখান থেকে অপসারণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ অপসারণ না করে সেই মালপত্র রাস্তায় কেন ব্যবহার করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।