মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২৯ পূর্বাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

ঘাটাইলে অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৩৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মো. আব্দুল বাছেত আকন্দ। পেশায় শিক্ষক হলেও ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক এমপি আলহাজ আমানুর রহমান খান রানার আস্থাভাজন। সাবেক এমপি’র প্রভাব খাটিয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি ও এমন কোনো অপকর্ম নেই যেটা তিনি করেননি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর বেশ কিছুদিন গাঢাকা দিয়ে পালিয়ে বেড়ালেও ফের স্বরূপে ফিরে আসার পাঁয়তারা করছেন। অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সন্ধানপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বাছেত আকন্দ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় অর্ধকোটি টাকার মালিক হয়েছেন। দুর্নীতির এই টাকা দিয়ে তিনি বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি, কলা-আনারসের বাগান ও নামে-বেনামে প্রচুর সম্পদ গড়ে তুলেছেন। এ নিয়ে গত ১৯শে সেপ্টেম্বর সকালে অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।

এর আগে ওই প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা মিলে গত ১২ই সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আরও ২ জন শিক্ষকের কাছ থেকে নিয়োগের মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে অধ্যক্ষ নিজেই কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

শিক্ষার্থীরা জানায়, সরকার আমাদের উপবৃত্তি দিয়েছেন, আমরা সরকারি সুবিধা নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমাদের কাছ থেকেও অধ্যক্ষ বেতন আদায় করে ছাড়েন। আমরা অধ্যক্ষের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করছি।

ভুক্তভোগী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ আরও অনেকেই জানান অধ্যক্ষ আব্দুল বাছেত আকন্দ একজন অর্থলোভী  চতুর প্রকৃতির লোক। তিনি ২৮শে ডিসেম্বর ২০১০ সালে যোগদানের পর থেকেই নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে বীরদর্পে ১৪ বৎসর যাবৎ এই বিদ্যালয়ে চাকরি করে আসছেন।  ভুক্তভোগী মোমিনুল ইসলাম জানান, ২০১৪ সালে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন তিনি।  যোগদানের পরেই অধ্যক্ষ আমার নিকট ৪ লাখ টাকা দাবি করেন। বিভিন্নভাবে টাকার চাপ প্রয়োগ করলে আমি তাকে ৪ লাখ টাকা দিতে বাধ্য হই। এর কিছুদিন পর আরও ২ লাখ টাকা দিতে আমার ওপর আবার চাপ সৃষ্টি করেন, তখন আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেন। আমি স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দিয়ে অধ্যক্ষের নিকট ৪ লাখ টাকা ফেরত চাই। টাকা ফেরত দিতেও তিনি তালবাহানা করেন।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দু’টি পদে নিয়োগ হয়েছে। হাফিজুর রহমান অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার পদে ও  আব্দুল্লাহ আল নোমান কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ পেয়েছেন।

নিয়োগপ্রাপ্ত আব্দুল্লাহ আল নোমান জানান, আমার নিয়োগের ৬ মাস পরে অধ্যক্ষ আমার বেসরকারি বেতন আটকে ৩ লাখ টাকা আদায় করে নিয়েছেন। এ ছাড়াও অধ্যক্ষ ৩০০ টাকার সাদা স্ট্যাম্পে হাফিজুর এবং আমার নিকট থেকে মুচলেকা নিয়েছেন। বাংলা বিষয়ের শিক্ষক আব্দুল হালিম মিয়া ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, অধ্যক্ষ একজন দুর্নীতিবাজ। ওয়েবসাইট খোলার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং সরকারের এনটিসিআর শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন, সেখান থেকেও অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন বলে জানান তিনি। এমনকি যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে অধ্যক্ষ পরবর্তীতে চাপ প্রয়োগ করে তাদের নিকট থেকেও লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

এ বিষয়ে সন্ধানপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বাছেত আকন্দ জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা সম্পূর্ণ  মিথ্যা এবং বানোয়াট। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরতিজা হাসান জানান, বিষয়টি নিয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights