নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বিএনপি’র দুই নেতার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ফেরদৌস শেখ নামে এক প্রতিবন্ধীর ৯ শতাংশ জমি অবধৈভাবে দখল নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে প্রতিকার চেয়ে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সেনাবাহিনী ক্যাম্প ও ভূঞাপুর প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। অভিযুক্ত দখলকারী বিএনপি’র দুই নেতা হলেন- উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ জামিল মিন্টু ও ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন। তাদের সহযোগী দখলকারীরা হলেন- স্থানীয় বিএনপি নেতা শাহীন মিয়া, ছালাম মিয়া, সোহাগ, বেলাল হোসেন ও আরিফ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের গোবিন্দাসী মোজার বি.আর.এস ৩২২ নং দাগের ৯ শতাংশ জমি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল আদালত টাঙ্গাইলের ২৪৪৫/২০১৬ নং মামলার আদেশের প্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী (ভূমি) কমিশনার ২০১৯-২০ এর ২০২৪ সালের গত (৮ জানুয়ারি) আদেশ মূলে প্রতিবন্ধী ফেরদৌসের পিতা জমির উদ্দিন নামে ১৬৪ নং একটি খতিয়ান খোলা হয়। পরবর্তীতে গত (২৩ জুন) ১৬৫১ নং দলিল মূলে ফেরদৌসসহ তার আরও ২ ভাই শফিক ও ইদ্রিস আলী তাদের পিতা জমির উদ্দিন থেকে জমি প্রাপ্ত হন। যা তাদের পিতা জমির উদ্দিন বিগত ৫০ বছর ধরে ভোগ দখল করে আসছিল। কিন্তু পরিবারটি দরিদ্র থাকায় ভয়ভীতি দেখিয়ে গোবিন্দাসী ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ জামিল মিন্টু ও ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে তাদের সহযোগী শাহীন মিয়া, ছালাম মিয়া, সোহাগ, বেলাল হোসেন ও আরিফ জোরপূর্বক দখল করেছে।
এর আগে বিগত ২০১৮ সালের (৩ মে) জমির বিরোধ চলাসময়ে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুানাল টাঙ্গাইলের যুগ্ম জেলা জজ বিচারক সিকান্দার জুলকার নাইন ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধি ফেরদৌস শেখকে ডিগ্রি দেন এবং জমিটির মোকদ্দমাটি নিস্পত্তি করে দেয়। এরপর আরও দুইবার জমির ডিগ্রি পান ফেরদৌস শেখ। কিন্তু প্রভাবশালী বিবাদী বিএনপি নেতা মিন্টু ও আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ তার সহযোগীরা ওই প্রতিবন্ধির জমি দখল করে রেখেছেন।
ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধি ফেরদৌস বলেন-আমাদের পৈত্তিক ৯ শতাংশ সম্পত্তি বিএনপি নেতা মিন্টু ও আব্দুল্লাহ আলম মামুনসহ অন্যান্য সহযোগীরা অবৈধভাবে দখলে নিয়েছে। জমিতে গেলে তারা তারা বিভিন্ন সময় হামলা, নির্যাতন ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ নিয়ে বহুবার ইউপি চেয়ারম্যান ও এলাকার মাতাব্বরদের কাছে বিচার প্রার্থনা করলে তারা পাত্তা দেয়নি। সম্প্রতি সরকার পতনের পর জমিতে যাওয়ার চেষ্টা করলে মিন্টু, আব্দুল্লাহসহ অন্য সহযোগীরা আমাদের ওপর হামলা ও মারধর করে। তাই প্রতিকার চেয়ে বাধ্য হয়ে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছি।
এ বিষয়ে গোবিন্দাসী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মিন্টু মিয়া বলেন, ওই জমি ৮ লাখ টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে। জমি সকল কাগজপত্র আছে আমাদের। তাছাড়া ফেরদৌসদের অভিযোগ মিথ্যা। ৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমরা কারো জমি দখল দেয়নি। জমিটির আমাদের কওলাকৃত।
এ ব্যাপারে ভূঞাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিমা বিনতে আখতার বলেন, অভিযোগের কপি পেয়েছি, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।
বিগত ২০২২ সালে (১০ জুলাই) জমিটির খতিয়ান প্রস্তাবিত করেন গোবিন্দাসী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন, (১৬ জুলাই) খতিয়ানের আবেদনটি যাচাই-বাচাই করেন উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার রফিকুল ইসলাম এবং সর্বশেষ অনুমোদন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাহিমা বিনতে আখতার।