নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের সখীপুরে মাদরাসাছাত্রীকে বেত্রাঘাত করায় মাওলানা আবদুল আজিজ (৩৫) নামে এক শিক্ষকের দাঁড়ি ছিড়ে তাকে মারধোরের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সখীপুরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।
রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার কচুয়া পশ্চিমপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মাওলানা আবদুল আজিজ কচুয়া হাফেজিয়া ফোরকানিয়া মাদরাসার শিক্ষক। তিনি ওই মাদরাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী আফরীনকে (১১) দুষ্টুমি করায় বেত্রাঘাত করেন। পরে দুপুরে শিক্ষক মাওলানা আবদুল আজিজ বাইসাইকেল নিয়ে মাদরাসায় যাওয়ার পথে ছাত্রীর চাচা রাসেল, দাদা তারা মিয়া, হবি মিয়া, রফিক মিয়া নামে চার ব্যক্তি ওই শিক্ষকের সাইকেলের গতিরোধ করে তাকে এলোপাতাড়ি মারধোর শুরু করেন। এ সময় চাচা রাসেল ওই শিক্ষকের দাড়ি ধরে টেনে ছিঁড়ে ফেলেন।
শিক্ষক মাওলানা আবদুল আজিজ জানান, মাদরাসায় ক্লাস ছুটি হওয়ার আগে আমি শিক্ষার্থীদেরকে বলে দেই তারা যেন ছুটি হওয়ার পরে কোথাও দাঁড়িয়ে না থেকে সরাসরি নিজেদের বাড়িতে চলে যায়। ছাত্রী আফরীনকেও বলে দেই। কিন্তু সে গত কয়েকদিন ধরে ছুটি হলে অন্য ক্লাসরুমের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। এতে ওই ক্লাসের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সমস্যা হয়। এ কারণে আজকে তাকে ডেকে সতর্ক করে দিয়ে দুটি বেত্রাঘাত করি। এটাই আমার অপরাধ।
শিক্ষক আবদুল আজিজ আরো বলেন, আমার একজন শিক্ষার্থীকে বেত্রাঘাত করা যদি আমার অপরাধ হয়ে থাকে, এর বিচার করবে মাদরাসার কমিটির লোকজন। তারা আমার দাড়ি ছিড়ল কেন? তারা তো আমার গায়ে হাত দিতে পারে না। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
ওই মাদরাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ আনোয়ার জানান, ছাত্রীর মা তার মেয়েকে মারধরের বিষয়ে আমার কাছে এবং কমিটির সদস্যদের কাছে অভিযোগ দিয়েছিল। আমরা জানিয়েছি বিষয়টি তদন্ত করে ওই শিক্ষক অপরাধী হলে তার বিচার হবে। কিন্তু তারা আমাদেরকে সেই সময় দেননি। তারা নিজেরাই শিক্ষককে সঙ্ঘবদ্ধভাবে মারধর করেছেন। তার দাড়ি ছিঁড়েছেন। এটি খুবই দুঃখজনক কাজ হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক আনোয়ার আরো জানান, ওই শিক্ষককে মারধর করায় অন্য শিক্ষকরা ক্লাস করাচ্ছেন না। তারা আগে ঘটনাটির সুষ্ঠু ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছেন। মাদরাসার কমিটির সদস্যরা এ বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
সখীপুর থানার উপ-পরিদর্শক সুকান্ত রায় জানান, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে দায়িত্ব দিয়েছি বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার জন্য।
উপজেলার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুন মিয়া জানান, ঘটনাটি অবশ্যই অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা অচিরেই মাদরাসার কমিটির সদস্যদের নিয়ে বসে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক একটি বিচার করব।