মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

মির্জাপুরে সড়কে কাদা চার ইউনিয়নের মানুষ দুর্ভোগে

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১১১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার অবহেলিত পাহাড়ি অঞ্চলের চার ইউনিয়নের রাস্তাঘাটের খুবই বেহাল অবস্থা। এই চার ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তাঘাট কাঁচা এবং কর্দমাক্ত হওয়ায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে দুই লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও পাকা রাস্তার অভাবে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী। বুধবার (২৪ অক্টোবর) কয়েকটি এলাকায় সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে রাস্তাঘাটের বেহাল চিত্র।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, অবহেলিত পাহাড়ি এলাকাগুলো হচ্ছে: মির্জাপুর উপজেলার লতিফপুর, তরফপুর, আজগানা এবং বাঁশতৈল ইউনিয়ন। লতিফপুর ইউনিয়ন ১২টি, তরফপুর ইউনিয়নে ১৫টি, আজগানা ইউনিয়নে ১৭টি এবং বাঁশতৈল ইউনিয়নে ২০টি রাস্তার খুবই করুন অবস্থা। এই চার ইউনিয়ন মূলত পাহাড়ি অঞ্চল এবং জেলা শহর টাঙ্গাইল ও উপজেলা সদর মির্জাপুর থেকে দুর্গম এলাকা হওয়ায় রাস্তাঘাটের উন্নয়নের তেমন ছোঁয়া পড়েনি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

আজগানা ইউনিয়নের তেলিনা গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আনোয়ার হোসেন (৪৫) ও আজগানা গ্রামের বাসিন্দা ব্যবসায়ী ছানোয়ার হোসেন (৪৪) অভিযোগ করেন, আজগানা ইউনিয়ন বৃহৎ পাহাড়ি এলাকা। প্রতিটি গ্রামের মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। রাস্তাঘাট পাকা না হওয়ায় ভাল যোগাযোগের অভাবে তারা ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

জেলা শহর টাঙ্গাইল এবং উপজেলা সদর মির্জাপুরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হলে তাদের গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার উপর দিয়ে ৩০-৪০ মাইল ঘুরে যোগাযোগ করতে হয়। এতে করে এক দিকে যেমন সময় অপচয় হচ্ছে তেমনি অর্থের দিক দিয়েও তাদের অনেক টাকা ব্যয় হচ্ছে। তাদের অভিযোগ স্থানীয় নির্বাচন এলে চেয়ারম্যান-মেম্বার প্রার্থী, উপজেলা পরিষদের নির্বাচন এলে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচন এলে এমপি প্রার্থীরা এলাকার উন্নয়ন ও রাস্তাঘাটের পাকা করনের জন্য ফুলঝুরি নানা আশ্বাস দিয়ে তাদের ভোটে নির্বাচিত হন। ভোটে বিজয়ী হওয়ার পর তারা এলাকায় তেমন আসেন না এবং রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করেন না। এভাবেই কেটে গেছে ৫৪ বছর। কিন্তু তাদের যাতায়াতের জন্য রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়নি। ভাগ্যেরও কোন পরিবর্তন হয়নি।

বাঁশতৈল ইউনিয়নের অভিরামপুর গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ পারভেজ (৩৫) পেকুয়া গ্রামের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক মোতালেব হোসেন অভিযোগ করেন, মির্জাপুর উপজেলার মধ্যে বাঁশতৈল ইউনিয়নবাসী সবচেয়ে বেশী অবহেলিত। এই ইউনিয়নে ৬-৭ টি গ্রামে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী উপজাতির বসবাস। যুগ যুগ ধরে তানা নানা ভাবে অবহেলিত। বিশেষ করে রাস্তাঘাটের খুবই বেহাল ও করুন অবস্থা।

পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই প্রতিটি রাস্তার উপর জমে হাঁটু পানি। যানবাহন চলাচল তো দুরের কথা, পায়ে হেটে চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে পরে। রাস্তার উপর বাঁশের চালি ফেলে পায়ে হাটার চেষ্টা করেন। তাদের অভিযোগ সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাস্তাঘাট পাকা করনের জন্য একের পর এক আশ্বাস দিয়ে যান। তাদের সে প্রতিশ্রুতিগুলো আলোর মুখ দেখছে না। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের শেষ নেই। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে নেতা তাদের এলাকার রাস্তা পাকা করে দেবেন তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন বলে জানিয়েছেন।

এদিকে একই অবস্থা লতিফপুর ইউনিয়ন এবং তরফপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তাঘাট বলে ঐ এলাকার ভুক্তভোগী অন্তত ২০ জন এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।

বাঁশতৈল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হেলাল দেওয়ান এবং লতিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী হোসেন রনি বলেন, তাদের এলাকার রাস্তাঘাটগুলো অধিকাংশ কাঁচা ও কর্দমাক্ত হওয়ায় চলাচল কষ্টসাধ্য। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাঁচা রাস্তা উন্নয়নের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মির্জাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল সাজ রাজন বলেন, প্রতিটি এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ও কাঁচা রাস্তার তালিকা করে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অনেক রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে এবং যে রাস্তাগুলোর কাজ এখনো শুরু হয়নি সেগুলোর অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে এগুলোর কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights