নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ৫ আগস্টে বিজয় মিছিলে হামলা মামলার প্রধান আসামি সাবেক সংসদ সদস্যের পিএস শান্ত ইসলাম গ্রেপ্তারের দিনই জামিন পেয়েছেন। এছাড়াও শান্তর বিরুদ্ধে আগে থানায় বিভিন্ন অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুলিশ আসামিকে আটকের পর নির্দিষ্ট মামলার বিবরণ উল্লেখ করে আদালতে পাঠিয়েছিল। জামিন হওয়ার বিষয়টি সম্পুর্ণ আদালতের বিষয়।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কালিহাতী পৌরসভার সিলিমপুর মধ্যপাড়া এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খান ওরফে সোহেল হাজারীর পিএস শান্ত ইসলামকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।
এরপর তাকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আনন্দ মিছিলে হামলা মামলার এক নম্বর আসামি হিসেবে পুলিশ শান্তকে আটক করে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠায়। আদালত বন্ধ থাকলেও এদিন বিকেলেই সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল ইসলামের আদালতে তোলার পর তার জামিন মঞ্জুর করা হয়।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাকালীন সময়ে সাবেক এমপি সোহলে হাজারীর হয়ে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন শান্ত। আওয়ামী লীগের কোনো পদ না থাকলেও ক্যাডার হিসেবে পরিচিত ছিল শান্ত। তার বিরুদ্ধে কালিহাতী উপজেলায় কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব, বাসস্ট্যান্ডে এলাকায় ছিনতাই, মাদক ব্যবসার ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। এলাকায় সে ভাড়াটে সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত ছিল। বিভিন্ন ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কয়েকদিন মামলা রয়েছে।
এরআগে গত ১৮ আগস্ট শান্ত ইসলামকে প্রধান আসামি করে কালিহাতী থানায় মামলা দায়ের করে হামলায় আহত শিক্ষার্থী মেহেরাব ইসলাম তারেকের বাবা মমিনুল ইসলাম।
সম্প্রতি এ মামলার আরো কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হলেও তাদের জামিন বাতিল হয়েছিল। তবে মামলার প্রধান আসামি ও কয়েকটি মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও তার জামিন হওয়ার ঘটনায় হতবাক মামলার বাদী।
মামলার বাদী মমিনুল ইসলাম জানান, আসামি আটক হওয়া বা জামিনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে জানতে পারলাম সে আটক হয়েছে। আইনের বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।
টাঙ্গাইল কোর্টের উপ-পরিদর্শক (এসআই) খলিলুর রহমান বলেন, থানা পুলিশ আসামি শান্তকে আদালতে পাঠিয়েছে। বন্ধের দিন একজন বিচারক থাকেন। পরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। আমি ও রাষ্ট্রপক্ষ থেকেও আদালতে তার জামিনের বিরোধীতা করেছিলাম। জামিন দেওয়ার বিষয়টি আদালতের বিচারকের।
কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ফারুক বলেন, শান্তকে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আনন্দ মিছিলে হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। এ মামলায় তিনি প্রধান আসামি ছিলেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে কয়েক মামলা রয়েছে সেগুলোতে তিনি জামিনে আছেন। জামিনের বিষয়টি আদালতের বিষয়।
তিনি আরও বলেন, একই মামলায় আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু জানামতে সেদিনই তাদের জামিন হয়নি।