নিজস্ব প্রতিনিধিঃ অসময়ে ভাঙন শুরু হয়েছে যমুনা নদীতে। যমুনার তীব্র ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদীপাড়ের বহু মানুষ। গত মঙ্গলবার টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চরপৌলী গ্রামের দশখাদা এলাকায় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বেশ কয়েকটি ঘর-বাড়ি।
বর্তমানে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে এই এলাকার দেড় শতাধিক পরিবার। নদীতীর রক্ষায় নিম্নমানের জিও ব্যাগ ও প্রতিনিয়ত কয়েক শ’ বালুবাহী বাল্কহেড নদীর তীর ঘেষে চলাচল করায় অসময়ে ভাঙন শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয়রা জানান, গত মঙ্গলবার সকাল থেকে যমুনার দশখাদা এলাকায় হঠাৎ করে তীব্র ভাঙন শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে বেশ কয়েকটি ঘর-বাড়ি যমুনার পেটে চলে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দ্রুত ভাঙনরোধে পদক্ষেপ না নিলে কয়েক দিনের মধ্যে চরপৌলী গ্রামের দেড় শতাধিক পরিবারের বাসস্থান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে ভাঙন আতঙ্কে অনেকেই তাদের ঘর-বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। শুষ্ক মৌসুমের এই ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তারা।
স্থানীয় সাইফুল ইসলাম ও আব্দুল খালেক জানান, তারা পেশায় এখন দিনমজুর। এক সময় জমি-জমা, অর্থ-সম্পদ সবই ছিল। রাক্ষুসে যমুনা সব কেড়ে নিয়েছে। এ পর্যন্ত তারা চারবার যমুনার ভাঙনের শিকার হয়েছেন। মঙ্গলবারের ভাঙনে তারা একেবারে পথে বসেছেন। সরকারি সহযোগিতা না পেলে তারা আরো বিপাকে পড়বেন বলে জানান।
ক্ষতিগ্রস্ত ইব্রাহিম খাঁ জানান, কিছু দিন আগে এই এলাকার আড়াই সহস্রাধিক ঘর-বাড়ি নদীতে চলে গেছে। গত মঙ্গলবারও ১৫টি পরিবার তাদের ঘর-বাড়ি হারিয়েছেন। নদীতীর রক্ষায় যেসব ঠিকাদার নিম্নমানের জিও ব্যাগ ফেলেছেন তাদের শাস্তিসহ ক্ষতিপূরণ দাবি করেন স্থানীয়রা।
সদর উপজেলার কাকুয়া ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার হঠাৎ করে যমুনাতীরে ভাঙন শুরু হয়। এতে ১৫টি পরিবার ঘর-বাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এই ভাঙনে সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা না পেলে তাদের খোলা আকাশের নিচে অথবা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে হবে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মতিউর রহমান জানান, যমুনা নদী সবসময়ই আগ্রাসী, এটা যে কোনো সময় রুদ্রমূর্তি ধারণ করতে পারে। ভাঙনের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানা হয়েছে। ভাঙনরোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।