নিজস্ব প্রতিনিধিঃ অতিরিক্ত ভর্তি ফি ও চাঁদা আদায়ের ক্ষোভে টাঙ্গাইল জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন অফিসে আগুন দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
গতকাল মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইল পৌর শহরের পার্ক বাজার সংলগ্ন শ্রমিক অফিসে এই ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় অফিসে থাকা তিনটি মোটরসাইকেল, আসবাবপত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এই হামলা ও অগ্নিসংযোগে তিন শ্রমিক নেতা আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন- জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সহসভাপতি আব্দুস সামাদ, সাবেক মেম্বার সালাম ও রুপচান।
শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানান, পূর্বে ভর্তি ফি ১০০০ হাজার টাকা ছিল, সেটি বৃদ্ধি করে ১৫৬০ টাকা করা হয়। এ ছাড়া ১০ টাকা মাসিক চাঁদা করাসহ ২০০ টাকা জরিমানা নিয়ে ভর্তি না হওয়া শ্রমিককে পাঁচ থেকে সাতদিনের সময় দিতেন সমিতির নেতৃবৃন্দ। যা নিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
পরে গতকাল মঙ্গলবার সকালে সাধারণ শ্রমিকরা মাইক মেরে চাঁদা ও ভর্তি ফি না দেওয়ার জন্য মাইকিং করতে থাকেন। এ সময় নেতৃবৃন্দ মাইকম্যানকে আটক ও মারধর করে ছেড়ে দেন। মাইকম্যানের কাছে মারধরের তথ্য জানতে পেরে সাধারণ শ্রমিকরা অফিস কার্যালয়ে হামলা, নেতৃবৃন্দকে মারধর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন রিকশা শ্রমিক জানান, নেতৃবৃন্দ চাঁদা ও ভর্তি ফি নিলেও আমাদের কোনো কাজে লাগে না।
নামমাত্র আহ্বায়ক কমিটি করে চাঁদার টাকা লুটপাট করছে। শ্রমিকদের শুধু মৃত্যু বোনাস, বিবাহ ভাতা আর নামমাত্র চিকিৎসা ভাতা দেওয়া হয়। সমিতিতে মোট কত টাকা চাঁদা আর ভর্তি ফি জমা আছে সেটিও আমরা জানি না। জানতে চাইলে নেতৃবৃন্দ দুর্ব্যবহার করে। এ সব কারণে ক্ষুব্ধ শ্রমিক এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
সমিতির সাবেক সহসভাপতি আহত আব্দুস সামাদ বলেন, ‘কার্যালয়ে আমাকে বেঁধে রেখে অগ্নিসংযোগ ঘটায়। আগুন বাড়তে থাকায় আমি প্রায় আধা ঘণ্টা পরে বাঁধন খুলে বের হই। আগুনে আমার শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। আমি এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান সদস্য সিহাব বলেন, ‘চাঁদা ও ভর্তি ফি দেবে না বলে মাইক মারছিল সাধারণ শ্রমিকরা। এ সময় তাদের মাইকটি আটক করা হয়। এ ক্ষোভে শ্রমিকরা নেতৃবৃন্দকে মারধর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে।’
টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক এস এম হুমায়ুন কাণায়েল জানান, আধা ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছে। কার্যালয়ে থাকা তিনটি মোটরসাইকেলসহ কিছু আসবাবপত্র এবং কাগজপত্র পুড়ে গেছে। এ সময় অগ্নিদগ্ধ একজনকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
টাঙ্গাইল সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ভিক্টর ব্যানার্জি জানান, ঘটনাস্থল থেকে অগ্নিদগ্ধ একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।