নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সপ্তাহজুড়ে সংঘবদ্ধ চুরির ঘটনায় গ্রামীণ মানুষের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে গোপালপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে। কৌশলে খাবারের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে একাধিক বাড়িতে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চুরির অভিযোগ উঠেছে। খামার শিমলা গ্রামের মৃত মোস্তফা কামালের মেয়ের জামাই শেখ রশিদ জানান, ৫ই ডিসেম্বর রাতে শ্বশুরবাড়ির খাবারে কিছু মেশানো ছিলো ধারণা করা হচ্ছে। সেদিন রাতে খাবার না খেয়ে সবাই ঘুমিয়ে গেলেও, পরেরদিন সকালে সেই খাবার খেয়ে কাজের লোকসহ ৪ জন অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরমধ্যে আশংকাজনক অবস্থায় ২ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে ভর্তি করা হয়। কিন্তু গতকাল রাতে ঘরের দরজা ও আলমারির তালা ভেঙে নগদ দেড় লাখ টাকা, পৌনে ৩ ভরি স্বর্ণালংকার, ব্যান্ডের শাড়ি ও থ্রিপিস এবং একটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে। এব্যাপারে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
খরুরিয়া গ্রামের আকবর হোসেন জানান, বুধবার রাত দেড়টায় শ্যালক রমজানের ফোন পেয়ে ঘুম থেকে উঠে দেখি ঘরের দরজা ও আলমারি ভাঙ্গা। ঘরের থাকা ছেলের সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা এবং ছেলের বিয়ের জন্য রাখা ২ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। ফোনে শ্যালক রমজান আলী জানায়, কিছুক্ষণ আগে তার দোকানের গ্রিল কেটে চুরির চেষ্টা হয়েছিল। এছাড়াও শনিবার সকালের খাবার পর একই গ্রামে বসবাস করা শ্যালকের পুরো পরিবার অসুস্থ হয়ে পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে লবণের মধ্যে কিছু মিশিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
খরুরিয়া গ্রামের মানবসেবা সংস্থার দপ্তর সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, বুধবার বিকালে খাবার খেয়ে খামার শিমলা গ্রামের গোরস্থানপাড় সংলগ্ন মো. খালেক হোসেনের পরিবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাতে দরজা ভেঙে ১০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। একই রাতে খামার শিমলা গ্রামের নুরুল ইসলামের ব্যাটারী চালিত অটোরিকশা চার্জে থাকা অবস্থায় নিয়ে গেছে। শনিবার মানবসেবা সংস্থার উদ্যোগে মিটিং এ, প্রতিরাতে ১০ জন করে গ্রাম পাহারা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে চরচতিলা ফারাজিপাড়া গ্রামের দরিদ্র বাদশা মিয়ার ব্যাটারি চালিত অটো ভ্যান, শুক্রবার দিবাগত রাতে আভুঙ্গী গ্রামের নজরুল ইসলামের ব্যাটারি চালিত ভ্যান চুরি হয়ে গেছে, ৭দিন আগে একই গ্রামের আবুল কালাম এর ব্যাটারি চালিত ভ্যান চোরে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও গোপালপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি অটল শরিয়ত উল্লাহ’র বড়ামা গ্রামের খালি বাড়িতে তালাবদ্ধ ঘরে গ্রিল কেটে ঘরে আসবাবপত্র ভেঙ্গে চুরির চেষ্টা হয়।
ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গোপালপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, বিগত মাসে অন্তত ১২/১৩টির বেশি গ্রাহকের ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। ট্রান্সফরমার চুরি হলে এফআইআর করা হয়। এতে গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আমাদের ভোগান্তি হয়। চুরি রোধে গ্রাহকদের সচেতন থাকতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে গোপালপুর থানার ওসি (তদন্ত) মামুন ভুঁইয়া বলেন, সবাইতো অভিযোগ দেয় না, কয়টি চুরির অভিযোগ আছে দেখতে হবে। রাতে টহল বাড়ানো হয়েছে, গতরাতে আমি খরুরিয়ায় গিয়েছিলাম, গ্রামবাসীর সাথে কথাবার্তা বলেছি রাত ২টা পর্যন্ত ছিলাম।