মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

রেলসেতু পার হতে সময় লেগেছে ৩ মিনিট

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ যমুনা নদীর ওপর নির্মিত ৪.৮ কিলোমিটার রেল সেতু ১২০ কিলোমিটার গতিতে পার হয়েছে পর্যবেক্ষণ ট্রেন। এতে সময় লেগেছে প্রায় তিন মিনিট।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর পৌঁনে ২টার দিকে বাংলাদেশের রেলওয়ের গভর্মেন্টের ইনস্পেক্টর, সেতুর প্রকল্প পরিচালক ও প্রজেক্ট ম্যানেজারসহ দেশি-বিদেশি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সেতুতে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচলের চূড়ান্ত পর্যবেক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।

গভর্মেন্ট ইন্সপেক্টর অব বাংলাদেশের উপস্থিততে এ পর্যবেক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। সেতুটির চূড়ান্ত পর্যবেক্ষণে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। দ্রুততম সময়ে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচলের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন তারা।

প্রকল্প সূত্র জানায়, জাপান-বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের তত্ত্বাবধানে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম রেলওয়ে সেতুর অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ শেষে চূড়ান্ত পর্যবেক্ষণমূলক ট্রেন চলাচল সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে দেশের বৃহত্তর যমুনা রেল সেতুতে রোববার (৫ জানুয়ারি) পূর্ণগতিতে ট্রায়াল ট্রেনের (পরীক্ষামূলক) টেস্ট রান আপ ও ডাউন লাইনে চলাচল সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এ সেতু।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, সোমবার দুপুরে পৌনে ২টার দিকে চারটি কোচ ও একটি ইঞ্জিন নিয়ে টাঙ্গাইলের ভুঞাপুর অংশ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে সেতুতে ট্রেন চালানো হয়। এসময় ট্রেনের গতি এবং সেতুটির কম্পন পর্যবেক্ষণ করেন বাংলাদেশ রেলওয়ে গভর্মেন্ট ইন্সপেক্টর ফরিদ আহমেদ, প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান ও জাপানের প্রকল্প পরিচালক ম্যাকহ্যাভিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। পরে তারা ট্রেন থেকে নেমে হেঁটে সেতুটি পর্যবেক্ষণ করেন।

এর আগে গত রোববার সকালে প্রথম পর্যায়ে ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিতে সেতুর দুপাশ থেকে দুটি ট্রেন পারাপারের পর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরপর পর্যায়ক্রমে ১২০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করে।

যমুনা রেলওয়ে সেতুর চিফ সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. মাইনুল ইসলাম জানান, পরীক্ষামূলকভাবে পূর্ণগতিতে ট্রেন চলছে। সোমবার দুপুর পৌনে ২টায় ভুঞাপুর অংশ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হয়। এতে দেখা গেছে, একটা ৪৭ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডে ট্রেনটি পশ্চিম পাড়ের সেতুর শেষ অংশ অতিক্রম করে। এটিই ছিল সর্বশেষ পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল। এখন পুরো সেতু পর্যবেক্ষণ করা হবে, কোথাও কোনো ত্রুটি আছে কি না। এরপর উদ্বোধনের জন্য পুরোপুরি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে সেতুটি।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হলে উভয়প্রান্তের স্টেশনে রেল ক্রসিংয়ের সময় বাঁচানোর পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি আরও বাড়বে।

যমুনা রেল সেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান জানান, যতগুলো প্যারামিটার দেখানো হয়েছে, সবগুলো সন্তোষজনক। এ মুহূর্তে নন ইন্টারলক কালার লাইট সিস্টেমের মাধ্যমে এ সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলের জন্য উপস্থাপন করা হয়েছে। অনুমোদন পেলেই আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হবে।

১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত যমুনা সেতু চালু হওয়ার পরই ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাঁটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ৩৮টি ট্রেন ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার গতিতে সেতু পারাপার হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা নদীর ওপর উজানে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই বছর ২৯ নভেম্বর রেল সেতুটি নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এরপর ২০২১ সালের মার্চে রেল সেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।

প্রথমে প্রকল্পটির নির্মাণ ব্যয় নয় হাজার ৭৩৪ কোটি সাত লাখ টাকা নির্ধারিত হলেও পরে তা ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে ২৭ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থায়ন এসেছে দেশি উৎস থেকে এবং ৭২ দশমিক ৪০ শতাংশ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। দেশের বৃহত্তর এ রেল সেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই জয়েন্টভেঞ্চার।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights