নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে তিন ফসলি জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৭টি ইটভাটার চিমনি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এই অভিযান পরিচালনা করেন পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা সদর দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সিনিয়র সহকারী সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন। বিচারকের নির্দেশে দুটি ভেকু মেশিন দিয়ে ভাটাগুলোর চিমনি গুড়িয়ে দেওয়া হয়।
কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা সালেহা সুমি অবৈধ ৬টি ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন। সেসময় প্রত্যেক ভাটার একাংশ ভেকু মেশিন দিয়ে ভেঙে ফেলা, পানি দিয়ে কাঁচা ইট নষ্ট এবং ভাটা মালিকদের কাছ থেকে ২৪ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক।
এ ছাড়া ভাটাগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা সালেহা সুমি।
বিচারকের নির্দেশ অমান্য করে মালিকরা পুনরায় ওইসব ভাটায় ইট তৈরি ও পোড়ানোর কাজ চলমান রাখেন।
গুড়িয়ে দেওয়া ইটভাটাগুলো হলো- উপজেলার বহুরিয়া গ্রামে আরবিসি ব্রিকস, এমএসবি ব্রিকস, বাটা ব্রিকস, এইচইউবি ব্রিকস, গোড়াই ইউনিয়নের মীর দেওহাটা গ্রামে সনি ব্রিকস, বাইমাইল গ্রামে বিএন্ডবি ব্রিকস ও পৌর এলাকার বাইমহাটী গ্রামে রান ব্রিকস। প্রত্যেক ইটভাটায় কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ একর তিন ফসলি জমি ব্যবহার করা হয়েছে।
এ সময় উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক মো. মাসুদুর রহমান, পরিবেশ অধিদপ্তর টাঙ্গাইল জেলার উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক, সহকারী পরিচালক সজীব কুমার ঘোষ, পরিদর্শক বিপ্লব কুমার সুত্রধর, গ্রাম পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, র্যাব, পুলিশ ও সেনা সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।বিপুল সংখ্যক উৎসুক জনতাও ভিড় জমান।
টাঙ্গাইল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, ‘মির্জাপুরে অবৈধভাবে গড়ে উঠা ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ইনফোর্সমেন্ট শাখায় সুপারিশ পাঠানো হয়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে ৭টি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে চিমনি গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা সদর দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সিনিয়র সহকারী সচিব আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সারা দেশেই অবৈধ ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। মির্জাপুরের অবৈধ ইটভাটার বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
সংবাদের ভিত্তিতে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার নির্দেশে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।’
ভাটা মালিকদের সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ ট্রেড লাইসেন্স এবং উপজেলা কৃষি অফিস ছাড়পত্র দিয়ে থাকেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি অবহিত করবেন। তাছাড়া এ অভিযান চলমান থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।