মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩০ পূর্বাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

সারাদেশে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে বাসাইলের বিলপাড়ার মিষ্টির

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাঙালির যেকোনো শুভকাজ বা সংবাদে মিষ্টির ব্যাবহার অনেক পুরনো ঐতিহ্য। বিয়ে-শাদী, পরীক্ষা পাসের খবর, সন্তান জন্মগ্রহণ, কোনো কিছুর শুভ সূচনা বা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, অতিথি আপ্যায়ন ও মিলাদ মাহফিলের মতো অনুষ্ঠানের খাদ্য তালিকার অগ্রভাগে থাকে মিষ্টি। টাঙ্গাইলের প্রচলিত চমচমের চেয়ে আলাদা স্বাদ হওয়ায়, প্রতিদিন অনেকেই এ মিষ্টির স্বাদ নিতে ছুটে আসছেন বিলপাড়ায়।

সারা দেশে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে টাঙ্গাইলের ‘বিলপাড়ার মিষ্টি’। স্থানীয়রা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে মানুষ আসছেন এ মিষ্টির স্বাদ নিতে। অনেকেই বিদেশে অবস্থানরত প্রিয়জনের কাছে পাঠাচ্ছেন এ মিষ্টি। মিষ্টির কারণে বাসাইলের এ অঞ্চলের পরিচিত বেড়েছে দেশে জুড়ে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের পূর্ব পাশে একটি দু’চালা টিনের ঘরেই তৈরি হয় নেওয়াজ আলীর এই সুস্বাদু মিষ্টি। দোকানটিতে নেই কোন চাকচিক্য কিংবা উজ্জ্বলতা। কিন্তু তার জন্য ক্রেতাদের আনাগোনা থেমে নেই মোটেও। প্রতিদিন বহুলোক মিষ্টি খাচ্ছেন এবং সাথে করে নিয়েও যাচ্ছেন। টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচমের পর সারা দেশে পরিচিতি লাভ করেছে এ মিষ্টি। বিদেশে অবস্থানরত অনেকেই এ মিষ্টি নিয়ে যাচ্ছেন। যার ফলে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়ছে মিষ্টির সুনাম। কারিগরসহ সংশ্লিষ্ট্যরা নিপুন হাতে তৈরি করছেন মিষ্টি। প্রতি কেজি মিষ্টি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকায়।

জানা যায়,খাঁটি দুধ দিয়ে ছানা বানানোর কারণে মিষ্টির স্বাদ ও গুন অতুলনীয়। এছাড়াও চিনি, পানি, এলাচ, দারুচিনিসহ বেশ কয়েক ধরণের মসলা দিয়ে তৈরি করা হয় মিষ্টি। দেখতে অনেকটা লম্বাটে আকৃতি আর শরীরে মাওয়া জড়ানো। হালকা আঁচে পোড় খাওয়া এই মিষ্টির রঙ বাদামি। বাহিরটা একটু শক্ত হলেও এর ভেতরটা কিন্তু একদম রসে ভরপুর। প্রথমে দুধ থেকে ছানা ছাড়ানো হয়। পরে টেবিলে নিয়ে হাতের সাহায্যে সামান্য ময়দার সাথে ছানা মিশ্রন করা হয়। এরপর হাতের তালুর জাদুতে লম্বাটে আকার করে তৈরি করা হয় কাচা মিষ্টি। প্রস্ততকৃত মিষ্টিগুলো কড়াইয়ের চুলাতে নিয়ে যাওয়া যায়। চুলাতে অল্প অল্প করে জ্বাল দিয়ে পরিপূর্ণ সিদ্ধ করা হয়। পরে সেগুলোকে রসেভর্তি পাত্রে ডুবিয়ে দেয়া হয়।

শ্রমিক ও কারিগররা বলেন, প্রতিদিন আমরা মিষ্টি তৈরি করছি। মূলত খাঁটি দুধ দিয়ে ছানা বানানোর কারণে এর সুনাম ছড়িয়েছে। প্রতিদিন অনেক লোকজন এখান থেকে মিষ্টি নিয়ে যাচ্ছেন। আমরা চাই মিষ্টির সুনাম দেশে ও বিদেশেও আরো ছড়িয়ে পড়ুক।

মিষ্টি কিনতে আসা আকাশ মিয়া বলেন, বিলপাড়ার মিষ্টির নাম শুনেই এসেছি। বিলপাড়ার মিষ্টি খুব ভালো, অনেক সুস্বাদু। মিষ্টি খেতে খুব মজা। টাঙ্গাইলের চমচমও ভালো। কিন্তু বিলপাড়ার মিষ্টি আরও বেশি ভালো। বিলপাড়ার মিষ্টি ছানা দিয়ে তৈরি হয়।মিষ্টি তো সব জায়গায় ছানা থাকে না। বিলপাড়ার মিষ্টির রং সাদা।

মিষ্টি খেতে আসা রাকিব বলেন,বন্ধুদেরকে সাথে নিয়ে মিষ্টি খেতে আসছি। মাঝে মাঝে বিলপাড়ার মিষ্টি খেতে আসি। বিলপাড়ার মিষ্টি খেতে অনেক সুস্বাদু। প্রতি মাসে দুই থেকে তিনবার আসি। আমরা নিজে খেয়ে বাড়ির লোকজনের জন্যও নিয়ে যাচ্ছি।টাঙ্গাইলের চমচমের চেয়েও অনেকটা এ মিষ্টি সুস্বাদু। বিলপাড়ার মিষ্টিতে চিনি কম দেয়ায় মান ও গুন অন্যন্য মিষ্টির তুলনায় আলাদা।

দোকানের মালিক নেওয়াজ আলী বলেন, প্রায় ২৬ বছর ধরে আমি মিষ্টির দোকান দিয়েছি। প্রতিদিন ৩ জন কর্মচারী দোকানে কাজ করছেন। বর্তমানে দুধসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভ কম হচ্ছে।  আমার তৈরি চমচম আল্লাহ তায়ালার রহমতে জনপ্রিয়তা পাওয়ায় দেশ-বিদেশেও যাচ্ছে।

বর্তমানে নেওয়াজ আলীর পাশাপাশি তার ছেলে সুজন মিয়া বিলপাড়ার মিষ্টির দোকান দেখবাল করছেন। তিনি বলেন, খাটি দুধ দিয়ে ছানা বানানোর কারণে আমাদের মিষ্টির সুনাম দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। আমেরিকা, ফ্রান্স, ইতালি, সিঙ্গাপুর, নেপাল, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে বিলপাড়ার মিষ্টি যাচ্ছে। নেওয়াজ আলীর বিলপাড়ার মিষ্টির অন্য কোথাও শাখা নেই। শীতকালের তুলনায় গরমকালে মিষ্টি বেশি বিক্রি হয়। টাঙ্গাইলের চমচমের চেয়েও বিলপাড়ার মিষ্টির স্বাদ ও মান অনেক ভালো বলে তিনি দাবি করেন।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights