মধুপুরের প্রথম অনলাইন সংবাদপত্র

বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৩৯ পূর্বাহ্ন

First Online Newspaper in Madhupur

পাঁচ মাসেও পুরোপুরি শুরু হয়নি মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে থানার কার্যক্রম

সংবাদ দাতার নাম
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ৩৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে থানার কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু হয়নি।

ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট দুর্বৃত্তরা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের পর আগুনে জ্বালিয়ে দেয় থানা ভবনে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও এ থানার সেবা কার্যক্রম পুরোপুরি চালু করা সম্ভব হয়নি।

সরেজমিনে যমুনা সেতু-ঢাকা মহাসড়ক সংলগ্ন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার সোহাগপাড়া এলাকায় গোড়াই হাইওয়ে থানা চত্বর ঘুরে দেখা যায়- থানা প্রাঙ্গণে এক অন্য রকম পরিবেশ বিরাজ করছে। চারপাশে সুনশান নীরবতা। হাইওয়ে থানার চারপাশে বাউন্ডারি ওয়াল না থাকা এবং যানবাহন সরবরাহ না থাকায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে  থানায় কর্মরত হাইওয়ে থানার পুলিশ সদস্যরা। নিরাপত্তাহীনতার মধ্যেও গোড়াই হাইওয়ে থানার পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালনের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে তাদের মধ্যে কোনো প্রাণচাঞ্চল্য নেই।

গোড়াই হাইওয়ে থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য জানায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গত ৪ আগস্ট অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হলে ওসির কক্ষ, পুলিশ ব্যারাক, নারী পুলিশ ব্যারাক, অফিস কক্ষসহ একতলা থেকে তিন তলা পর্যন্ত প্রতিটি কক্ষ গান পাউডার দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ওইদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে গোড়াই সোহাগপাড়া এলাকার বাবুল সিকদার, আশরাফ সিকদারসহ অন্তত এক ডজন ব্যক্তি জানায়, এমন দৃশ্য তারা জীবনে কখনো দেখেননি।

তাদের বর্ণনা মতে, গোড়াই হাইওয়ে থানায় গত ৪ আগস্ট দুপুরের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা থানায় নাটকীয়ভাবে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। ৫০০-৬০০শ জন ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে থানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার জন্য সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ার সেল, কাঁদানে গ্যাস ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

হামলাকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল, পাল্টা গুলি, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে থানায় আগুন দিয়ে পুলিশের ৪টি গাড়িসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় জব্দকৃত অন্তত ৩০-৪০টি যানবাহন জ্বালিয়ে দেয়। হামলায় সাবেক ওসি আদিল মাহমুদ, এসআই আনিসুজ্জামান, এএসআই জাহাঙ্গীরসহ ১০জন পুলিশ সদস্য আহত হন।

এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার বর্তমান ওসি (তদন্ত) ও ওই সময়ের ওসি মো. সালাউদ্দিন মিয়া এবং উপ-পরিদর্শক মো. জহিরুল ইসলাম জানান, গোড়াই হাইওয়ে থানায় দুর্বৃত্তরা হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর ব্যাপক লুটপাট চালায়। আত্মরক্ষার জন্য হাইওয়ে থানার পুলিশ সদস্যরা মির্জাপুর থানায় আশ্রয় নেয়। তারপর হামলাকারীরা মির্জাপুর থানায়ও হামলার চেষ্টা করে। গোড়াই হাইওয়ে থানায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। থানা ও যানবাহন পুড়িয়ে ফেলায় এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি গোড়াই হাইওয়ে থানার সেবা কার্যক্রম। সে সময় এলাকাবাসীর সহযোগিতার কারণে মির্জাপুর থানায় হামলা হয়নি। তবে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছিলেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা। ঘটনার পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জিওসিসহ ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তা, ঢাকা রেঞ্জের হাইওয়ে থানার ও পুলিশের ডিআইজি, টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপারসহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা গোড়াই হাইওয়ে থানা এবং মির্জাপুর থানা পরিদর্শন করেন।

গোড়াই হাইওয়ে থানার ওসি মাসুদ খান জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় হামলাকারীরা লুটপাট চালিয়ে পুরো গোড়াই হাইওয়ে থানা পুড়িয়ে দেয়। দুর্বৃত্তরা পুলিশের চারটি পিকআপভ্যান, ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ও বিভিন্ন মামলায় জব্দকৃত গাড়িসহ ৩০-৪০টি যানবাহন পুড়িয়ে দিয়েছে। মামলার সমস্ত আলামত পুড়িয়ে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ২৯ জন পুলিশ সদস্য নিয়ে তারা টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়, মির্জাপুর থানা ও পুলিশ লাইনে আশ্রয় নেয়। এখন পর্যন্ত থানায় থাকার মতো পরিবেশ নেই।

পুনঃসংস্কার, চারপাশে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ ও থানাসহ যমুনা সেতু-ঢাকা মহাসড়ক দেখভাল করার জন্য যানবাহন সরবরাহ করা না হলে গোড়াই হাইওয়ে থানায় কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে চালু করা সম্ভব হবে না। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তিনি প্রধান উপদেষ্টাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানান।

সংবাদ টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ

The Trend (Online Shop)

©2024 All rights reserved
Design by: POPULAR HOST BD
themesba-lates1749691102
Verified by MonsterInsights