নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস অফিসের পরিচালক পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত সাবেক আমলা মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর ড. মো. ফরহাদ হোসেনের প্রিয়ভাজন হিসেবে পরিচিত সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলামকে ৯ মে ২০২২ তারিখে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। অতীতে তিনি আওয়ামী লীগের পাতানো ডামি নির্বাচনে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সংবাদ মাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকাকালে তিনি নিয়োগ বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী নিয়োগ নীতিমালা, ২০২২’-এর ধারা-০৫ লঙ্ঘন করে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের পর থেকে তিনি নিয়মিতভাবে অফিস না করে বেশিরভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করতেন। নিয়মবহির্ভূতভাবে তার চুক্তির মেয়াদ দুই দফায় বৃদ্ধি করা হয়, যা আগামী ১০ মে ২০২৫ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি চাকরি সংক্রান্ত নীতিমালা উপেক্ষা করে অবৈধভাবে চিকিৎসা ভাতা, উৎসব ভাতা এবং বাংলা নববর্ষ ভাতা গ্রহণ করেছেন, যা একজন অবসরপ্রাপ্ত চুক্তিভিত্তিক কর্মকর্তার জন্য অনুমোদিত নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্ট হাউসে বিলাসবহুল শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসবাস করছেন তিনি, যা নিয়মবহির্ভূত। অথচ তার বেতন থেকে বাসাভাড়া কর্তন করা হয়নি বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, তিনি বিভিন্ন দপ্তরের সিনিয়র কর্মকর্তাদের হুমকি দেন এবং অপদস্ত করেন। তার বিরুদ্ধে ইউজিসির অডিট টিমের আপত্তিও রয়েছে। তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের কারণে পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস অফিসের একজন যোগ্য কর্মকর্তা প্রাপ্য পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, তিনি চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে বিভিন্ন মহলে তদবির চালাচ্ছেন এবং নতুন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করছেন। বিগত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অর্থ ছাড় না করেই তিনি দরপত্র আহ্বান করেন এবং নিম্নমানের ডিজিটাল স্মার্ট বোর্ড ক্রয় করেন। ফলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিল আটকে যায়। এরপর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুত করার হুমকিও দেন। এই বিষয়ে মো. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাসাভাড়া না দিয়ে গেস্ট হাউসে থাকার বৈধতা নিয়ে বলেন- ‘আমি গেস্ট হাউসে যে কয়দিন থাকি, সেটা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই থাকি, এভাবেই করবো আরকি অসুবিধা নাই।’
কর্তৃপক্ষ বলতে কাকে বোঝানো হচ্ছে- এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি আপনার সঙ্গে পরে কথা বলি, নামাজ পড়ছিলাম তো।” এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।