কালিহাতীর পৌলি সেতু ও শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা

কালিহাতী প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু মহাসড়কে নির্মিত পৌলী সড়ক রেল সেতু ও টাঙ্গাইল শহর রক্ষা বাঁধ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের ফলে সেতুর দু’পাশ থেকে মাটি ধ্বংসে গিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা দেখা দিয়েছে। এলাকার কতিপয় ব্যক্তি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার পৃষ্ঠপোষকতায় এলেঙ্গা পৌরসভার রাজাবাড়ী গ্রামের উজ্জ্বল তার সাঙ্গপাঙ্গদের সাথে নিয়ে পৌলী নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের নিকট অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি ভোক্তভোগীরা বলে জানিয়েছেন স্থানীয় অধিবাসীরা।

জানা যায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় পৌলীসহ আশপাশের এলাকায় বর্ষা মৌসুমে ব্যাপক ভাঙন কবলিত হয়। ইতোপূর্বে ভাঙ্গনে শতাধিক পরিবারের ভিটে-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দুই বছর আগে রেলসেতুর দু’পাশের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে ভোগান্তির শিকার হন হাজার হাজার মানুষ। বালু উত্তোলনের ফলে গত বর্ষা মৌসুমেও মহাসড়কের উপর নির্মিত পৌলী সেতুর দক্ষিণের অ্যাপ্রোস রোড ধ্বসের ঘটনা ঘটেছিল। বালু উত্তোলনের ফলে গ্যাস পাইপ লাইন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বেশ একাধিকবার।

সরেজমিনে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু সেতু-ঢাকা মহাসড়কে জেলার কালিহাতীর পৌলী নদীর ওপর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মহাসড়ক ও রেল সেতুর অদূরে ভেকু বসিয়ে বালু কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ট্রাক ভর্তি মাটি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এর ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী রক্ষা গাইড বাঁধটিও রয়েছে হুমকির মুখে। ভেকু দিয়ে ও ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে বেশ কয়েকবার তিতাস গ্যাসের মূল পাইপ লাইন ফেটে গ্যাস ভেসে উঠে। এতে টাঙ্গাইল, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলায় গ্যাস সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পৌলী নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে স্থানীয় মানুষদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এক সময় নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে কিছুদিন বালু উত্তোলন ও বিক্রি বন্ধ থাকে। পরে পাইপলাইন মেরামত করা হলে পুনরায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি মহোৎসবে মেতে ওঠেছে প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি জানান, সরকার দলীয় লোকজনের সহযোগিতায় বিএনপি মনোভাবাপন্ন উজ্জ্বল অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছে দীর্ঘ দিন থেকে। বালু উত্তোলনের ফলে বার বার গ্যাস পাইপে ফাটল ধরে এবং পৌলী সেতুর অ্যাপ্রোচ ধ্বসে যায় এতে সড়ক বিভাগকে  প্রতি বছর মেরামত বাবদ বিপুল পরিমান অর্থ গচ্চা দিতে হয়।

অনতিবিলম্বে  বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে মহাসড়কে পৌলী সেতু, রেল সেতু, গ্যাস পাইপ লাইন সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।  নদীগর্ভে চলে যেতে পারে শত শত বসতবাড়ী।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি খোজনিয়ে দেখছি, কেউ নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলে তার বিরোদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap