গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌঁছান গায়রা গ্রামে। সুবীর নকরেক যে উঠানে বসে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজ শুরু করেছিলেন, গারো শিশু–কিশোরেরা ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করে তাঁকে ও অন্য অতিথিদের নিয়ে যায় সেখানে। সুবীরের সঙ্গে উঠান বৈঠক করেন ইয়াসির আজমান। এরপর নকরেক প্রতিষ্ঠিত নকরেক আইটি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেন অতিথিরা।
দুপুরের দিকে আবারও গারোদের ঐতিহ্যবাহী রীতিতে অতিথিদের নিয়ে যাওয়া হয় গির্জার মাঠের মূল মঞ্চে। সেখানে তখন তরুণ ফ্রিল্যান্সারসহ হাজারের বেশি মানুষ। এ সময় গ্রামীণফোনের সিইওসহ অতিথিদের মাথায় গারো জনগোষ্ঠীর সর্বোচ্চ মুকুট ‘কুতুব’ পরিয়ে দেন গারোদের বয়োজ্যেষ্ঠ নেতারা।
তরুণ ফ্রিল্যান্সারদের মধ্যে বাপ্পু মৃ, হিমালয় হেনরি নকরেক, পরিতোষসহ বেশ কয়েকজন গ্রামীণফোনের সিইওকে জানান, এই এলাকার নেটওয়ার্ক এতই দুর্বল যে ঘরে বসে তো দূরের কথা, গাছের নিচে গেলেও তা পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে রাতে খোলা মাঠে বসে বিদেশে গ্রাহকের কাছে ফাইল পাঠাতে হয়। তাঁরা এলাকাটির মোবাইল টাওয়ারের আওতা বাড়িয়ে এবং নতুন টাওয়ার বসিয়ে দুর্ভোগ লাঘবের অনুরোধ করেন।
গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান তাঁদের জানান, পুরো এলাকা নিয়ে কাজ করা হবে। ২৩টি গ্রাম পরিদর্শন করা হয়েছে। এ অঞ্চলে টাওয়ার স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। আপাতত গায়রা গ্রামে গ্রামীণফোনের অস্থায়ী টাওয়ার বসানো হয়েছে। তিনি বলেন, এটি যেহেতু বনাঞ্চল, তাই এখানে স্থায়ী বিটিএস বসাতে বন বিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রয়োজন। প্রশাসনের সহায়তা পেলে গ্রামীণফোন এখানে প্রয়োজনীয় বিটিএস স্থাপন করবে, যাতে তরুণ ফ্রিল্যান্সাররা উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করতে পারেন।
সুবীর নকরেক আরও বলেন, মধুপুর বনে ফ্রিল্যান্সিং ও ইন্টারনেটের দুর্বলতা নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর অনেকেই বিষয়টি জানতে পারে। এরপর গ্রামীণফোন সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছে।
সমাবেশে জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিং নকরেক, লেখক রাহিতুল ইসলাম বক্তব্য দেন। সমাবেশে বিজ্ঞাপনী সংস্থা গ্রে ঢাকার ম্যানেজিং পার্টনার ও কান্ট্রি হেড গাউসুল আলম শাওন, গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস খায়রুল বাশার, প্রথম আলোর হেড অব ডিজিটাল বিজনেস জাবেদ সুলতান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ শেষে প্রথমা প্রকাশন প্রকাশিত রাহিতুল ইসলামের লেখা কল সেন্টারের অপরাজিতা বইয়ের প্রকাশনা উৎসব করা হয়।
সুত্র: প্রথম আলো
Leave a Reply