নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণ যখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করে, তখন টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী শামসুর রহমানকে পরাজিত করে জয়লাভ করেন রাজনীতিতে একেবারেই নতুন লুৎফর রহমান খান আজাদ। তারপর থেকে অতিবাহিত হয়েছে ৩১টি বছর। এই সময়কাল আজাদ খান তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সেই সময়ে তার একছত্র আধিপত্য ও তার অঙ্গুলির ইশারায় ঘাটাইল বিএনপি এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন পরিচালিত ও নেতাকর্মী নির্বাচিত হয়। কিন্তু ২০২২ সালের মার্চ মাসে এসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ঘাটাইল উপজেলা ও পৌর বিএনপির নতুন কমিটি অনুমোদিত হওয়ায় সাধারণ নেতাকর্মী এবং সমর্থকরা ধারনা পোষণ করছেন যে, কথিত সংস্কারপন্থী ও সাবেক মন্ত্রী আজাদের একছত্র আধিপত্যর কার্যত ও দৃশ্যত অবসান ঘটেছে ঘাটাইল বিএনপির রাজনীতিতে।
গত ১২ মার্চ ঘাটাইল উপজেলা ও পৌর বিএনপির নতুন কমিটি অনুমোদিত হয়েছে। টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুল হক সানু জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় ঘাটাইলে নতুন আহবায়ক কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। আশা করবো, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে এই কমিটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
আগের কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণার প্রায় ৩ মাস পর ঘাটাইল উপজেলা ও পৌরর আহব্বায়ক কমিটির অনুমোদন আসে।
ঘাটাইল উপজেলা বিএনপির নতুন ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহব্বায়ক কমিটির আহব্বায়ক নির্বাচিত হয়েছেন সিরাজুল হক সানা। কমিটিতে সদস্য সচিব হয়েছেন আলহাজ্ব মোঃ বেলাল হোসেন। এছাড়া কমিটিতে আবু বকর সিদ্দিক, অদুদ খান বাদল, হারুন-অর-রশিদসহ যুগ্ন আহব্বায়ক হয়েছেন ৮ জন এবং এতে ৩১ জনকে সন্মানিত সদস্য করা হয়েছে। কমিটিতে এক নম্বর সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ওবায়দুল হক নাছির।
ঘাটাইল পৌর বিএনপির নতুন ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহব্বায়ক কমিটির আহব্বায়ক নির্বাচিত হয়েছেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাছেদ করিম। কমিটিতে সদস্য সচিব হয়েছেন আনোয়ার হোসেন হেলাল। এছাড়া কমিটিতে আব্দুল লতিফ, হাবিবুর রহমান হাবিব, ইখতিয়ার মাহমুদ রুবেজসহ যুগ্ন আহব্বায়ক হয়েছেন ৮ জন এবং এতে ৩১ জনকে সন্মানিত সদস্য করা হয়েছে। কমিটিতে এক নম্বর সদস্য হিসেবে রয়েছেন ফারুক হোসেন ধলা।
নতুন এই আহব্বায়ক কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই তৃণমূলের বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থক এবং আওয়ামী লীগ শিবিরেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া, আলোচনা ও সমালোচনা দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে শুরু করে হাটেবাজারে, চায়ের টেবিলে, এমনকি ঘাটাইল উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের সকল গ্রাম মহল্লায় এখন একটিই আলোচনার বিষয়- ঘাটাইল বিএনপির নেতৃত্বে নতুন মেরুকরণ। এই মেরুকরণে কারা রাজনীতি থেকে ছিটকে পরল, অযোগ্য কারা কমিটিতে আসলো, সুপার-থ্রিতে যারা আসছেন তাঁদের যোগ্যতা বা কার কি ভূমিকা, কারা কারা রাজনীতিতে সন্মানের জায়গা পেল, কেন এমন হল, কার কি ভুল, নতুন নেতারা কে কেমন ও অতীতে তাঁদের কি ভূমিকা, ভবিষ্যতে তাঁরা কে কি ভূমিকা রাখতে পারবেন, এভাবে না হয়ে ঐভাবে হলে কেমন হত, তৃণমূলের প্রত্যাশা কতোটুকু অর্জিত হইলো ইত্যাদি ইত্যাদি নানান বিষয় এখন মানুষের আলোচনার বিষয়বস্তু।
নেতাকর্মী সমর্থকরা বলছেন, নতুন কমিটিতে যারা নেতৃত্বে এসেছেন প্রত্যেকেই বিএনপি সৃষ্টির পর থেকে রাজনীতির সাথে জড়িত এবং রাজপথ ও ছাত্রদল, যুবদলের সোনালি ফসল তাঁরা। যুগ যুগ ধরে তাঁরা ঘাটাইল বিএনপিকে ভালোবাসায় আগলে ধরে রেখেছেন। সবাইকে তাঁদের নেতৃত্বর গুনাগুণ এবং যোগ্যতার বলেই কমিটিতে জায়গা দিয়েছেন দেশনায়ক তারেক রহমান বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন তাঁরা।
আমাদের মধুপুর প্রতিনিধি নতুন নেতৃত্বে যারা এসেছেন এবং কমিটির প্রতি যাদের ক্ষোভ রয়েছে তাঁদের অনেকের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে। তাঁরা জানিয়েছেন, সাবেক মন্ত্রী লুৎফর রহমান খান আজাদের কিছু ভুল আচরণের কারনে অনেক ত্যাগী ও নিঃস্বার্থ নেতাকর্মীরা বিএনপি থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন দীর্ঘদিন। এছাড়া তার বলয়ের অনেকে সরাসরি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে বিএনপিকে দুর্বল করার চেষ্টা করেছেন। এতে সংগঠন দুর্বল হয়ে যাওয়ায় দেশনায়ক তারেক রহমান বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম তরুণ সদস্য ওবায়দুল হক নাসিরকে ঘাটাইলের সাংগঠনিক দায়িত্ব দেয়ার পর থেকেই সকল কর্মী সমর্থকদের মধ্যে আস্থার জায়গা, উদ্দীপনা এবং একটা নিরব গণজাগরণের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি একেবারেই তৃণমূলের সাধারণ মানুষজনের সাথে মিলিমিশে তাঁদের ভাষা এবং চাওয়া বুঝার চেষ্টা এবং তাঁদের পরামর্শ গ্রহণ করেছেন। তারপরে তিনি একে একে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল ও যুবদলের কমিটি উপহার দিয়েছেন যথার্থ ও সঠিক নেতৃত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে।
পরে গত ১২ মার্চ তারেক রহমানের দীর্ঘ পর্যালোচনা শেষে ঘাটাইল উপজেলা ও পৌর বিএনপির নতুন আহব্বায়ক কমিটি যখন আসলো তখন দেখা গেল সেখানে ঠাই পেয়েছেন একঝাঁক বয়োজ্যেষ্ঠ অভিভাবক এবং অপেক্ষাকৃত তরুণ কিছু অকুতোভয় লোকজন। এখন ঘাটাইল উপজেলা বিএনপির নতুন এই নেতৃত্ব ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা জন্য কার্যকরী কি কি ভূমিকা রাখতে পারে সেটিই এখন সকলের আলোচনা সমালোচনার যৌক্তিক বিষয় বলে ঘাটাইলবাসী বলছেন।
এদিকে কাঙ্ক্ষিত পদ না পেয়ে অনেকেই নতুন কমিটির প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন। পৌর বিএনপির সাবেক সম্পাদক ফারুক হোসেন ধলা ছিলেন উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রার্থী। তিনি যথেষ্ট জোর চেষ্টা তদবির এবং লবিংও চালিয়েছিলেন। বিগত সময়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে তার অনেক ভূমিকা রয়েছে বলে অনেকে জানিয়েছেন। তিনি নতুন পৌর কমিটির সন্মানিত এক নম্বর সদস্য হিসেবে রয়েছেন। এদিকে উপজেলা বিএনপির সাবেক সম্পাদক রেজাউল করিমের জায়গা হয়নি নতুন কমিটিতে। এটি নিয়েও তার ভক্ত সমর্থকরা কষ্ট ও ক্ষোভ জানিয়েছেন।
ঘাটাইল উপজেলা বিএনপির আহব্বায়ক নির্বাচিত হয়েছে সিরাজুল হক সানা। তিনি টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির আহব্বায়ক কমিটির সন্মানিত সদস্য। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গঠিত জাগদলের ঘাটাইল থানার প্রথম সম্পাদক ছিলেন তিনি। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জাগদল বিলুপ্ত করে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করা হলে তিনি ঘাটাইল উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে উপজেলা বিএনপির কয়েকবারের সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করে অনেকটা অভিভাবকের জায়গা দখল করেছেন তিনি।
ঘাটাইল উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব নির্বাচিত হয়েছেন আলহাজ্ব বিল্লাল হোসেন। তার বাবা ইসহাক উদ্দিন ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। বিল্লাল হোসেন উপজেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সম্পাদক। তিনি পৌর বিএনপির সাবেক সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি হিসবেও দায়িত্ব পালন করেন। তার ছোট ভাই খলিলুর রহমান বিএনপি সমর্থনে জিবিজি কলেজের নির্বাচিত ভিপি ছিলেন। ঘাটাইলে বিএনপি সমর্থিত পরিবারগুলোর মধ্যে এই পরিবারটি অন্যতম।
উপজেলা বিএনপির একনম্বর যুগ্ন আহবায়ক হিসেবে রয়েছেন আবু বকর সিদ্দিক। স্কুলছাত্র জীবন থেকেই তার বিপ্লবী রাজনীতি শুরু। ৮০ দশকে জিবিজি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদলের তুমুল জনপ্রিয় পরিষদ ছিল মামুন-সিদ্দিক পরিষদ। সিদ্দিক জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তিনি ঘাটাইল উপজেলা ছাত্রদল এবং যুবদলের সাবেক সভাপতি। উপজেলা বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক ও সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তিনি। ছাত্রদল, যুবদল, বিএনপি যখন যেটা করেছেন তখনকার সকল কমিটিতেই ঠাই হয়েছে তার। দীর্ঘ ৪০ বছরের রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে উপজেলা বিএনপির এই নেতার।
ঘাটাইল পৌর বিএনপির আহব্বায়ক নির্বাচিত হয়েছেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষক আব্দুল বাছেত করিম। অস্ত্র হাতে দেশ স্বাধীন করে বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তিনি ছাত্রদলের রাজনীতি শুরু করেন এবং ছাত্রদলের ঘাটাইল উপজেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তিনি। তৎকালীন সময়ে সর্বাধিক জনপ্রিয় ছাত্রনেতা ছিলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। পরবর্তীতে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা শুরু করলে দলীয় পদ পদবীর রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান তিনি। কিন্তু সরকারি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণের পরপরই তিনি আবারও নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছেন পৌর বিএনপির দায়িত্ব। অথচ শুধুমাত্র বিএনপি সমর্থন করার কারনে বর্তমান সরকার তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং তার তার পক্ষে অবস্থান নিয়ে কাদের সিদ্দিকী বক্তব্যও দিয়েছেন।
ঘাটাইল পৌর বিএনপির কমিটির সদস্য সচিব নির্বাচিত হয়েছেন আনোয়ার হোসেন হেলাল। ছাত্রদলের সোনালি ফসল তিনি। নব্বই দশকে জিবিজি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের রঞ্জু-হেলাল-পাবলু পরিষদে বিএনপি সমর্থিত জিএস প্রার্থী ছিলেন তিনি। পৌরর ৪ নং ওয়ার্ডে দুইবার বিপুল ভোটে তিনি কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলা ও ঘাটাইল উপজেলা ছাত্রদল ও যুবদলের সদস্য ছিলেন। বিএনপি ঘাটাইল পৌর শাখার যুগ্ম আহবায়ক, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়াও তিনি উপজেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা মাইক্রোকার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নির্বাচিত হয়েছেন ছাত্রদলের সোনালী ফসল তরুণ এসএম আব্দুল লতিফ। তার পিতা এসএম জোয়াহের মাষ্টার বিএনপি প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি। পর পর তিনবার টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সন্মানিত সদস্য ছিলেন তিনি। বিএনপির সাথে সম্পৃক্ততা ও ভালবাসার কথা বলতে গিয়ে লতিফ বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সাথে হ্যান্ডশেক করে আমার রাজনীতিতে পথচলা শুরু হয়েছিল। জিবিজি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি (১৯৮৫- ৮৬) ছিলেন লতিফ। ঘাটাইল শহর ছাত্রদলের প্রথম সভাপতি ছিলেন তিনি। ঘাটাইল পৌরর ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন আব্দুল লতিফ।
ঘাটাইলে বিএনপির নতুন এই কমিটিকে স্বাগত জানিয়েছে যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দলসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
ঘাটাইল উপজেলা বিএনপির আহব্বায়ক সিরাজুল হক সানা বলেন, তৃণমূল বিএনপির অনেকদিনের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে নতুন কমিটিতে। এখানে যারা পদ পেয়েছেন সবাই তাঁদের যোগ্যতার বলে এখানে এসেছেন। এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, যোগ্যদের সমন্বয়ে ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ডগুলোর কমিটি পুনর্গঠন করা। আমরা ঐক্যমত্যর ভিত্তিতে সারা ঘাটাইলে এমন একটি গণজাগরনের সৃষ্টি করবো যা একটি উদাহরণ তৈরি করবে এবং একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে এই কমিটি লক্ষণীয় কাজ করবে বলে সে সময় আশা প্রকাশ করেন তিনি। সে জন্য সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন ঘাটাইল বিএনপির এই অভিভাবক।
বিএনপি নির্বাহী কমিটির তরুণ সদস্য ওবায়দুল হক নাসির বলেন, কমিটি গঠন জটিল এবং কঠিন কাজ। কাউকে খুশি করা যায় না। একাধিক যোগ্য নেতা থাকেন। সবাইকে একই জায়গায় মূল্যায়ন করা যায় না। একজন ব্যক্তি সকল সময় বড় পদে থেকে নেতৃত্ব করবেন সেটাও ঠিক নয়। আবার দলের সিদ্ধান্তের প্রতি অনুগত না থাকলে যে কেউ গায়ের জোড়ে নেতৃত্বে থাকতেও পারবেন না। ভাল সৈনিক যুদ্ধক্ষেত্রে কমান্ডারের আদেশ না মানলে বির্পযয় হয়। তখন সৈনিক ভাল হলেও সাময়িক যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে রাখতে হয়। ভাল সৈনিক ঠিকই আবার সংশোধন হয়ে নিজের জায়গায় চলে আসে। রাজনীতি করতে গেলে রাজনীতির ভাষা জানতে হয়। প্রতিবাদেরও ভাষা আছে সেগুলো জানতে হয়, পড়াশুনা জানতে হয়, রাজনীতি পড়তে হয়। রাজনীতিতে আলোচনার সুযোগ থাকে, কারো মুল্যায়ন না হলে মূল্যায়ন করারও সুযোগ থাকে। মনে রাখতে হবে দলের শক্তির কাছে কোন শক্তিই কিছু নয়। হয়ত সরকারী দলের সহযোগিতায় কিছু বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি করা যায় কিন্তু সফল হওয়া যায় না। অতীত থেকে শিক্ষা নিতে হয়। কিছু পেতে হলে দলের কাছেই আসতে হবে। দলের দরজা সকলের জন্য সবসময় খোলা ।
তিনি আরও বলেন, সাংগঠনিক কমিটি গঠন একটি চলমান প্রক্রিয়া। সারাদেশে সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ ও সরাসরি তত্ত্বাবধানে ঘাটাইল উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি গঠিত হয়েছে। একটি কমিটি করতে গিয়ে কিছু ভুলত্রুটি থাকাটা যেমন স্বাভাবিক, তেমনই বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ একটি দলের উপজেলা ও পৌর পর্যায়ের কমিটি গঠন করতে গিয়ে সবারই সঠিক মূল্যায়ন করা অনেকসময় সম্ভবপর হয়ে উঠে না। তবুও যোগ্যতা এবং সকলের মতামতের ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পরামর্শে এটি গঠিত হয়েছে। আমাদের সকলকে প্রথমত ঐক্যবদ্ধ হতে হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সহসাই একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করছি যারা দিকনির্দেশনা প্রদান করবেন।
তিনি আরও বলেন, ঘাটাইলে আগামীদিনে তৃণমূল পর্যায়ে সঠিক নেতৃত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই কমিটির সদস্যরা কাজ করবেন। যেন খালেদা জিয়ার মুক্তি, দেশনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্যে আমরা সবাই এক কাতারে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জন করি। কাজেই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের সিদ্ধান্তকে সন্মান জানিয়ে আমাদের সকলের উচিৎ হবে সামনের সকল পর্যায়ের দলীয় কার্যক্রমে আমাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহন করা। এ সময় তিনি ঘাটাইলবাসী ও বিএনপির সকল নেতাকর্মী সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসা প্রকাশ এবং ঘাটাইলে সুস্থ ধারার রাজনীতির চর্চা পরিলক্ষিত হওয়ার বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মী ও প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
Leave a Reply