সখিপুরে মানববন্ধনে বাধা পুলিশের হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রনে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের সখীপুরে বঙ্গবন্ধুর ১০২তম জন্মদিন উদযাপনে বাধা ও হুমকি প্রদর্শণের প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতেও আবার বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় উপজেলার কাঁকড়াজান ইউনিয়নের জিতাশ্বরী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুলাল হোসেনের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন পালন ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার এমন অভিযোগ করেছেন জিতাশ্বরী বঙ্গবন্ধু মুজিব স্মৃতি সংসদের যুবকেরা।

জিতাশ্বরী বঙ্গবন্ধু মুজিব স্মৃতি সংসদের সভাপতি রেজাউল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার জিতাশ্বরী দাখিল মাদ্রাসা চত্বরে তাঁদের সংগঠন থেকে বঙ্গবন্ধুর ১০২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের জন্য কেক কাটা, আলোচনাসভা ও মিলাদ মাহফিল কর্মসূচি গ্রহণ করেন। ওই অনুষ্ঠানের চিঠিতে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুলাল হোসেনের নাম অতিথির তালিকায় না থাকায় দুলাল হোসেন ও তাঁর অনুসারীরা জন্মদিন অনুষ্ঠান কর্মসূচিতে বাধা ও হুমকি প্রদর্শন করেন। ফলে তাঁদের কর্মসূচি ভণ্ডুল হয়ে যায়। এর প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টায় জিতাশ্বরী বাজারে ওই চেয়ারম্যানকে দায়ী করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন। ওই কর্মসূচিতে প্রিণ্ট ও ইলেট্রনিকস গণ মাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত হন।

আরো পড়ুনঃ সখীপুরে বঙ্গবন্ধুর ১০২তম জন্মদিন উদযাপনে বাধা ও হুমকি প্রদর্শণের প্রতিবাদে মানববন্ধন

কর্মসূচি আরম্ভ হওয়ার ১০ মিনিট পর চেয়ারম্যানের লোকজন ওই কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে বাধা সৃষ্টি করেন। এক পর্যায়ে কর্মসূচিতে থাকা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের কর্মীরা দৌড়ে গিয়ে একটি ঘরে আশ্রয় নেন। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির পরিস্থিতি তৈরি হলে সখীপুর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে দু পক্ষের ২০জনকে ডেকে নিয়ে সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম থানায়  এ বিষয়ে আপোষ-মীমাংশা  করেছেন বলে জানা গেছে।

মানববন্ধন কর্মসূচিতে বঙ্গবন্ধু মুজিব স্মৃতি সংসদের সভাপতি-সম্পাদক ছাড়াও ইউনিয়ন আওামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর লাবু, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুব বিল্লাল, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মফিজ উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক শিমুল হোসাইন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাকসহ অর্ধশত আওয়ামী লীগ সমর্থক উপস্থিত ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু মুজিব স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, দুলাল হোসেন আগে বিএনপির ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি ছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর কাছে হেরে যান। এবারও ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্রে নির্বাচন করে জয়ী হন। আওয়ামী লীগ তাঁকে দল থেকে বহিস্কার করেন। একজন বহিস্কৃত নেতাকে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আমরা আমন্ত্রণ জানাতে পারি না। ওই চেয়ারম্যানকে অতিথি না করায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে অনুষ্ঠান ভণ্ডুল করে দেন। আমরা এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করতে গেলে সেখানেও তিনি ও তাঁর লোকজন আমাদেরকে বাধা ও মারধর করেছেন।

এ প্রসঙ্গে কাঁকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন  বলেন, আসলে এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। বঙ্গবন্ধু মুজিব স্মৃতি সংসদ- এ ধরনের কোনো আয়োজন করেননি। মিথ্যা বানোয়াট বিষয় নিয়ে মানববন্ধন করে পরিবেশ অশান্ত করায় স্থানীয় লোকজন তাঁদেরকে হটিয়ে দিয়েছে। এখানে আমার কোনো হস্তক্ষেপ নেই।

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, উপজেলার কাকঁড়াজান ইউনিয়নের জিতাশ্বরী গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে গোলমাল হচ্ছে-এমন খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। গতকাল বিকেলে ওই গ্রামের দুই পক্ষের ২০জনকে থানায় ডাকা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap