নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মহোৎসব চলছে টিলা কাটার। এই মাটি দিয়ে চলছে ভরাট কাজ। এ দৃশ্য সবার চোখে পড়লেও যাদের দেখার দায়িত্ব তারা দেখছেন না অভিযোগ স্থানীয়দের। মাঝেমধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের পক্ষ থেকে চালানো হয়। লোক দেখানো অভিযান। তাই দিন দিন ধ্বংস করা হচ্ছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার টিলা। ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য।
টিলার মাটি দিয়ে ঘাটাইল সদর থেকে সাগরদিঘি পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার সড়কের দু’পাশে প্রায় ২০টি স্থানে চলছে ভরাট কাজ। টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ঘাটাইল উপজেলার পাকুটিয়া, পোড়াবাড়ি ও বানিয়াপাড়সহ বিভিন্ন স্থানে টিলার মাটি ফেলে স্তূপ করে রাখা হয়েছে।
পোড়াবাড়ি এলাকায় নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বালু দিয়ে ভরাট কাজ করার কথা থাকলেও এক একর জায়গার এক-তৃতীয়াংশেই ব্যবহার করা হয়েছে টিলার মাটি। শুধু ভরাট কাজ নয়, ইটের ভাটায়ও যাচ্ছে এ মাটি।
মাস ছয়েক আগে পাহাড় কেটে উপজেলার কাইতকাই এলাকায় সরকারি প্রকল্পের রাস্তা নির্মাণের কাজ করেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মিলন। তবে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, টিলা কাটায় ওই রাস্তা নির্মাণের কোনো বিল দেওয়া হবে না।
সরেজমিন দেখা যায়, বারইপাড়া এলাকায় প্রায় ৩০ মিটার উচ্চতার একটি টিলা কাটা প্রায় শেষের দিকে। দেওপাড়া ইউনিয়নের ঘোড়ামারা মৌজার ৩১ নম্বর দাগে ছিল গজারির বন। ওই বন টিলার মাটি বাড়ইপাড়া গ্রামের নাজিম উদ্দিন বিক্রি করেছেন রহিম উদ্দিনের কাছে।
নাজিম জানান, ওই টিলা তাদের রেকর্ডের সম্পত্তি। টিলা কাটতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেটে উঁচুনিচু সমান করা হয়েছে।
দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন আকন্দ হেপলু জানান, তার ইউনিয়নে কোথাও টিলা কাটা হচ্ছে না। এদিকে, দখল সূত্রে পাওয়া টিলা কাটার কাজ কয়েকদিন আগে শেষ করেছেন উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের শহরগোপীনপুর এলাকার চেচুয়াপাড়া গ্রামের ছাগল ব্যবসায়ী শাহজাহান আলী।
শাহজাহান জানান, যে টিলা তিনি কেটেছেন সেটি খাস। কিন্তু বন বিভাগের দাবি ওই টিলা নাকি ব্যক্তিমালিকানার।
টিলা কাটা চলছে সংগ্রামপুর ইউনিয়নের খাগরাটা, দেওজানা ও নলমা, রসুলপুর ইউনিয়নের সিংহেরচালা, সাগরদিঘি ঘাটাইল ইউনিয়নের আষারিয়াসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়ও।
বন বিভাগের ঘাটাইল ধলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, বনের জমিতে যে টিলা রয়েছে, তা থেকে এক কোদাল মাটিও কাটতে দেওয়া হয় না। জনগণের রেকর্ডভুক্ত টিলা কাটলে হস্তক্ষেপ করতে পারেন না।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, টিলা কাটার কারণে এ এলাকায় ভূমিকম্প বেশি হবে।
ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিয়া চৌধুরী বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply