ঘাটাইলে ফুটপাতে দোকান বসিয়ে কোটি টাকা বানিজ্য করছেন প্রভাবশালীরা

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলে ঘাটাইল উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত মহাসড়কের দুপাশের ফুটপাতে দোকান বসিয়ে প্রভাবশালীরা কোটি টাকা বাণিজ্য করে যাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিজয় ৭১ চত্বর (কলেজ মোড়) থেকে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ৪০০ মিটার মহাসড়ক। এ সড়কের দুপাশ দিয়ে (পৌরসভার অংশে) পথচারীদের চলাচলের রাস্তা। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তায় গত এক বছরে গড়ে উঠেছে ফলের দোকান চা স্টল পানের দোকানসহ মৌসুমি দোকান।

স্থানীয় এক ওষুধ দোকানদার বলেন, এসব দোকান বসার সুযোগ পেতে প্রভাবশালীদের স্থানভেদে ৫০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানত দিতে হয়েছে। এর পর প্রতি দোকান প্রতি একেকজনকে চাঁদা দিতে হয় ২০০ টাকা করে। দোকান পজিশন নেওয়ার আগে অলিখিত চুক্তি অনুযায়ী দোকান বসলেও ২০০ টাকা না বসালেও ২০০ টাকা করে নিয়মিত দিতে হয় তাদেরকে। এতে মাসে কমপক্ষে ৬ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয়।

সেই সঙ্গে সড়কের ওপর রাখা হয় সারি সারি থ্রিহুইলার আর নির্মাণসামগ্রী। এতে পথচারীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাকাসড়কের ওপর দিয়ে চলাচল করতে হয়। ফলে স্কুলগামী কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ পথ চলতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সেই সঙ্গে প্রতিনিয়ত ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারীরা।

স্থানীয়রা বলছেন, সাবেক ইউএনও অঞ্জন কুমার সরকার পথচারীদের দুর্ভোগ নিরসনে বারবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতেন। তিনি চলে যাওয়ার পর আর কেউ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। উপজেলা মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় এ বিষয় নিয়ে বারবার দাবি উঠলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। কিংবা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ফুটপাত দখলমুক্ত করার কান উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। অজ্ঞাত কারণে পৌর কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে এলাকাবাসীর।

ফুটপাত দখল করে দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালানো একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বললে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, আমরা ফুটপাতে দোকান করলেও আমাদের মোটা অঙ্কের জামানত দিতে হয়েছে। তবে তারা স্বীকার করেন, এভাবে ফুটপাত আটকে রাখাটা তাদের ঠিক হচ্ছে না।

তারা বলেন, প্রশাসন যখন আমাদের সরে যেতে বলেন তখনই আমরা সরে যাই। অপর প্রশ্নের জবাবে বলেন, জীবিকার তাগিদেই এ কাজ করতে হয়।

জানতে চাইলে পৌর মেয়র আব্দুর রশিদ মিয়া বলেন, এটা একটা ভয়াবহ সমস্যা। মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে এ নিয়ে জোরালো আলোচনা হয়েছে। আমরা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে একটা ব্যবস্থা করবো।

এ বিষয়ে ইউএনও মুনিয়া চৌধুরী বলেন, শিগগিরই এর একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap