বাগমারা (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ১নং গোবিন্দ পাড়া ইউনিয়নের মাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে গোপনে নিয়মবহির্ভূত ভাবে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে গাঁ ঢাকা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান হাবিব। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকে তিনি আত্নগোপনে চলে গেয়েছেন। সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে জানা যায়, অভিভাবকদের ভোট ছাড়াই প্রতি বার পকেট কমিটি করতেন মাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান হাবিব। তাই এইবারেও প্রতিষ্ঠানের প্রধান হাবিবুর রহমান হাবিব গোপনে নিয়মবহির্ভূত ভাবে পকেট কমিটি গঠন করতে মরিয়া হয়ে উঠেন। কিন্তু কেন এই প্রশ্ন স্থানীয় এলাকাবাসীর। তফসিল অনুযায়ী এইবারেও নির্বাচনের তারিখ ছিল ১৯ শে এপ্রিল, কিন্তু প্রতিষ্ঠান প্রধান ওই দিন স্কুল খোলা রাখেন এবং ওই দিন কোনো ধরনের ভোট ছাড়াই অভিভাবক সদস্য করেন। আবার অনুমোদনও করা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের নোটিশ ও নির্বাচন ছাড়াই এই ধরনের পকেট কমিটি করায় হতাশ অধিকাংশ শিক্ষক ও অভিভাবকগন। মাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা এ প্রতিবেদকে অভিযোগ করে বলেন প্রধান শিক্ষক গোপনীয়ভাবে কমিটি গঠন করছে আমরা কিছুই জানিনা। তারা আরও অভিযোগ করে বলেন আমরা পনুরায় নির্বাচনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের স্বচ্ছ কমিটি চায়। সূত্রে জানায় উক্ত বিদ্যালয়ের সামনে কিছু শূন্য পদে লোক নিয়োগ হবে। এই নিয়োগ বাণিজ্য করার জন্যই হাবিবুর রহমান হাবিব নিজের ইচ্ছামত গোপনে নিয়মবহির্ভূতভাবে পকেট কমিটি গঠন করে।
সূত্রে আরও জানায় অফিস সহায়ক পদে নিয়োগের জন্য আমিনুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি (৫০০০০০) পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। তাছাড়া উক্ত প্রতিষ্ঠানে আবু সাইদ নামে এক ব্যক্তিকে সভাপতি করবে বলে প্রতিষ্ঠান প্রধান হাবিবুর রহমান হাবিব তার কাছ থেকেই ও (২০০০০০) দুই লক্ষ টাকা নিয়েছেন। এইভাবেই সব নিয়মবহির্ভূত কাজ করে গাঁ ঢাকা দিয়েছে প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান হাবিব। এ ব্যাপারে বাগমারা উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এসএম মাহমুদুল হাসান জানান, আমি কিছুই জানিনা। এবং প্রিসাইডিং অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন বাগমারা উপজেলার একাডেমিক সুপারভাইজার জনাব মোঃ আব্দুল মৌমিত। মাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নির্বাচনের বিষয়ে আব্দুল মৌমিতের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের সাথে আপনারা কথা বলেন। তবে এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায় মাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের বিষয় কেউ জানেন না এবং এলাকার কোন লোকজন বলতে পারছেন না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে মোবাইল ফোন যোগাযোগ করা হলে তিনিও সব নিয়ম মেনেই কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান । কেউ যদি অনিয়মের অভিযোগ করে তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের ভালো চাইনা। তিনি আরও বলেন কমিটি গঠনের উক্ত প্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদে একটির বেশি বা একাধিক প্রার্থী না থাকায় নির্বাচন ছাড়াই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাকে সভাপতি পদে একাধিক প্রার্থী ছিল প্রশ্ন করা হলে তিনি কথা এড়িয়ে যান। তাছাড়া তাকে কমিটি গঠন করার পর থেকে এলাকার বাহিরে কেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান আমার ব্যক্তিগত কাজে বাহিরে আছি। সময়মতই আমি প্রতিষ্ঠানে যাবো। মাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল সাত্তারের কাছে উক্ত প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি গঠন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান হাবিব তার ইচ্ছামত শিক্ষক প্রতিনিধি করেছেন, আমি সহ আমার অনেক সহকর্মী এ বিষয়ে কিছু জানিনা। গোবিন্দপাড়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ খোরশেদ আলম জানান, মাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অত্যন্ত খারাপ প্রকৃতির লোক তিনি রাষ্ট্রবিরোধীসহ বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সব সময় বাজে মন্তব্য করেন। তাছাড়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দারা আরও জানান, এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক বিএ পাশসহ সব শ্রেনীতে তৃতীয় শ্রেনী ডিগ্রি অর্জন করেন ২০১৩ সালে নিয়োগ নিয়ে কি করে তৃতীয় শ্রেনী পেয়ে তার বেতন হলো এই প্রশ্ন সকল মানুষের। শুধু প্রতিষ্ঠান প্রধান নন, আরও অনেক শিক্ষক তৃতীয় শ্রেণির নিয়ে ঐ প্রতিষ্ঠানে চাকুরী করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান,প্রতিষ্ঠানের প্রধান হাবিবুর রহমান হাবিব পেশায় একজন পশু চিকিৎসক, তাই তার আচরণ অন্যান্য প্রাণীর মত। জানা গেছে, মাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান হাবিবুর রহমান হাবিব বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য পাঁচ-ছয় জনের কাজ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এবং তা ঠিক করার জন্য নিজ ইচ্ছায় একটি কমিটি গঠন করেছেন। গোপন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি বাড়ি নির্মাণ করেন এবং রাজশাহী শহরে ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে জমি অধিগ্রহণ করেন। তাই প্রশ্ন হল এত টাকা তিনি পেলেন কোথায়? তাই প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান হাবিবের পকেট কমিটি ভেঙে পুনরায় ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ওই প্রতিষ্ঠানের যে সকল শিক্ষক ভুয়া দলিল দাখিল করে কাজ করছেন তাদের তদন্ত সাপেক্ষে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান এলাকার সচেতন মহল।
Leave a Reply