ধনবাড়ীত উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ভবন থাকলেও নেই কোনো কার্যক্রম

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ভবন থাকলেও নেই কোনো কার্যক্রম। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা ২০১২ সালে ভবনটি নির্মাণ করলেও এখন তা জরাজীর্ণ ও অরক্ষিত। ভবনের চারপাশে তৈরি হয়েছে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। শৌচাগার হিসেবে ব্যবহার করছেন পথচারী ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। মাদকসেবীদের আনাগোনা দেখা গেছে এ ভবনটিকে ঘিরে।

এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ক্রীড়াপ্রেমী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি ভবনটি দ্রুত সংস্কার করে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা সচল করে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল করা হোক। যদিও প্রশাসন বলছে, ভবনটি পরিদর্শন করে, এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ধনবাড়ী মানেই জমিদার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরীর প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা। বর্তমানে কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। ক্রীড়া ও সংস্কৃতি চর্চার জন্য রয়েছে নবাবি আমলের দুটি ময়দানসহ বিশাল তিনটি মাঠ। আশপাশের স্কুল-কলেজগুলোতেও রয়েছে বড় মাঠ। উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা উদ্যোগ নিলে এসব মাঠে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে। কিন্তু সংস্থাটির তেমন কোনো ভূমিকা দেখা যায় না।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ভবনটি ধনবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে ঈদগাহ রোডের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত। ভবনটি এখন পরিত্যক্ত। নেই কোনো ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। আশপাশে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ ও জলাবদ্ধতা। ভবনের বিভিন্ন অংশে গজিয়েছে আগাছা। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ঘরের দরজা-জানালা ও ভবনের প্লাস্টার। টার্মিনালে যাতায়াতকারীরা মল-মূত্র ত্যাগ করছে এখানে। কেউ ধূমপান করছে। পাশের ড্রেন ও স্তূপ থেকে জন্ম নিচ্ছে মশা-মাছি।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল বারেক মিয়া ও নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘সংস্থার কোনো কার্যক্রম না থাকায় ভবনটি এখন পরিত্যক্ত। বাসচালক ও যাত্রীরা এখানে এসে প্রস্রাব করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা ময়লা-আবর্জনা ফেলেন। দুর্গন্ধে এর আশপাশে থাকা যায় না।’

ভবনের পাশের ব্যবসায়ী আবু তারেক লাকী বলেন, ‘সুযোগ পেলেই সবাই এখানে প্রস্রাব করে। এখানকার আবর্জনার কারণে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মশা-মাছি বেড়েছে। দুর্গন্ধ টেকা দায়। সচেতনতার জন্য সতর্কতা সাইনবোর্ড টাঙিয়েছিলাম। রাতে কে বা কারা নিয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি না থাকায় এ পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে।’

সংস্থাটির ফুটবল শাখার পরিচালক জহিরুল ইসলাম মিলন বলেন, ‘এ সংস্থার কোনো কার্যক্রম নেই। তাই সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। কিশোর ও যুবকেরা মাদকের দিকে ঝুঁকছেন। এদিকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন কর্তৃপক্ষের।’

এ ব্যাপারে মেয়র মুহাম্মদ মনিরুজামান বকল বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) সভাপতি করে গঠিত হয়েছে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার কমিটি। তবে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে এই কমিটির উল্লেখ্যযোগ্য কোনো ভূমিকা নেই। ভবনটি পরিষ্কার করে কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

এ নিয়ে জানতে চাইলে ইউএনও মো. আসলাম হোসাইন জানান, ভবনটি পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুস্থতার জন্য সবাইকে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ বাড়াতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap