নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নাম বিশা মিয়া। বয়স ৯৫। বয়সের ভারে এখনো স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারেন না টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কচুয়া পশ্চিম পাড়ার এই বাসিন্দা। কিন্তু এই বার্ধ্যকের মাঝেও তিনি স্বেচ্ছাকর্মী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন পুরো এলাকাজুড়ে।
সাক্ষাৎকারে জানা যায়, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকেই স্বেচ্ছাশ্রমে লাশ ধোয়ানোর পাশাপাশি দাফন কাফনের ব্যবস্থা করেন তিনি। এলাকার কেও মারা গেলে তাকে আর আলাদাভাবে বলতে হয় না। খবর পেলেই সময়মতো মৃত লাশের গোসল ধোয়ানো থেকে শুরু করে দাফন পর্যন্ত সার্বিক কার্যক্রম করে দেন তিনি।
বিশা মিয়া জানান, আমার বয়স অইছে। এখন আর এতকিছু মনে থাকে না। তবে এ পর্যন্ত আনুমানিক প্রায় দেড় হাজার মৃত মানুষের গোসল থেকে শুরু করে দাফন কাফনের ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছেন তিনি।
রোদ,ঝড়,বৃষ্টি যাই থাকুন এলাকার বা পাশের কেও মারা গেলে খবর পাওয়ামাত্রই সেখানে গিয়ে হাজির হন তিনি।
কিন্তু এমনো সময় ছিল তিনি নিজের গ্রাম থেকে মাইলের পর মেইল পায়ে হেঁটে দূর দূরান্তে মৃত মানুষের গোসলের পাশাপাশি দাফনকার্য সম্পন্ন করতেন। অবশ্য এখন বয়সের ভারে চলাচল অনেকটা কঠিন। তারপরেও চেষ্টা করেন এলাকায় কেও মারা গেলে তার পাশে দাঁড়াতে।
সাক্ষাৎকারে তিনি জানান করোনাকালীন সময়ে সারাবিশ্ব যখন স্তব্ধ তখনো থেমে ছিলেন না তিনি। ঝুকি থাকা সত্তেও কোন রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই অনেক মৃত মানুষের গোসল করিয়েছেন নিজ হাতে।
এ কাজ কেন করেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান আমার এই কাজে অনেকেই ভয়-ভীতি দেখায়। কিন্তু আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এ কাজ করে থাকি। যতদিন সুস্থ থাকব ততদিন এ কাজ চালিয়ে যাবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য বাদল হোসেন জানান, বিশা মিয়ে উরফে বিল্লাল মিয়া আমার ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি তিনি এ মানবিক কাজের সাথে যুক্ত। তার স্বেচ্ছাশ্রমকে সম্মান জানিয়ে আমাদের উচিত তার কাজে সহায়তা করা।
Leave a Reply