সখীপুরের বাজার কাঠাঁলে সয়লাব

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জাতীয় ফল কাঁঠালে সয়লাব টাঙ্গাইলের সখীপুরের তক্তারচালা বাজার। বর্তমানে কাঁঠালের প্রচুর চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় খুশি ক্রেতা বিক্রেতারা। টাঙ্গাইল জেলার পাহাড়ি অঞ্চল সখীপুরে প্রচুর পরিমাণে কাঁঠালের উৎপাদন হয়ে থাকে। এ এলাকার কাঁঠাল জেলার চাহিদা পূরণ করেও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়।

সুস্বাদু এ ফলের বাণিজ্যে এ জনপদ সরগরম থাকবে আগামী ৩ মাস। কাঁঠালের মৌসুমে বদলে যায় গোটা উপজেলার চিত্র। বদলে যায় মানুষের জীবনমানও। তাই এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এখানকার ব্যবসায়ী-শ্রমিকরা। দম ফেলার ফুসরত নেই তাদের। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার কাঁঠালের ভালো ফলন হয়েছে। ফলে, এ মৌসুমে লাখ লাখ টাকার কাঁঠালের ব্যবসা হবে বলে আশা করছেন কাঁঠাল-চাষি ও ব্যবসায়ীরা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের গৃহস্থরা কাধে, ভ্যান, ঠেলাগাড়ি, অটো করে কাঁঠাল নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। এ হাটে প্রতিদিন হাতবদল হয় লাখ লাখ টাকার কাঁঠাল। ভরা মৌসুমে এ অঞ্চলের বাতাসে বিরাজ করছে কাঁঠালের সুঘ্রাণ।

মৌসুমের শুরুতে কাঁঠালের প্রচুর চাহিদা থাকায় রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে মৌসুমি কাঁঠাল ব্যবসায়ীরা সখীপুর উপজেলা তক্তারচালা বাজারে আসেন পাইকারি দরে কাঁঠাল কিনতে। এখানে প্রতি শনিবার ভোর থেকে রাত পর্যন্ত ক্রেতা বিক্রেতায় সরগরম থাকে।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদামত কাঁঠাল কিনে ট্রাক ভর্তি কওে দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যায় বিক্রি করতে। আর স্থানীয়রাও তাদের উৎপাদিত কাঁঠাল বিক্রি করতে সকাল থেকেই ছুটে আসে। এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় উপজেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে কাঁঠাল রয়েছে। প্রতিটি বড় সাইজের একটা কাঁঠাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে পাইকারি ব্যবসায়ীরা কিনে নিচ্ছে। আর মাঝারি সাইজের কাঁঠাল ৫০ থেকে ৬০ টাকা এবং ছোট কাঁঠাল বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা দরে। বর্তমানে কাঁঠালের চাহিদা ও দাম ভালো পাওয়ায় খুশি স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।

ঢাকা থেকে কাঁঠাল কিনতে আসা ব্যবসায়ী আজমত আলী জানান, সকাল থেকেই বেছে বেছে বড় বড় সাইজের কাঁঠাল কিনছে তিনি। প্রতিটি কাঁঠাল ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে কিনেছেন। এই কাঁঠাল নিয়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করবেন বলে আশা করছেন তিনি।

কাঁঠাল ব্যবসায়ী মোঃ করিম জানান, সখীপুরের কাঁঠালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিন ট্রাকে ট্রাকে কাঁঠাল ঢাকা, কুমিল্লা, নোয়াখালী, সিলেট, লক্ষ্মীপুর, সুনামগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়।

উপজেলার তক্তারচালা গ্রামের সাইদুর রহমান জানান, অধিকাংশ কাঁঠাল গাছ বাগান ভিত্তিক না হলেও বাড়ির আঙিনায়, রাস্তার দুদধারে, স্কুল, কলেজ চত্বরে প্রচুর কাঁঠাল গাছের দেখা মেলে। আর এসব গাছে ঝুলে থাকা কাঁঠলের দৃশ্য অনেকের নজর কাড়ে। অন্যান্য ফল ও গাছ নিয়ে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যতো তৎপরতা লক্ষ করা যায় কাঁঠাল নিয়ে তার সিকি ভাগও হয় না। কৃষকদের জাতীয় ফল কাঁঠালের চারা রোপণ, পরিচর্যা ও উপকারিতা সম্পর্কে কর্মশালার ব্যবস্থা করা হলে এ ফল উৎপাদনে নতুন নতুন উদ্যোগতা তৈরি হবে ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিয়ন্তা বর্মন বলেন, সখীপুরে প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে কাঁঠাল উৎপাদন হয়। এছাড়াও এ এলাকায় প্রায় সব বাড়িতেই কম বেশি কাঁঠাল গাছ রয়েছে। এ অঞ্চলের চাহিদা পূরণ করে প্রতি বছরই ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় এখানকার কাঁঠাল বিক্রি হয়। এতে একদিকে যেমন পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়, অন্যদিকে কাঁঠাল গাছের কাঠ অনেক দামে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে কৃষক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap