টাঙ্গাইল কারাগারে অবহেলায় নারী কয়েদির মৃত্যু, জেল সুপারের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইল কারাগারে এক নারী কয়েদির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী টাঙ্গাইল কারাগারের জেল সুপারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩১ মে) বিকেলে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহতের মেয়ে সোনালী।

তিনি বলেন, আমার মা নাদীয়া জাহান শেলী একজন ডায়াবেটিকস ও কিডনি রোগে আক্রান্ত। সম্প্রতি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি।

টাঙ্গাইলের সখীপুর আমলী আদালতে সিআর ৩১২/২০২১ মামলায় তিনি ২নং আসামি। তাকে হয়রানি করার জন্য এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। আদালতের সমন পেয়ে চলতি বছরের (৪ এপ্রিল) আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। এ সময় তিনি তার গুরুতর শারীরিক অসুস্থতার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সব রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেন। আদালতের বিচারক উভয়পক্ষের শুনানি শেষে নাদীয়া জাহান শেলীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এই জামিন না মঞ্জুরের আদেশে বিচারক উল্লেখ করেন ‘আসামি পক্ষের দাখিলী কাগজপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, আসামি অসুস্থ। আসামির বয়স ৪০ বছর। এ অবস্থায় আসামির চিকিৎসার সুব্যবস্থা করার জন্য জেল সুপার, জেলা কারাগার নির্দেশনা প্রদান করা হলো।’ কিন্তু জেল সুপার আদালতের এই নির্দেশনা পালন করেননি।

আদালতের নির্দেশ অমান্য করে টাঙ্গাইল জেলা কারাগারের জেল সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ডেপুটি জেলারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের যোগসাজশে আমার মাকে চিকিৎসার সুব্যবস্থা না করে সাধারণ কয়েদী হিসেবে জেনারেল ওয়ার্ডে ফেলে রাখেন। এ অবস্থায় চিকিৎসার অভাবে গত (৮ এপ্রিল) কারাগারে মৃত্যু হয় তার।

নিহতের মেয়ে আরও বলেন, টাঙ্গাইল কারাগারের জেলা সুপারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় (১৯ এপ্রিল) জেলা সুপার ও ডেপুটি জেল সুপারসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করে টাঙ্গাইল আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। পরে আদালতের বিচারক পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তারের দাবি করছি।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইল কারাগারের জেল সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ওই নারীকে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আমিসহ আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ওই নারী মধ্য রাতে অচেতন হলে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্বামী মিনহাজ উদ্দীন, ছেলে হাসান ও হোসাইন, বোন মুক্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap