টাঙ্গাইলে তালের শাঁসে স্বস্তি, বেড়েছে চাহিদা

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কবিতার ভাষায় ‘ঐ দেখা যায় তাল গাছ, ঐ আমাদের গাঁ, ঐ খানেতে বাস করে কানা বগির ছা। গাঁয়ে এখন বকের ছানা থাক বা না থাক, তালগাছগুলোতে কিন্তু কচি তালে ভরে গেছে।

গ্রামগঞ্জ হয়ে তাল এখন শহরের বিভিন্ন আনাচে-কানাচে ও অলিগলিতে মেলে। তাল শাঁস খাওয়ার এখনই উপযুক্ত সময়। মধুমাসে মৌসুমী অনেক ফল যখন ফরমালিনে বিষে নীল হলেও কিন্তু তালের শাঁসে ফরমালিনের ছোঁয়া লাগেনি এখনো।তীব্র গরমে তালের কাঁচা শাঁস প্রতিদিনই চাহিদা বেড়েছে। যা প্রতি পিচ শাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫-৭ টাকায়। আর আস্ত ১টি তাল বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা।

প্রচন্ড গরমে স্বস্তি পেতে কাঁচা তালের কোনো জুড়ি নেই। তালের শাঁস খাওয়ার জন্য ছোট থেকে বৃদ্ধ বয়সীরাও তালের দোকানে ভিড় জমাচ্ছে। কেউ কেউ বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের জন্য। রবিবার (০৫ মে) বিকালে সরেজমিনে টাঙ্গাইল পৌর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড, কুমুদিনী কলেজ মোড়, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, নিরালা মোড়, পৌর উদ্যান, জেলা কোর্ট চত্বর, পার্ক বাজার, বেবী স্ট্যান্ড, ছয়আনী পুকুর পাড় ও ভিক্টোরিয়া রোডসহ শহরের প্রতিটি অলিগলিতে কাঁচা তালের শাঁস বিক্রি করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

এছাড়া হাট-বাজার, স্কুল-কলেজেরর সামনে ও সড়কের বিভিন্ন জায়গায় এ তালের শাঁস বিক্রির চিত্র দেখা যায়।টাঙ্গাইল নতুন বাসস্ট্যান্ডে কাঁচা তাল বিক্রেতা মো. জয়নাল হোসেন, কাইয়ুম আলী, হাসান ও মাহমুদ বলেন, তালের শাঁস বিক্রি করার এখন ভরা মৌসুম চলছে। এসময় তালের শাঁস বেশী ভাগই স্কুল পুড়য়া ও কলেজ শিক্ষার্থীরা পছন্দ করেন। গরমে এর চাহিদা বেড়েছে ব্যাপক।

’শিক্ষার্থী সুমাইয়া, বিথি থাতুন, রবিন মিয়া ও মাহমুদুল ইসলাম ও জুয়েল রানাসহ অনেকেই বলেন- ‘বর্তমান সময়টা মধুমাস। বিভিন্ন ফলে ভরপুর। তরমুজ, আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম ও জামরু ইত্যাদি ফলের চাহিদা থাকলেও বিশেষ নজর তালের শাঁসে। গরমে তালের শাঁস খেতে যেমন স্বসাদু তেমনি তৃষ্ণাও মেটে।’তালের শাঁস ক্রেতা শিক্ষক আব্দুল লতিফ তালুকদার বলেন- ‘কাঁচা তালের শাঁস গরমে অনেক স্বস্তিদায়ক।

কয়েকটা তালের শাঁস খেলে গরমের তীব্রতাও কমে যায়। তাই প্রতিদিন কমবেশী তালের শাঁস খাওয়া হয়। এছাড়া তীব্র গরমে মানুষের কাছে কাঁচা তালের শাঁস ব্যাপক চাহিদা থাকায় ব্যবসায়ীদের বিক্রির পরিমাণও বাড়ছে।’হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ডা. সৈয়দ সরোয়ার সাদী রাজু বলেন, ‘তালের শাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী একটি ফল। গরমের দিনে তালের শাঁসে থাকা জলীয় অংশ মানবদেহের পানি শূন্যতা দূর করে। এছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি.এ.বি কমপ্লেক্সসহ নানা ধরণের উপাদান রয়েছে। তালে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

কচি তালের শাঁস রক্তশূন্যতা দূর করে। লিভার ভাল রাখে। এছাড়াও প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। টাঙ্গাইলে তালের শাঁসে স্বস্তি, বেড়েছে চাহিদা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap