নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দুই বিভাগের ঠেলাঠেলিতে একটি সড়কে দুই মাস ও আরেকটি সড়কে এক মাস ধরে বড় গর্তের সৃষ্টি হলেও কেউ মেরামতের জন্য এগিয়ে আসছে না।
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ পাকা সড়কের মাঝখানে দুটি বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
দুটি সড়কের একটি পৌরসভার সীমানায় থাকলেও পৌরসভা বলছে, এ সড়ক তাদের নয়, এটা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি)। আবার আরেকটি সড়ক এলজিইডির হলেও তারা বলছে, চলতি মাসের ২৭ তারিখের পর এ সড়কটি সওজের (সড়ক ও জনপদ) অধীন চলে যাচ্ছে।
দুই বিভাগের ঠেলাঠেলিতে একটি সড়কে দুই মাস ও আরেকটি সড়কে এক মাস ধরে বড় গর্তের সৃষ্টি হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কেউ এগিয়ে আসছে না।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সখীপুর পৌর শহরের মোখতার ফোয়ারা থেকে মহিলা কলেজ সড়কের বাগানচালা এলাকায় সড়কের মাঝখানে একটি বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ওই গর্তটি দেখতে একটি কূপের মতো। এ গর্তের দৈর্ঘ্য দুই ফুটের বেশি ও গভীরতা প্রায় চার ফুট। এ গর্তটি এক মাস ধরে সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে সখীপুর পৌর শহর থেকে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের সাগরদীঘি আঞ্চলিক মহাসড়কের কচুয়া বাজারের উত্তর পাশে একটি ইউড্রেন রয়েছে। ওই ড্রেনের একপাশে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ওই গর্তের দৈর্ঘ্য দুই ফুটের বেশি হলেও গভীরতা দেড় ফুট। এ গর্তটি গত দুই মাস ধরে সৃষ্টি হয়েছে।
গত বুধবার দুপুরে সখীপুর মহিলা কলেজ সড়কের বাগানচালা এলাকায় দেখা যায়, ওই গর্তের একপাশ দিয়ে ধীরে ধীরে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে। চালকদের সতর্ক করতে স্থানীয় ব্যক্তিরা ওই গর্তে একটি খুঁটি পুঁতে পলিথিন ঝুলিয়ে রেখেছেন। স্থানীয় বাসিন্দা উপজেলার হাতিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রহিজ উদ্দিন বলেন, অপরিচিত কেউ এ সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেলসহ যেকোনো দ্রুত যান নিয়ে চলাচলের সময় ওই গর্তে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।
সখীপুর পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আজাদ বলেন, ‘এ সড়কটি পৌরসভার সীমানায় হলেও সংস্কারের দায়িত্ব আমাদের নয়, এটা এলজিইডির।
এদিকে সখীপুর-সাগরদীঘি আঞ্চলিক মহাসড়কের কচুয়া বাজারের উত্তর পাশে গিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চার মাস আগে ওই স্থানের একটি ইউড্রেনের একপাশে সামান্য গর্ত হয়। এ সড়ক আঞ্চলিক মহাসড়ক হওয়ায় প্রতিদিন শতাধিক বাস, ট্রাকসহ নানা যানবাহন চলাচল করে। পর্যায়ক্রমে ওই গর্তটি আরও বড় আকার ধারণ করে। দুই মাস ধরে ওই গর্ত বড় আকার ধারণ করে।
সরেজমিন দেখা যায়, ওই সড়কেও একপাশ দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। দুর্ঘটনা এড়াতে স্থানীয় ব্যক্তিরা ওই স্থানে বাঁশের দুটি খণ্ড পুঁতে রেখেছেন। কচুয়া পাবলিক উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাত্র ৫০ গজ উত্তরে ওই গর্ত। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুলা মিয়া বলেন, ওই গর্তে গাড়ির চাকা পড়ে গিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ট্রাকচালক আলহাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের সড়ক পরিচিত বলে হয়তো আমরা সতর্ক থাকি। কিন্তু যাঁরা এ সড়কে নতুন চালক, তাঁদের গাড়ি যেকোনো সময় ওই গর্তে পড়ে দুর্ঘটনায় শিকার হতে পারে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার সিংহ ‘সখীপুর-সাগরদীঘি সড়কটি আগে এলজিইডির অধীন ছিল। চলতি মাসের ২৭ তারিখ থেকে এ সড়কটি সওজের অধীন চলে যাচ্ছে। আমাদের দপ্তর থেকে ওই গর্ত সংস্কার করার সুযোগ নেই।
অন্যদিকে মহিলা কলেজ সড়কের ওই গর্তটি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা জরুরি ভিত্তিতে কাজটি করার লক্ষ্যে ইস্টিমেট করে টাঙ্গাইল নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে পাঠিয়েছি। এরপর ফাইলটি ঢাকা থেকে পাস হয়ে এলে সংস্কার কাজ করা হবে।’
Leave a Reply