নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত গোড়াই-সখীপুর আঞ্চলিক সড়কের সখীপুর ও মির্জাপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে বসছে হাটবাজার। এতে একদিকে নোংরা হচ্ছে পরিবেশ এবং অপরদিকে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় বছরের পর বছর এভাবেই চলছে সড়কে হাট বাজার। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী জনসাধারণও প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
সরেজমিনে বিভিন্ন হাটে সপ্তাহজুড়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সখীপুরের কুতুবপুর বাজার থেকে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে উঠতে গোড়াই পর্যন্ত ৪৫ কিলোমিটার সড়কে কমপক্ষে ১৫টি স্থানে হাটবাজার বসায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ওই সড়কে চলাচলকারীরা। বাজারের স্থানগুলোতে যানজট লেগেই থাকছে। ঘটছে দুর্ঘটনাও।
সখীপুরের কুতুবপুর, বড়চওনা, কালিয়া, কচুয়া, বোয়ালী, নলুয়া, দেওদিঘি, মির্জাপুর ও সখীপুরের মধ্যবর্তী তক্তারচালা, মির্জাপুরের বাঁশতৈল, কাইতলা, হাঁটুভাঙ্গা, গোড়াই প্রভৃতি স্থানে সড়কের ওপর সপ্তাহজুড়ে হাট বসে। হাটের কারণে এসব স্থানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে থাকে। বিশেষ করে রবিবার ও বুধবার কুতুবপুর ও কচুয়া বাজার। কুতুবপুর বাজারে জেলার সবচেয়ে বড় কলার হাট বসে।
সোম ও বৃহস্পতিবার বড়চওনা বাজার এবং শুধু বৃহস্পতিবার নলুয়ায় বাজার বসে। শনিবার তক্তারচালা বাজারে রেডিমেট ফার্নিচার ও কাইতলা বাজারে জেলার অন্যতম পশুর হাট বসে। এছাড়া সড়কে আম, কাঁঠাল, কলা, ধান, আনারস, বেগুন, মরিচ, হলুদ, করলা, মুলাসহ কাঁচামাল ও শাক-সবজির পসরা সাজিয়ে নিয়মিত চলছে বেচাকেনা।
স্থানীয়রা জানান, সড়কে হাট বসায় রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সকেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকা থাকতে হয়। প্রায় প্রতিটি বাজার ঘেঁষা রয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ফলে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা।
হতেয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘হাটের দিন হলেই প্রায় ১ ঘণ্টা সময় বেশি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হতে হয়। সড়কের ওপর বাজার বসায় এ সমস্যা হচ্ছে। সখীপুর-গোড়াই সড়কটি চলাচলের প্রধান সড়ক হওয়ায় প্রতিনিয়ত ভোগান্তি বাড়ছে। অতিদ্রুত সড়কের ওপর এসব হাটবাজার বন্ধ করা উচিত।’
তক্তারচালা হাটে সবজি বিক্রি করতে আসা মুনছুর, বেল্লাল, খোরশেদসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, জায়গা না থাকায় সড়কে বসেই আমাদের বেচাকেনা করতে হয়। রাস্তার ওপর বসলেও ইজারাদারদের খাজনা দিতে হয়। তবে রাস্তার ওপর না বসে নির্দিষ্ট জায়গায় হাট হলে ভালো হয়।
তক্তারচালা বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ফরহাদ শিকদার বলেন, ‘এক বছরের জন্য ৩৫ লাখ টাকায় হাটবাজার ইজারা দেওয়া হয়েছে। জায়গা না থাকায় রাস্তার ওপর হাট বসে। ইজারাদারসহ কয়েকজন লোক থাকে, যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয়।’ নলুয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি জহির উদ্দিন মিয়া বলেন, ‘হাটের বিষয়টি ইজারাদাররা দেখেন। তারাই খাজনা তোলেন। তবে সড়কের ওপর হাট বসায় যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ছে। এ সমস্যা নিরসনে যে কোনো ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’
সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আলম বলেন, ‘সড়কের ওপর হাট বসার বিষয়টি অবগত আছি। বাজারের ইজারাদার ও বাজার বণিক সমিতির সভাপতিদের ইতিমধ্যে অবগত করেছি। দ্রুত রাস্তার ওপর থেকে হাট সরানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘সড়কে হাটবাজার বসার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Leave a Reply