টাঙ্গাইলে নির্মানের আগেই দেবে গেলো সেতু

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই সাড়ে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে লৌহজং নদীর উপর নির্মিত সেতু দেবে গেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) রাতে টাঙ্গাইল-বেড়াডোমা-ওমরপুর সড়কের বেড়াডোমা এলাকার লৌহজং নদীর উপর নির্মিত সেতুটি দেবে যায়। এদিকে সেতু নির্মাণ কাজে গাফিলতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানিয়েছে টাঙ্গাইল  পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী।

 স্থানীয়রা দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন।

পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় টাঙ্গাইল পৌরসভা সেতুটির নির্মাণ বাস্তবায়ন করছে। আট মিটার প্রস্থ ও ৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৬০ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর থেকে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে ব্রিক্সস অ্যান্ড ব্রিজ লিমিটেড ও দি নির্মিতি নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কাজটি শুরু করে। গত ১১ মে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ৫৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। গত সপ্তাহে সেতুটির উপরে অংশে ঢালাই করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে সেতুটির সেন্টারিং সাটারিং সরে গিয়ে মাঝখানে সাড়ে তিন ফুট দেবে যায়।

শুক্রবার (১৮জুন) সকালে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, লৌহজং নদীর মাঝখান থেকে গাছ ও বাঁশের পাইল সরে গিয়েছে। সেতুটি মাঝ খানে দেবে যাওয়ায় স্থানীয় লোকজন ভিড় করেছে। কয়েকজন শ্রমিক সেতু নির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে। দেবে যাওয়া স্থান টাঙ্গাইল পৌরসভা প্রকৌশলী ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছেন।

বেড়াডোমা এলাকার বাসিন্দা হাফিজুর রহমান জানান, ইতোপূর্বে এখানে যে বেইলি সেতু ছিলো সেটিও দুবার ভেঙে আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে কয়েক বছর। এ সেতু নির্মাণের কারণেও দুর্ভোগ অব্যাহত আছে।

স্থানীয় বাসিন্দা খোরশেদ হোসেন বলেন, প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণে সেতুটি দেবে গেছো। এতে আমাদের আরও কয়েক বছর দুর্ভোগ পোহাতে হবে।

পথচারী আজাদ মিয়া জানান, পার্ক বাজার থেকে বাজার করে নিজেই বহন করে আনতে হয়। কোন রিকশা আসে না। দুই বছরের অধিক সময় ধরে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সোলায়মান হাসান জানান, এই সেতুটির নির্মাণ কাজ অন্যজন পেয়েছিলেন। স্থানীয় এমপি তার কাছ থেকে প্রভাব খাটিয়ে কাজটি হাতিয়ে নেয়। পরে তার কর্মী আমিরুলসহ তার অনুসারীদের কাজটি দিয়েছে।

৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল কালাম আজাদ জানান, দুর্ভোগ লাঘবে কাজটি শেষ করার জন্য বার বার তাগিদ দেয়া হয়েছে। কিন্তু পৌরসভার প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কোন কথাই শুনেন না। সেতুটি দেবে যাওয়ায় লাখ লাখ মানুষের কয়েক বছরের জন্য দুর্ভোগ বেড়ে গেলো।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের আমিরুল ইসলাম জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার। তবে স্থানীয় জামিল সহ কয়েকজন মিলে সেতু নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে। তিনি এই কাজের সাথে যুক্ত নয়।

টাঙ্গাইল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবগত করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করে মূল রহস্য উদঘাটন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap