টাঙ্গাইলে পানিবন্দি হয়ে মানুষের মানবেতর জীবনযাপন

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলে যমুনা, ঝিনাই, ধলেশ্বরীসহ সবক’টি নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। ইতিমধ্যে জেলার গোপালপুর, ভূঞাপুর, কালিহাতী, সদর, নাগরপুর ও বাসাইল উপজেলার শতাধিক গ্রামের লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

সড়ক ও বাঁধ ভেঙে প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। গবাদিপশু নিয়ে দুর্বিষহ দিন কাটছে বানভাসিদের। বন্ধ রয়েছে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান। ভেসে যাচ্ছে পুকুরের মাছ। তলিয়ে যাচ্ছে একরের পর একর জমির পাট, আউস ধানসহ বিভিন্ন ফসল।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভূঞাপুর উপজেলার গাবাসারা, অর্জুনা ও গোবিন্দাসী ইউনিয়ন।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, যমুনা নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার, ঝিনাই নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার এবং ধলেশ্বরী নদীর পানি ১৬ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য সকল নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

সরজমিনে জেলার ভুঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, রোববার রাতে হঠাৎ করেই যমুনা নদীর পানি পাড় উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে।

প্রতিটি বাড়িতেই হাঁটু পানি। তলিয়ে গেছে যাতায়াতের রাস্তাও। ঘরবাড়ি ও আশপাশে পানি প্রবেশ করায় গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে রয়েছে লোকজন। দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের অভাব। ভালকুটিয়া ও চিতুলিয়া পাড়া এলাকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন।

এদিকে সোমবার (২০ জুন) বিকেলে যমুনার পানির স্রোতে ভুঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী-ভালকুটিয়া সড়ক ভেঙে গেছে। এতে করে ৬ গ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেছে। তলিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পানিবন্দি হয়ে পড়ছে লোকজন।

এ বিষয়ে ভুঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. ইশরাত জাহান বলেন, উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

জেলা প্রশাসক ড. মো. আতাউল গনি বলেন, জেলায় কয়েকটি উপজেলাতে বন্যার পানি বাড়ছে। বন্যার্তদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ মজুদ রয়েছে। এছাড়া মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও ভাঙনরোধ ও বন্যা মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ প্রশাসনকে বলা হয়েছে যাতে করে বন্যা কবলিত এলাকায় গবাদি পশু চুরি বা ডাকাতি না হয় সেটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ বিভাগের আরো সংবাদ
Share via
Copy link
Powered by Social Snap