নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ৪র্থ ধাপে গত ২৬ ডিসেম্বর টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের দিন ছিনতাই হওয়া সিল মারা বস্তাবন্দি ব্যালট পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে ভূঞাপুর থানা পুলিশ।
গত শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের পুংলীপাড়া এলাকার একটি ভুট্টা ক্ষেত থেকে নির্বাচনের ৪১ দিন পর ব্যালট পেপারগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধার ঘটনার বিষয়টি বিকালে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন। পরে সন্ধ্যায় প্রেস বিফ্রিং করেন।
তিনি বলেন- উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নের চর চন্দনি দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে নির্বাচনি ফলাফল ঘোষণার পর নির্বাচনে দায়িত্বে থাকা লোকজন ফেরার পথে পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর লোকজন আক্রমণ করে এবং তাদের পক্ষে ফলাফল ঘোষণা দিতে বলে।
ওই সময় ঘোষণা না দেওয়ায় ব্যালট পেপার ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পরে প্রিজাইডিং অফিসার মিজানুর রহমান বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রেক্ষিতে ৪১ দিনপর গত শনিবার দুপুরে পুংলিপাড়া ভুট্টা ক্ষেত থেকে ব্যালটগুলো উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, ব্যালেটের বস্তা উদ্ধার করে বিকালে নিয়ে আসা হয় থানায়। সেখানে সাড়ে ৫টা থেকে চলে গণানা। গণনা শেষে বস্তায় কতটি ব্যালট পেপার মিলেছে এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন ওসি মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব।
এছাড়াও ব্যালট পেপারের সঠিক সংখ্যা ও ভিডিও ফুটেজের জন্য সংবাদকর্মীরা থানায় অপেক্ষা করলেও শেষ পর্যন্ত তিনি তা দিতে রাজি হননি। পরে সংবাদকর্মী থানা ত্যাগ করে শুধু তার বক্তব্য নিয়েই চলে আসেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাজমা সুলতানা বলেন, ব্যালট ছিনতাই হওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা নির্বাচনের ৪১ দিন পর সিলযুক্ত ব্যালট পেপারগুলো উদ্ধার করেছে।
তবে যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে সুতরাং আলামত হিসেবে তদন্তকারী কর্মকর্তা সেগুলো আদালতে জমা দিবেন।
প্রসঙ্গ প্রকাশ, গত ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ দিন উপজেলার ২নং গাবসারা ইউনিয়নের চর চন্দুনী দাখিল মাদরাসা কেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা লোকজন ও আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সংশ্লিষ্টরা ফিরছিল।
পথিমধ্যে চরাঞ্চলের নিকলাপাড়া এলাকায় আসলে অতর্কিত ভাবে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে দূর্বৃত্তদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে গুলি চালায়।
এ ছাড়াও ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ পুলিশ সদস্যরাও আহত হয়। পরে এঘটনায় প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ৮০০-৯০০ ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
চরচন্দনী দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে মোট ভোটার ছিলো ২ হাজার ৩৭৫ জন। মোট ভোট কাস্ট হয় ২ হাজার ২৯ টি। এর মধ্যে বাতিল হয় ২০ টি ভোট। অনুপস্থিত থাকে ৩৪৬ জন ভোটার। ছিনতাই হওয়া বস্তাতেই ছিলো সমস্ত ব্যালট পেপার।
ওই কেন্দ্রে আনারস প্রতীকে শাহ আলম শাপলা পান ১ হাজার ৩৩৬ ভোট, নৌকা প্রতীকে মনিরুজ্জামান মনির পান ৪৬৬ ভোট এবং আনোয়ার হোসেন তালুকদার জিন্নাহ পান ২০৭ ভোট।
Leave a Reply