নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ উল আজহা। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তাই চাকু, বটি, ছুরিসহ মাংস কাটাকাটিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণ তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে টাঙ্গাইলের কামারপল্লীর বাসিন্দারা। শুরু হয়েছে টুংটাং শব্দ। তবে কয়লা, লোহা ও শ্রমিকদের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ছাপ পড়েছে এ পেশায় জড়িতদের।
সরেজমিন শহরের পার্ক বাজার, বেবিস্ট্যান্ড, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড গোডাউন ব্রিজ, কুমুদিনী কলেজ গেটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঈদকে কেন্দ্র করে গমগমে আগুনে লোহা লাল করায় ব্যস্ত বেশির ভাগ কামার। কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছেন তারা। দম ফেলারও সময় নেই তাদের। সবাই কোরবানির পশু জবাই করার দা, বটি, ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কামাররা আরো জানান, ‘স্বাভাবিক সময়ে যেসব দোকানে দুই জন শ্রমিক কাজ করতো, এখন সেসব দোকানে ৫-৬ জন শ্রমিক কাজ করছেন।
শহরের কাগমারা এলাকার আবু সাইদ বলেন, ‘স্বাভাকি সময়ে যে চাপাতির দাম ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, ঈদ উপলক্ষে সেই চাপাতি কিনেছি ৮৫০ টাকা দিয়ে। এছাড়াও পুরাতন দা ও ছুরি শাণ করানোর মজুরি আগের চেয়ে বেশি নিয়েছে কামাররা।’
দিঘুলীয়া এলাকার আলীম উদ্দিন বলেন, ‘একটি গরু জবাই করার ছুরি ৮০০ টাকা দিয়ে কিনেছি। দাম বেশির কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতা জানান, লোহার দাম বেশি হওয়ায় উপকরণের দামও বেড়েছে।’
বিশ্বাস বেতকা এলাকার নাজমুল হোসেন বলেন, ‘কয়েক বছর আগেও যে ছুরি ৫০ থেকে ৮০ টাকা দিয়ে কিনেছি। এ বছর সেই ছুরি ১৫০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে।‘
পার্ক বাজার এলাকার কামার কোমল চন্দ্র কর বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বর্তমানে আমাদের কাজের চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। এছাড়াও উপকরণের দামও বেড়েছে। উপকরণের দাম ও আমাদের মজুরি বাড়ার কারণ হচ্ছে আগে এক বস্তা কয়লার দাম ছিলো সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা। সেই কয়লার দাম বর্তমানে ১ হাজার ২০০ টাকা। এছাড়াও আগে এক কেজি লোহার দাম ছিলো ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বর্তমানে সেই লোহার দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা।’
অপর কামার প্রভাত ধর বলেন, ‘ঈদের সময় এগিয়ে আসায় আমাদের কাজও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঈদের আগে দিন রাত দিন ২৪ ঘণ্টা আমাদের কাজ করতে হবে।’
কামারের তৈরি করা পণ্য বিক্রেতা সত্যরঞ্জন বলেন, ‘কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকরণের দাম বেড়েছে। এটি অনেক ক্রেতাই বোঝেন না। অনেক ক্রেতাই না বুঝে কথা কাটাকাটি করে।’
Leave a Reply